• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৯, ০৪:০০ পিএম

ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলা

৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত

৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত
বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়

 

বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার চার বছর পর ৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। 

অভিযুক্তরা হলেন- (১) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর বলে কথিত সৈয়দ জিয়াউল হক। তার সাংগঠনিক নাম সাগর ওরফে ইশতিয়াক ওরফে বড় ভাই, (২) মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, (৩) আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, (৪) আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস, (৫) আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আবদুল্লাহ এবং (৬) সাফিউর রহমান ফারাবী। তাদের মধ্যে ফারাবী ছাড়া বাকি সবাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের জঙ্গি বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য। 

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য জানান।

মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগপত্র অনুমোদনের জন্য আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। প্রজ্ঞাপনপ্রাপ্তি সাপেক্ষে পূর্ণাঙ্গ কেইস ডেকেট আদালতে পাঠানো হবে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় দিয়েছেন বেঁধে দিয়েছেন ঢাকার মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারী।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম -ছবি : সংগৃহীত 

মনিরুল বলেন, এই ঘটনাটির মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া। তিনি পলাতক। তদন্তে এ মামলায় মোট ১১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর বাইরে সাফিউর রহমান ফারাবী গ্রেফতার হন র‍্যাবের হাতে।

ফারাবী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অভিজিৎ রায়কে হত্যার প্ররোচনা দিয়েছিলেন। এ কারণে প্ররোচনাদাতা হিসেবে তাকে এ মামলায় আসামি দেখানো হচ্ছে।

গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মনিরুল আরও বলেন, তদন্তে ও ঘটনাস্থলের আশপাশের ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিজিৎ হত্যায় সম্পৃক্ততা আছে এ রকম মোট ১১ জনকে চিহ্নিত করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। অপারেশন, ইন্টেলিজেন্স ও ট্রেইনিং- এই তিন ভাগে তারা  ওই হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।

হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া দলটির নেতৃত্বে ছিলেন মুকুল রানা ওরফে শরিফুল, যিনি ২০১৬ সালের ১৯ জুন ঢাকার খিলগাঁওয়ে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। বাকি দশজনের মধ্যে পাঁচজনের সাংগঠনিক নাম জানা গেলেও আসল পরিচয় বা ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি। এ কারণে বাকি পাঁচজনের সঙ্গে ফারাবীর নাম যুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তবে মনিরুল বলেন নাম-ঠিকানা পাওয়া গেলে পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর নানা সময়ে সন্দেহভাজন হিসেবে ৭জনকে গ্রেফতার হয়। কিন্তু অপরাধে তাদের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে অভিযোগপত্রে। তারা হলেন -সাদেক আলী ওরফে মিঠু, মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান ওরফে গামা, আমিনুল মল্লিক, জাফরান হাসান, জুলহাস বিশ্বাস, মান্না ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহি, আবুল বাশার।

স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে নিয়ে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে টিএসসির সামনে জঙ্গি কায়দায় হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিৎ রায়। 

অভিজিৎ থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রে। বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি মুক্তমনা ব্লগ সাইট পরিচালনা করতেন। জঙ্গিদের হুমকির মুখেও তিনি বইমেলায় অংশ নিতে দেশে এসেছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের পর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন অধ্যাপক অজয় রায়।

এসএমএম