সড়কে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেতে ২৬টি পয়েন্টে কাজ করছে মোবাইল টিম।
যানজট নিরসন ও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতেই এ উদ্যোগ বলে জানিয়েছে সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। পদ্ম সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলে যেতে সদরঘাটে নেই বাড়তি ভিড়।
মঙ্গলবার অফিস শেষে রাত থেকেই যাত্রীর চাপ বাড়ে সড়ক-মহাসড়ক, রেল ও নৌ-পথে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধ ও বৃহস্পতিবার বাড়ি যাচ্ছেন যাত্রীরা, বাড়ছে চাপও। শিল্প-কারখানা বৃহস্পতিবার ছুটি হওয়ায় শুক্রবার চাপ আরও বাড়বে। যানজটের ভোগান্তি খুব একটা না হলেও অনেক জায়গায় বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ যাত্রীদের।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, গতবারের চেয়ে পরিবহন ব্যবস্থা নিরাপদে রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতির নেয়া হয়েছে। এজন্য কুইক রেপপন্স টিম তৈরি করা হয়েছে। ঈদের এসময় জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া সড়কে অন্য কোনও যানবাহন চলবে না।
রেলযাত্রা নিরাপদ করতে এবার শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়। টিকিট ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেয়া হয় না স্টেশনে। শিডিউল বিপর্যয় না হওয়ায় এ যাত্রাকে স্বস্তিদায়ক বলছেন যাত্রীরা।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সড়ক, রেল ও নৌ-পথে যাত্রী কম রয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত গরমকে দায়ী করছেন কেউ কেউ।
রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে বৃহস্পতিবার সকালে যানজট থাকলেও দুপুরের পর থেকে স্বাচ্ছন্দ্যেই ঢাকা ছাড়ছে ঘরমুখী মানুষ। তবে ভোর থেকে যানজট দেখা দিয়েছিল প্রধান সড়কগুলোতে। তখন প্রায় অবরুদ্ধ ছিল টার্মিনাল এলাকা। কিছু পরিবহনের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগও করছেন যাত্রীরা।
ঈদে বাড়ি ফিরতে সকালে বাসা থেকে বেরিয়েও যানজটের কারণে ঠিক সময়ে স্টেশন-টার্মিনালে পৌঁছতে বিপাকে পড়েন রাজধানীবাসী। সঙ্গে ছিল প্রচণ্ড গরমের ভোগান্তি। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই গুলিস্তান-সায়েদাবাদ-যাত্রীবাড়ী, কমলাপুর, গুলিস্তান, মতিঝিল এলাকায় ছিল প্রায় স্থবির।
মতিঝিল জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট সুমন সরকার বলেন, সরু সড়ক, যানবাহনের চাপ আর রাস্তার পাশের কাউন্টারের জন্য প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সায়েদাবাদ। হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে। কিছু পরিবহনের বিরুদ্ধে উঠেছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ। যাত্রীরা বলছেন, অন্য সময়ের চেয়ে ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি ভাড়া নেওয়া হয়েছে।
মার্সা ট্রান্সপোর্টের কাউন্টার ইনচার্জ আনসার উদ্দিন বলেন, এবার আগে থেকে বাড়ি ফেরা শুরু হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত বাস থাকায় চাপ তুলনামূলক কম।
ট্রেনে বাড়ি ফেরায় অনলাইনে টিকিটে স্বস্তি থাকলেও স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য পোহাতে হয়েছে ভোগান্তি। টিকিট ছাড়া ১০ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেরিতে ছেড়ে গেছে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস।
বৃহস্পতিবার সাহরির পর থেকেই কমলাপুরে টিকিট কাউন্টারের দীর্ঘ লাইন। অনলাইনে টিকিট কাটতে না পারা ব্যক্তিরা এসেছে স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য। তবে দীর্ঘ অপেক্ষা পরও ও মিলছে না টিকিট। দুই ঘণ্টা আগে লাইনে দাঁড়িয়েও মিলেছে শুধু হতাশা। খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে অনেকে। এতে ক্ষোভও জানিয়েছেন অনলাইনে শতভাগ টিকিট বিক্রি নিয়ে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মোট আসনের বিপরীতে স্ট্যান্ডিং টিকিট রাখা হয়েছে ২৫ শতাংশ। তাই সবার তা পাওয়ার সুযোগ নেই।
তবে অনলাইনে টিকিট কেটে যারা গন্তব্যে রওয়ানা হয়েছে, তাদের কণ্ঠে ছিল স্বস্তি।
দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের ৪১টি রুটে প্রতিদিন কমপক্ষে ১১৫টি লঞ্চ চলাচল করছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এসময় নৌযানের ছাদে যেন অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে না পারে সেজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
জাগরণ/যোগাযোগ/এসএসকে