• ঢাকা
  • রবিবার, ১২ মে, ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩, ১০:০৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৭, ২০২৩, ১০:০৭ এএম

বন্যার শঙ্কা সুনামগঞ্জে

বন্যার শঙ্কা সুনামগঞ্জে
ছবি ● সংগৃহীত

ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অতিবৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (১৬ জুন) বৃষ্টি হয়েছে সুনামগঞ্জে। সীমান্ত নদী জাদুকাটা ও ধোপাজান চলতি নদী দিয়ে উজানের মেঘালয় থেকে পাহাড়ি ঢল আসছে। বাড়ছে সুরমা নদীর পানি। গত বছরের এই সময়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পরে জেলাবাসী। ফলে এবারও বন্যার শঙ্কা করা হচ্ছে।

অন্যান্য সময় বছরের মে মাস থেকেই হাওরাঞ্চল পানিতে টইটুম্বুর থাকে। কিন্তু এবছর ব্যাতিক্রম। জুন মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত হাওর, নদী-খাল ও জলাশয় তীব্র তাপদাহে শুকিয়ে যেতে বসেছিলো। পাহাড়ি ঢলে জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা, সুনামগঞ্জ সদর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার হাওরগুলোতে হঠাৎ করেই পানি প্রবেশ করছে। হঠাৎ এভাবে রাতারাতি পানি চলে আসায় আতঙ্কিত হয়ে পরেছে হাওরের মানুষ। তবে জেলার অন্য ৭ উপজেলার হাওরগুলোতে এখনও পানি তেমনভাবে প্রবেশ করেনি।

গেলো বছরের জুন মাসের ১৫ থেকে ১৭ তারিখের অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলের ফলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পরে সুনামগঞ্জবাসী। চলতি বছরের জুন মাসেই আবারও বন্যার পূর্ভাবাস পেয়ে আতঙ্কিত উব্দেগ উৎকণ্ঠায় আছেন জেলার মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২০২২ সালের ১৬ জুন ৫৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছিলো।

চলতি বছরের ১৫ জুন সকাল ৯ টা থেকে ১৬ জুন শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৪২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সুনামগঞ্জে ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এই সময়ে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫১ সেন্টিমিটার।

সুনামগঞ্জ সীমান্ত জেলা হওয়ায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি বেশি হলে ঢলের পানিতে জেলার সুরমা, জাদুকাটা নদী ভরাট হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে থাকে।

শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিলো। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

গেলো বছর এভাবেই জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাহাড়ি ঢলের ফলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পরে সুনামগঞ্জবাসী। হাওরে পানি আসা একটা স্বাভাবিক বিষয় হলেও এতো পানি মুহুর্তের মধ্যে আসাটাকে অস্বাভাবিকভাবেই দেখছেন হাওরবাসী।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের আকবর হোসেন বলেন, অন্য সময় ধীরে ধীরে হাওরের দিকে পানি আসে। কিন্তু এবছর এক রাতেই হাওর ভরে গেছে। এই পানিটা দেখে আমরা গত বছরের ভয়াবহতার কথা মনে করছি।

কালিপুর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মানিক মিয়া বলেন, যেখানে দুদিন আগেও সুরমা নদীর পানি অনেক নিচে ছিলো সেখানে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় সড়কের কাছাকাছি চলে এসেছে পানি। এই পানি দেখে আমরা বিগত বছরের ভয়াবহ বন্যার কথা স্মরণ করছি। এবং বন্যা থেকে রক্ষার জন্য আমরা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। ফলে এই বৃষ্টির পানি সুনামগঞ্জের দিকেই আসবে। আগামি দু-একদিনের মধ্যে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বড় ধরনের বন্যা পরস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না।

জাগরণ/পরিবেশ/বন্যা/এসএসকে