• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০১৯, ০২:৪৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৪, ২০১৯, ০৪:০৬ পিএম

পুলিশের ওপর বোমা হামলা 

গ্রেফতার ২ জঙ্গি কুয়েটের ছাত্র ছিল

গ্রেফতার ২ জঙ্গি কুয়েটের ছাত্র ছিল
গ্রেফতার মো. মেহেদী হাসান তামিম ও মো. আবদুল্লাহ আজমী - ছবি : জাগরণ

রাজধানীর গুলিস্তান ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির সিটিটিসি ইউনিট। রোববার (১৩ অক্টোবর) রাতে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মো. মেহেদী হাসান তামিম ও মো. আবদুল্লাহ আজমীর উভয়েই খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ছাত্র ছিলেন। 

সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি জানান, তামিম ও আবদুল্লাহ নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। দুজনেই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১টি ল্যাপটপ ও ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আজ তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

মনিরুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তারা ভোলার দুর্গম চরে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ বছরের শুরুর দিকে  নারায়ণগঞ্জে ফরিদ উদ্দিন রুমির ছোট ভাই জামাল উদ্দিন রফিকের নেতৃত্বে একটি সামরিক শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এসময় ফতুল্লায় রফিকের বাসায় তারা বোমা তৈরির একটি কারখানা তৈরি করেন। গত ২৯ এপ্রিল গুলিস্তানে এবং ৩১ আগস্ট সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় বোমা হামলায় তামিম ও আবদুল্লাহ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। এছাড়া মালিবাগ, পল্টন ও খামারবাড়ির বোমা হামলায় ব্যবহৃত বোমা তৈরিতে বন্ধু রফিককে তারা সহায়তা করেন।

গ্রেফতারকৃতদের পরিকল্পনা এবং নেতৃত্বেই সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ওপর ইম্পোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) হামলা করা হয়। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তক্কার মোড়ে পরিচালিত জঙ্গিবিরোধী অভিযানস্থলে তারা নিয়মিত শলাপরামর্শ করাসহ বিভিন্ন ধরনের বোমার (আইইডি) উৎকর্ষ সাধনে তৎপর ছিল। তাদের অন্য সহযোগীদেরও গ্রেফতার অভিযান চলছে।

প্রতিটি হামলার আগে টার্গেট স্থানে একাধিকবার রেকি করা হতো। পুলিশের ওপর তাদের হামলার কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তাদের প্রথম পছন্দ ছিল আইএস। তারা আইএসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিল। তবে এখনও আইএসের সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের যোগাযোগ হয়নি।

গত ২৯ এপ্রিল রাতে গুলিস্তানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর বোমা হামলায় ট্রাফিক কনস্টেবল নজরুল ইসলাম, লিটন চৌধুরী ও কমিউনিটি পুলিশ সদস্য মো. আশিক আহত হন। গত ৩১ আগস্ট রাতে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের যাত্রাপথে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ ঘটনায় একজন এএসআই এবং একজন কনস্টেবল আহত হন।

চলতি বছর পুলিশের ওপর আরও ৩টি হামলা ও হামলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে গত ২৬ মে মালিবাগে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) কার্যালয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা পুলিশের গাড়িতে বোমার বিস্ফোরণ ঘটলে এসআই রাশেদা খাতুন এবং এক রিকশাচালক আহত হন। গত ২৩ জুলাই খামারবাড়ি এবং পল্টনে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে একই সময় দুটি কার্টনে বোমার সন্ধান পায় পুলিশ। পরে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়।

প্রতিটি ঘটনার পরই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের পক্ষ থেকে হামলার দায় স্বীকার করা হলেও পুলিশ বরাবরই বলেছে, এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে এ দেশীয় উগ্রপন্থি জঙ্গিরাই।

এইচ এম/টিএফ

আরও পড়ুন