• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৩, ১১:২৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৩, ২০২৩, ১১:২৯ পিএম

৩২৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল

৩২৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল
ছবি ● সংগৃহীত

মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের তৃতীয় দিনে বিভিন্ন আসনে এ পর্যন্ত ৩২৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এর মধ্যে ঋণখেলাপ ও তথ্যে গরমিলের অভিযোগে কক্সবাজার-১ আসনে নৌকার প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ, মুন্সীগঞ্জে বিকল্পধারার মাহি বি চৌধুরী ও নোয়াখালীতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুল মান্নান এবং সিলেটে গণফোরামের মোকাব্বির খাঁনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া নানা কারণে স্থগিত করা হয়েছে অনেকের প্রার্থিতা।

 

রোববার সকাল থেকেই শুরু হয় তৃতীয় দিনের মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাই। এই দিনেও অনেক প্রার্থীর কাগজপত্র, তথ্যে গরমিল এবং ঋণ খেলাপির দায়ে মনোনয়নপত্র বাতিল ও স্থগিত করা হয়।

ঋণ খেলাপির দায়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হয় কক্সবাজার-১ আসনে নৌকার প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদের। একই অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ-১–এ বিকল্পধারার প্রার্থী মাহি বি চৌধুরী ও নোয়াখালী–৪ এ মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। বাতিল হয়েছে নোয়াখালী–৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরণের মনোনয়নপত্রও।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহীন ইমরান বলেন, ‘যাদের মনোনয়নপত্র পেয়েছি এর মধ্যে ৮ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৫ জনের বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।’

তথ্যে গরমিল থাকায় রাজশাহী-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মাহিয়া মাহীর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এ দিন রাজশাহীতে আরও ১৬ জনের মনোনয়ন বাতিল হয়।

মাহিয়া মাহী বলেন, ‘আমি আপিল করব। আশা করি, আপিল বিভাগ এটি বিবেচনা করবেন। ফাইনালি আমি নির্বাচন করব ইনশাল্লাহ।’

দলের প্রত্যয়নপত্র না থাকায় সিলেটে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খাঁন, স্বতন্ত্র মুহিবুর রহমানসহ আরও ১১ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

সিলেটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘৪টি মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ১টি অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া দুটি মনোনয়নপত্রের কাগজপত্রে ঘাটতি রয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, তারা কাগজপত্র দিলে বিষয়টি নিয়ে পরে আমরা সিদ্ধান্ত জানাব।’

কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় চট্টগ্রাম-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন, দিনাজপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু হোসাইন বিপুর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় খুলনায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধুর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিল জমা না দেওয়ায় মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। ডিসি সাহবে বলেছেন, আপনি সেটি জমা দিয়ে নিয়ে আসুন।’

ঝালকাঠি-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বজলুল হক হারুনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সদ্য দল বদল করা বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাহান ওমর।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬টি আসনে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৪৫ প্রার্থীর।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়াদের তালিকায় রয়েছেন—সদর আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলিও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘অধিকাংশ প্রার্থীর মনোনয়ন অবৈধ হয়েছে সমর্থনকারী শতকরা ১ ভাগ ভোটারের মধ্যে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০ জন ভোটার যাচাইয়ে সঠিকতা না পাওয়ার কারণে।’

নরসিংদীতে তিনটি আসনে মোট ২৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছেন জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম।

পিরোজপুরের ৩টি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাইয়ে ৩৩টির মধ্যে বাদ পড়েছে ১০টি। এর মধ্যে পিরোজপুর-১ আসনে ৪টি, পিরোজপুর-২ আসনে ১টি ও পিরোজপুর-৩ আসনে ৫টি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। আর বৈধ হয়েছে ২৩টি।

নেত্রকোণায় ৫টি আসনে ৩৬ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাকের পার্টি ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

শেরপুরের ২টি আসনে তিন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। টাঙ্গাইলের আটটি আসনে দুটি রাজনৈতিনক দল ও স্বতন্ত্রসহ ১২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

যশোরের ৬টি আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনসহ ১৮ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের তিনটি আসনে ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুজাফর রিপন।

মুন্সীগঞ্জ–১ আসনে ১১ প্রার্থীর মধ্যে ঋণখেলাপীর অভিযোগে বিকল্প ধারার প্রার্থী সংসদ সদস্য মাহি বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ১ শতাংশ সমর্থন তালিকা যাচাইয়ে গরমিল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরওয়ার কবিরসহ ৩ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

কুমিল্লার ৫টি আসনে ২৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ও স্থগিত হয় ১৪ জনের মনোনয়নপত্র। দিনাজপুরে চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ। চার প্রার্থীরই দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রে সমর্থিত ভোটার তালিকার নামে গরমিল থাকায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনে ৬ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এ কে এম গালিভ খাঁন। ঋণখেলাপী, মৃত ব্যক্তির নামে স্বাক্ষর, কাগজপত্রে ত্রুটি ও সম্পদের বিবরণী না দেওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে ৩৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ঋণখেলাপী ও কাগজপত্রে স্বাক্ষরে গরমিল থাকায় তিনটি আসনে ১২ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা রেহেনা আকতার বলেন, প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এতে ২১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ এবং মনোনয়নপত্রে ভুল তথ্য এবং ঋণখেলাপী থাকায় ১২ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, তবে মনোনয়নপত্রে ভুল তথ্য এবং ঋণখেলাপী থাকায় যাদের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে, তারা ইচ্ছে করলে আপিল করতে পারবেন।

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। 

গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে নির্বাচনে অংশ নিতে চাওয়া প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়। এখন চলছে মনোনয়ন যাচাই বাছাই। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর।

জাগরণ/দ্বাদশজাতীয়সংসদনির্বাচন/কেএপি/এসএসকে/এমএ