
ঈদ ছুটির প্রথম দিনে সায়েদাবাদ টার্মিনালে পৌঁছাতেই ভোগান্তি ছিল ঘরমুখী মানুষের। তীব্র গরম ও যানজটে নাকাল যাত্রীরা। সেই সাথে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে অনেক বাস।
ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক। তবে সড়কে ভোগান্তি থাকলেও স্বস্তি মিলছে ট্রেনে। ছিল না কোনো শিডিউল বিপর্যয়, বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠতে পারেননি কেউ। এতে ভোগান্তি অনেক কমেছে বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা।
বুধবার বিকালে কমলাপুরে রেলওয়ের মহাপরিচালক জানান, ঈদ উল আজহার আগেই ট্রেনে দেড় গুণ বেশি যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে।
কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে মঙ্গলবার থেকেই ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। বুধবার ছুটির প্রথম দিনে সকাল থেকেই বিভিন্ন বাস টার্মিনালে ছিল ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ। তবে রাজধানীর মালিবাগ থেকে সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত তীব্র যানজটে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লেগেছে। এতে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পরেন নারী ও শিশুরা। বাস ধরতে অনেকেই তীব্র গরম উপেক্ষা করে হেঁটেই পৌঁছেছেন টার্মিনালে।
পবিত্র শবে কদরের ছুটির সাথে পরদিন বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় বুধবার অনেকেই ছেড়ে গেছেন রাজধানী। অতিরিক্ত যাত্রীচাপের কারণে অনেক বাসই ছেড়েছে দেরিতে।
বুধবার দুপুরে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এ সময় তিনি বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের সব ইউনিট একসাথে কাজ করছে।
মহাখালী বাস টার্মিনালে বুধবার তেমন যাত্রী ছিল না। তবে আজ বৃহস্পতিবার দিনে যাত্রীদের চাপ বাড়বে, বলছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
ঈদে বাড়ি ফেরায় সড়কে ভোগান্তি থাকলেও স্বস্তি মিলছে ট্রেনে। ছিল না কোনও শিডিউল বিপর্যয়, বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠতে পারেননি কেউ। এতে ভোগান্তি অনেক কমেছে বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা।
বদলে গেছে কমলাপুর রেলস্টেশনের চিরাচরিত চিত্র। নেই দীর্ঘ লাইন, নেই টিকিটের জন্য কোনও আহাজারি। টিকিট ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে চার চেকপোস্ট দিয়ে প্ল্যাটফর্মে ঢুকেছেন যাত্রী।
অনলাইনে টিকিট কাটা থেকে শুরু করে যাত্রাপথ প্রায় সব ধাপ নিয়েই খুশি বাড়ি ফেরারা। অন্যবারের চেয়ে এবারে ঈদে রেলের সেবার মান বেড়েছে বলেও মনে করেন অনেকে।
বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, যাত্রীদের সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছে দিতে চলছে ৫৫ জোড়া ট্রেন।
কমলাপুরে ঈদযাত্রা পরিদর্শনে যান রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান। এসময় তিনি জানান, ৭৫ হাজার যাত্রী প্রতিদিন ট্রেনে বাড়ি যাচ্ছে। ঈদুল আজহার আগে আরও বেশ কয়েকটি নতুন ট্রেন চালু হবে। ট্রেনে ঘরমুখো মানুষের চাপ আরও বাড়তে পারে ধরে নিয়েই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষের ভিড় বেড়েছে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। বুধবার দিনে চাপ কম থাকলেও সন্ধ্যার পর ঢল নামে যাত্রীর। পদ্মা সেতু চালুর পর, সড়কপথে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের যাতায়াত বাড়লেও আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য লঞ্চকে পছন্দে রেখেছেন অনেকে।
বেসরকারি চাকরিজীবী বাহার। পরিবার নিয়ে ঈদ করতে যাবেন নিজ জেলা ভোলায়। সদরঘাটে পৌঁছানোর ২ ঘণ্টা পর লঞ্চ ছাড়বে, তারপরও অস্বস্তি নেই তার। পরিবার নিয়ে আরামে গন্তব্যে পৌঁছানোই অগ্রাধিকার তার।
সদরঘাটে আসা অন্য যাত্রীদেরও আরামে বাড়ি পৌঁছানোর লক্ষ্যে লঞ্চে যাচ্ছেন।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪১ রুটে ৫৫টিরও বেশি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। প্রতিদিন ১১০টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে তাদের।
বুধবার দুপুরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শনে আসেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা। এ সময় তিনি বলেন, ঈদে মানুষের চাপ সামলাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
লঞ্চ মালিক ও কর্মচারীদের প্রত্যাশা বৃহস্পতিবার যাত্রী চাপ আরও বাড়বে।
জাগরণ/যোগাযোগ/ঈদযাত্রা/কেএপি/এমএ