• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০১৯, ০৭:৫৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১১, ২০১৯, ০৪:২৬ পিএম

ষড়যন্ত্রের জালে বিপন্ন রাজনীতি-২১

এক রহস্যময় মুক্তিযোদ্ধা

এক রহস্যময় মুক্তিযোদ্ধা

একটা বিষয় আমাকে প্রায়শই মানসিকভাবে পীড়িত করে। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনও মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে বিরূপ কিছু ভাবতেই আমি বিষণ্ণ বোধ করি। একাত্তরে মার্চের ২৫ তারিখ রাতে সেই ধ্বংসতাণ্ডবের মধ্যে ইত্তেফাক অফিসের প্রায়ান্ধকার বার্তাকক্ষে বসে ট্রানজিস্টারের নব ঘুরাচ্ছিলেন অগ্রজ সাংবাদিক সৈয়দ শাহজাহান। আমরা ক’জন সেই অবরুদ্ধভাবে শোনার চেষ্টা করছিলাম বিভিন্ন স্টেশনের সংবাদ। তখনই আমরা চাপা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার অস্ফুট শব্দ শুনে। আমাদের সেই উল্লাস চাপা পড়েছিল স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রের শব্দে। আর সম্ভবত ২৯ তারিখে জিঞ্জিরায় গিয়ে রাত্রে কোনো এক ট্রানজিস্টারে শুনতে পাই বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কোনো এক মেজর জিয়ার ঘোষণা, তখন ঐ অচেনা মেজরকে মনে হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার স্বপ্নের অন্যতম সারথি। অথচ আজ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য ঘাটতে গিয়ে খুব কষ্ট লাগছে এই কথা ভেবে যে আমাকে একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রসঙ্গটি এখানে আনতে হচ্ছে। তিনি সেই মেজর জিয়া। জিয়া ছিলেন খুব ঠাণ্ডা মাথার মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে কৌশলী ভূমিকা পালন, স্বাধীনতার পর পাক-মার্কিন চক্রের প্ল্যানিং সেলের সদস্য হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যার ব্লুপ্রিন্ট বাস্তবায়নে অংশ নেয়া, ৭ নভেম্বর পাল্টা ক্যুর পর তার জীবন রক্ষাকারী বন্ধু কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা, সেনা বিদ্রোহ দমনের নামে প্রহসনের বিচারে একের পর এক মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের হত্যা— সবই তিনি করেছেন অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায়। উচ্চ আদালতও সিরিয়াল কিলার জিয়াকে ঠাণ্ডা মাথার খুনি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পাকিস্তানি মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে দীর্ঘদিন নিয়োজিত থাকার সময়ই সম্ভবত তিনি এসব বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছিলেন। কমিশন প্রাপ্তির চার বছর পরই জিয়াকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে নিয়োগ করা হয়। সেখানে তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত কাজ করেন। ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক ভূমিকা পালনের সময় তিনি আইয়ুব-ইয়াহিয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা অত্যন্ত সুচারুভাবে কাজে লাগান।

১৯৬৬ সালে জিয়া ছিলেন পাকিস্তানি মিলিটারি একাডেমির প্রশিক্ষক। এ সময়ে তার ছাত্রদের মধ্যে দুই বাঙালি ছিলেন। তারা হলেন বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি ফারুক রহমান ও আবদুর রশীদ। সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যিনি ক্ষমতা দখল করেছিলেন, সেই জিয়াই তার সাড়ে পাঁচ বছরের শাসনমলে ২০টি বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা এবং গুপ্তহত্যার সম্মুখীন হন। ভাগ্যের নিয়ম পরিহাস এই যে, সিপাহি বিপ্লবের সময়ে যে সৈন্যরা কাঁধে তুলে তাঁকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল, তারাই বারবার তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে।

১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল জেনারেল জিয়া চাপ প্রয়োগ করে প্রেসিডেন্ট সায়েমকে বলতে বাধ্য করেন যে, “আমি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতে অক্ষম। কাজেই আমি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করছি। এবং তাঁর কাছে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার অর্পণ করছি।”

এভাবে জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সপ্তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এর আগের বছর, ২৮ নভেম্বর জিয়া সিদ্ধান্ত নেন, প্রেসিডেন্ট সায়েমকে একসঙ্গে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসনের দায়িত্বে রাখা তাঁর জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে। দুটি পদেই প্রেসিডেন্ট সায়েম তাঁর ভূমিকা যথার্থভাবে পালন করতেন। এই সময়ে জিয়া সায়েমের মতের বিরুদ্ধেই পরবর্তী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত করতে বাধ্য করেন। এর পেছনে যে কারণ দেখানো হয় তা মোটেই জোরালো ছিল না। আসল কারণ ছিল, জিয়া এ সময় তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তৈরি করেছিলেন, তিনি চাইতেন না, নির্বাচন তাঁর এই ক্যারিয়ারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াক। প্রধান বিচারপতি চেয়েছিলেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সেভাবেই তিনি এসেছিলেন। স্বভাবতই এই ঘটনায় সায়েম সম্মত হতে পারেননি।

এ সময়ে জিয়ার কাছে খবর যায়, প্রেসিডেন্ট সায়েম সম্ভবত তাঁকে বরখাস্ত করে অপেক্ষাকৃত কম উচ্চাভিলাষী কাউকে সেনাবাহিনীর প্রধান পদে নিয়োগ করার চিন্তাভাবনা করছেন। এতে সন্দেহপ্রবণ জিয়া দ্রুত সায়েমকেই সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অবশেষে একদিন সহকর্মী জেনারেলদের সঙ্গে নিয়ে জিয়া বঙ্গভবনে হাজির হন। দিনটি ছিল রোববার। জিয়ার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল এরশাদ, চিফ অব জেনারেল স্টাফ জেনারেল মঞ্জুর, জেনারেল মীর শওকত আলী, নবম ডিভিশনের কমান্ডার এবং নৌ ও বিমানবাহিনীর দুই প্রধান। প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী বিচারপতি সাত্তারও সে সময়ে উপস্থিত ছিলেন।

এই সভায় উপস্থিত একজন পরে জানান, সায়েম জেনারেল জিয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। সিএমএলএর পদটি জিয়াকে দেয়ার বিরোধিতা করে তিনি অনেকক্ষণ পর্যন্ত চেষ্টা চালান। তিনি বলেন, “আমি দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নিয়েছি। এ কাজ আমাকে শেষ করতে হবে।” জিয়াও তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। মধ্যরাত পর্যন্ত এ নিয়ে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি এবং অনুরোধ চলতে থাকে। কিন্তু এই বৃদ্ধ ব্যক্তিটি শেষ পর্যন্ত বিতর্ক চালিয়ে যান। একপর্যায়ে তিনি বিমানবাহিনীর প্রধানের দিকে ফিরে বলেন, “মাহমুদ, তোমাকে আমিই এনেছি। তুমি বলো, আমি কি এই লোকের কাছে সিএমএলএর দায়িত্ব ছাড়তে পারি।” এয়ার ভাইস মার্শাল মাহমুদ এতে খুব বিব্রত বোধ করেন। তিনি সায়েমকে শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। কিন্তু জিয়ার বিপক্ষেও যেতে পারছিলেন না। কাজেই তিনি আমতা আমতা করে বললেন, “স্যার, আমি খুব দুঃখিত। এ অবস্থায় আমার মন্তব্য করার উপায় নেই। আমি শুধু জিয়াকেই সমর্থন করতে পারি।” অবশেষে সাত্তার সায়েমকে বললেন, “ভাই জিয়া যখন সিএমএলএ হতেই চাইছে, কাজেই পদটি আপনি ছেড়ে দিন’’। রাত একটার দিকে সায়েম একটু নরম হন এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদ হস্তান্তর কাগজে স্বাক্ষর করেন। এরপর সায়েমকে হটিয়ে বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট পদ দখল করা জিয়ার জন্য শুধু সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরিকল্পনা এমনভাবে করা হয়েছিল, যাতে জিয়া সামরিক প্রেসিডেন্ট নন, বেসামরিক পোশাকে সামরিক প্রেসিডেন্ট হতে পারেন।

‘‘জেনারেল জিয়ার জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে পাকিস্তানে। তার বাবা-মায়ের কবর পাকিস্তানে, তারেকের জন্ম পাকিস্তানে। বাংলা ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। তিনি বাংলা বলতে পারতেন বটে কিন্তু বাংলা লিখতে পারতেন না। বগুড়ায় দাদাবাড়ি হওয়ার সূত্রে এবং খালেদার সঙ্গে বৈবাহিক সূত্রে তার বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার ঘটনাটিকে বলা হয় আইএসআইয়ের সবচেয়ে বড় সফল অপারেশন’’

..........‘’..........

টেনিস কোর্টে বঙ্গবন্ধু হত্যা চক্রান্ত

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ব্ল‍ুপ্রিন্ট বাস্তবায়নে জেনারেল জিয়া একপর্যায়ে টেনিস কোর্টকে বেছে নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি পাক-মার্কিন চক্রের প্ল্যানিং সেলের দুই সদস্যের সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ দিতেন।‌ বিষয়টি সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন। আবার বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের রাষ্ট্রপক্ষের ৯ নং সাক্ষী হিসেবে লে. কর্নেল হামিদ জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা সিনিয়ার অফিসাররা ঢাকা ক্যাণ্টনমেন্ট টেনিস কোর্টে নিয়মিত টেনিস খেলতাম। ১৪ আগস্ট বিকেলবেলা জেনারেল জিয়াউর রহমান, জেনারেল মামুন, কর্নেল খোরশেদ এবং আমি টেনিস খেলছিলাম। তখন আমি লক্ষ করলাম, চাকরিচ্যুত মেজর ডালিম এবং মেজর নূর টেনিস কোর্টের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। প্রকৃতপক্ষে এদের দুজনকে পঁচাত্তরের আগস্টের প্রথম প্রথম দিক থেকে এইরূপভাবে দেখেছি। এটা আমাদের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়, কারণ তারা ছিল চাকরিচ্যুত জুনিয়র অফিসার। একদিন জেনারেল সফিউল্লাহ আমাকে বলেন, এরা চাকরিচ্যুত জুনিয়র অফিসার, এরা কেন এখানে টেনিস খেলতে আসে? এদেরকে মানা করে দিবেন, এখানে যেন আর না আসে। খেলা শেষে আমি মেজর নূরকে জিজ্ঞাসা করলাম, তোমরা কার অনুমতি নিয়া এখানে খেলতে আসো? জবাবে জানায়, তারা জেনারেল জিয়ার অনুমতিতে খেলতে আসে।”

জেনারেল সফিউল্লাহ, কর্নেল সাফায়াত জামিল এবং কর্নেল হামিদের জবানবন্দি সাক্ষ্য আইনের আলোকে বিশ্লেষণ করলে কোনো আদালতের পক্ষেই জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়া বিকল্প থাকবে না। এ কথা ফৌজদারি আইনে মোটামুটি ধারণা আছে এমন সকল আইনজীবীই বলবেন। সাক্ষ্য আইনে একটি তত্ত্ব রয়েছে, যাকে বলা হয় সার্কামন্সট্যানশিয়াল এভিডেন্স বা পরিস্থিতিগত সাক্ষ্য। এ কথাও বলা হয়, একজন চাক্ষুষ সাক্ষী মিথ্যা বলতে পারে কিন্তু পরিস্থিতি মিথ্যা বলতে পারে না। এটাও তাৎপর্যপূর্ণ যে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে দুই খুনি ডালিম ও নূর টেনিস কোর্টের পাশে ঘুরঘুর করছিল, সেখানে জিয়াও টেনিস খেলছিলেন।

লে. কর্নেল হামিদের টেনিস খেলা সম্পর্কীয় জবানবন্দিও সার্কামন্সট্যানশিয়াল সাক্ষ্যকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। এটা সবারই জানা, সামরিক বাহিনীতে শৃঙ্খলার বিধি-বিধান কঠোরভাবে মেনে চলতে হয়। যেখানে টেনিস কোর্টটি ছিল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত, সেখানে জিয়াউর রহমান কর্তৃক আগস্ট মাসব্যাপী এবং বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার কয়েক ঘণ্টা পূর্বে চাকরিচ্যুত নিম্ন মর্যাদার কর্মকর্তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের টেনিস কোর্টে ঘোরাফেরা করতে দেয়ার ঘটনা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশ্ন হলো, কেন তারা টেনিস কোর্টের চারপাশে ঘোরাফেরা করত, যেখানে জিয়াও খেলতেন এবং কেনই-বা জিয়া এই দুজন নিম্ন মর্যাদার অফিসারকে সেখানে প্রতিনিয়ত যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এর একমাত্র গ্রহণযোগ্য জবাব হতে পারে এই যে, গোয়েন্দা নজরদারি এড়িয়ে জিয়ার পক্ষে এই দুজন খুনির সঙ্গে টেনিস কোর্টের আশপাশে খেলার ছলে কথা বলা সহজ ছিল।

জিয়ার ক্ষমতা দখল আইএসআইয়ের সবচেয়ে বড় সাফল্য

জেনারেল জিয়ার জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে পাকিস্তানে। তার বাবা-মায়ের কবর পাকিস্তানে, তারেকের জন্ম পাকিস্তানে। বাংলা ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। তিনি বাংলা বলতে পারতেন বটে কিন্তু বাংলা লিখতে পারতেন না। বগুড়ায় দাদাবাড়ি হওয়ার সূত্রে এবং খালেদার সঙ্গে বৈবাহিক সূত্রে তার বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার ঘটনাটিকে বলা হয় আইএসআইয়ের সবচেয়ে বড় সফল অপারেশন। পাকিস্তানে আইএসআইয়ের সাফল্য নিয়ে ‘আকবরে ইমতিয়াজ’ নামে যে গ্রন্থটি প্রকাশের আগেই আলোচিত হয়, তাতে আইএসআইয়ের বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল নিয়ে একটি অধ্যায় ছিল। কিন্তু পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে এবং বিরূপ আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করে প্রসঙ্গটি বাদ দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, জিয়াউর রহমানের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়া জেলার বাগবাড়িতে। তাঁর পিতা মনসুর রহমান ছিলেন কলকাতায় এক সরকারি দফতরে কর্মরত কেমিস্ট। মাতা জাহানারা খাতুন ছিলেন গৃহিণী এবং রেডিও পাকিস্তানের কণ্ঠশিল্পী। জিয়াউর রহমান শৈশবে কিছুদিন বগুড়ার গ্রামাঞ্চলে এবং কিছু সময় কলকাতায় অতিবাহিত করেন। ভারত বিভাগের (১৯৪৭) পর তাঁর পিতা করাচিতে চলে যান এবং জিয়াউর রহমান কলকাতার হেয়ার স্কুল ছেড়ে করাচির একাডেমি স্কুলে ভর্তি হন। ওই স্কুল থেকে তিনি ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি করাচির ডিজে কলেজে ভর্তি হন। একই বছর তিনি কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। জিয়াউর রহমান ১৯৫৫ সালে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। এ পদে তিনি দুই বছর চাকরি করেন এবং ১৯৫৭ সালে তাঁকে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি করা হয়। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীতেও কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে তিনি খেমকারান সেক্টরে যুদ্ধ করেন।

উচ্চাভিলাষী জিয়া

বঙ্গবন্ধু খুব ভালোভাবেই জিয়াউর রহমানকে চিনতেন এবং তার উচ্চাভিলাষী মনোভাব সম্পর্কে জানতেন। আর এ কারণেই জেনারেল সফিউল্লাহকে দ্বিতীয় দফায় সেনাবাহিনীর প্রধান করায় জিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে পদত্যাগ করতে চাইলে বঙ্গবন্ধু তৎকালীন প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নুরুল ইসলাম চৌধুরীকে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে বলেছিলেন। প্রয়াত নুরুল ইসলাম চৌধুরী ১৯৯৪ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক আজাদী পত্রিকার ‘নৃশংস পনেরোই আগস্টের পূর্বাপর’ শীর্ষক এক নিবন্ধে এই তথ্য প্রকাশ করেন।

নুরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “স্বাধীনতা লাভের পরে খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য হিসেবে নাখালপাড়া সংসদ হোস্টেলে ১৯৭২ সালে আমাকে প্রায় ৭/৮ মাস থাকতে হয়। তখন জেনারেল জিয়া আমার হোস্টেলে চা পানের মাধ্যমে অনেক আলোচনাই করতেন। জিয়া দুঃখ করতেন, তার যোগ্যতার সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। জিয়া ব্যাচমেট হিসেবে সফিউল্লাহর উপরের দিকে ছিলেন এবং নিয়ম অনুযায়ী সেনাবাহিনী প্রধানের পদটি তার পাওয়া উচিত ছিল। জেনারেল সফিউল্লাহকে তিন বছর মেয়াদান্তে আরও তিন বছরের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করায় জিয়া অত্যন্ত দুঃখিত ও বিপর্যস্ত হয়ে আমাকে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে বলেন ও প্রতিরক্ষা সচিবকেও তা জানান। আমি তাকে ২/১ দিন অপেক্ষা করতে বলেছিলাম। পরে আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে জিয়ার পদত্যাগের ইচ্ছা ব্যক্ত করলাম। বঙ্গবন্ধু এতে অত্যন্ত রাগান্বিত হয়ে আমাকে বললেন, “তুমি এখনই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও। তুমি জানো না জিয়া অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী।” বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ১৯৭৫ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে জিয়ার পদত্যাগপত্র গৃহীত হতো।

বাকশালের সদস্যপদ না পেয়ে ক্ষিপ্ত হন জিয়া

বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নুরুল ইসলাম চৌধুরী ‘নৃশংস পনেরোই আগস্টের পূর্বাপর’ শীর্ষক নিবন্ধে বলেন, “বাকশালের সদস্যপদ না পেয়ে এবং জেনারেল সফিউল্লাহকে সেনাবাহিনীর প্রধান করায় জিয়া ক্রমেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং নানা অসন্তোষের কথা জানান।

জিয়ার অসন্তোষের বিষয়টি নুরুল ইসলাম চৌধুরী বঙ্গবন্ধুকে জানালে তিনি বলেন, “ও (জিয়া) আরও অনেককে দিয়ে বাকশালের সদস্য হবার জন্য আমার কাছে সুপারিশ করেছে। সে ধৈর্য ধরতে জানে না। আমি বর্তমানে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদেরই সদস্য করেছি। পরে তাকেও হয়তো করব।”

এ কথা বলার পর প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নুরুল ইসলাম চৌধুরী বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, জিয়াকে পদাতিক বাহিনীর কাঠামো বিন্যাস করার জন্য তার আরো কিছুদিন দরকার এবং ১ লা সেপ্টেম্বর ‘৭৫-এ তার পদত্যাগ গ্রহণ করে আদেশের জন্য পাঠিয়ে দেবেন। নুরুল ইসলাম চৌধুরীকে বঙ্গবন্ধু ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, “তুমি যা ভালো বুঝো তা-ই করো।” এটি ছিল আগস্টের প্রথম দিকের ঘটনা।

মেজর রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম

‘‘কালুরঘাটে আমাদের সৈন্যরা সাহসিকতার সাথে যু্দ্ধ করে এবং এখানে বেশকিছু সৈন্য হতাহত হয়। কিন্তু হতাহতের সংখ্যা দিয়ে সেখানে ওরকম একটা সময়ে ‘ডিফেন্স’ নেয়ার যৌক্তিকতা নিরূপন করা যাবে না। আর, অন্তত চট্টগ্রাম শহরের নিয়ন্ত্রণ-রক্ষা-যুদ্ধের ঐ সংকটময় দিনগুলোতে কালুরঘাটের মতো এত দূরবর্তী একটা অবস্থানে উদ্দেশ্যহীনভাবে ‘ডিফেন্স’ নিয়ে শত শত সৈন্যকে বসিয়ে রাখাটা যে সঠিক সামরিক পদক্ষেপ ছিল না, এ বিষয়েও দ্বিমতের অবকাশ না থাকারই কথা’’ 

..........‘’..........

মুক্তিযুদ্ধে আইএসআইয়ের রহস্যময় ছায়া

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা মুক্তিযুদ্ধরত সেনাবাহিনীর ভেতরে তাদের নিজস্ব এজেন্ট অনুপ্রবেশ ঘটানোর ত‍ৎপরতা শুরু করে, যাতে তারা পরবর্তীকালে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত করার চেষ্টা করতে পারে। এই প্রক্রিয়ার ‍অংশ হিসেবে জিয়া মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত হন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার কাজে যেসব সামরিক কর্মকর্তা নেতৃত্ব দিয়েছিল, তাদের প্রায় সবাই মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পাকিস্তান থেকে এসে প্রবাসী সরকারের সঙ্গে যোগ দেয়। বস্তুতপক্ষে, তারা কেউ যুদ্ধের ময়দানে লড়াই করেনি। হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী মেজর সৈয়দ ফারুক রহমান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের ঠিক পূর্বমুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি দেশ থেকে কলকাতায় আসেন এবং যশোর মুক্ত হওয়ার পর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন। পাকিস্তান-ফেরত এসব ষড়যন্ত্রকারী ও ঘাতকের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের সুসম্পর্ক ছিল।

মুক্তিযুদ্ধে  জিয়াউর রহমানের ভূমিকা যে রহস্যজনক সে বিষয়টি খুব স্পস্টভাবে উল্লেখ করেছেন মেজর রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) তাঁর লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে গ্রন্থে। বইটিতে একটি ঘটনা প্রসঙ্গে মেজর রফিক বলেছেন, “কালুরঘাটের প্রতিরক্ষায় অধিকাংশ সৈন্যই ছিল ইপিআর-এর। এরা আমাদের নির্দেশে কক্সবাজার এবং কাপ্তাই এলাকা সমূহ থেকে শহরে যুদ্ধ করতে আসছিল। পথে কালুরঘাটে দেখা মেজর জিয়া ও অন্যদের সাথে, তারা চলে যাচ্ছেন শহর ছেড়ে। মেজর জিয়া তাদের কালুরঘাটেই থেকে যেতে এবং অবস্থান নিতে বলেন। ৮ ইস্ট বেঙ্গল এবং ই. বি. আর. সি’রও বেশ কিছু সৈন্য কালুরঘাটে ছিলো। সব মিলিয়ে সেখানে প্রায় এক হাজার বাঙালি সৈন্যকে থেকে যেতে হয়েছিল।”

 “কালুর ঘাটে, কর্ণফুলী নদীর অপর পাড়ে এত সৈন্যকে শুধুমাত্র পাকিস্তানি সৈন্যদের আক্রমণ করার অপেক্ষায় রেখে দেয়ার ব্যাপারে প্রায় সব রাজনৈতিক নেতা, অন্যান্য সামরিক অফিসার, সৈন্য, এমনকি সাধারণ মানুষও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কালুর ঘাটের এই অবস্থান কেবল পাকিস্তানিদের কক্সবাজার যাওয়ার পথে কিছু সময়ের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারতো। কিন্তু ওই মুহূর্তে কক্সবাজারের মতো নির্জন সম‍ুদ্র সৈকত দখল করার জন্য পাকিস্তানিরা যুদ্ধ করছিল না। তাদের এবং আমাদের, উভয়ের জন্যই সেই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল চট্টগ্রাম শহর, ক্যাণ্টনমেন্ট, পোর্ট, নেভাল বেইজ এবং বিমানবন্দর দখল করা। কালুরঘাটে লক্ষ্যহীনভাবে বসে থেকে এসবের কোনোটাই অর্জন করা সম্ভব ছিল না।”

 “মৌলিক রণকৌশল অথবা যুদ্ধ সম্পর্কে যাদের বিশেষ কোনো ধারণাই নেই, তারাও এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করবে না যে, যু্দ্ধের সেই সংকটময় মুহূর্তগুলিতে আমাদের মোট সৈন্যের প্রায় ৬৫ভাগ সৈন্যকে কালুরঘাটে থামিয়ে রাখা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। সে সময় আমি এই সৈন্যদের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলাম সবচাইতে বেশি। কারণ আমার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চট্টগ্রামে পাকিস্তানি সৈন্যদের ধ্বংস করে শহর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এই সৈন্যদের অপেক্ষায় ছিলাম আমি। এদিকে পাকিস্তানিরা ক্রমাগত নতুন নতুন সৈন্য নিয়ে আসছিল ঢাকা থেকে। কালুরঘাটে আমাদের এত সৈন্যকে থামিয়ে না রাখলে নেভাল বেইজ, পোর্ট, বিমানবন্দর এবং ক্যান্টনমেন্ট সাফল্যের সঙ্গেই আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারতাম। সেই অবস্থায় পাকিস্তানিদের পক্ষে ঢাকা থেকে ‘রীইনফোর্সমেন্ট’ আনা সম্ভব হতো না এবং আমরা পাকিস্তানিদের পরাজিত করতে পারতাম। আমাদের যুদ্ধের ইতিহাস তখন সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং আরো সাফল্যমণ্ডিত হতো।”

 “কালুরঘাটে আমাদের সৈন্যরা সাহসিকতার সাথে যু্দ্ধ করে এবং এখানে বেশকিছু সৈন্য হতাহত হয়। কিন্তু হতাহতের সংখ্যা দিয়ে সেখানে ওরকম একটা সময়ে ‘ডিফেন্স’ নেয়ার যৌক্তিকতা নিরূপন করা যাবে না। আর, অন্তত চট্টগ্রাম শহরের নিয়ন্ত্রণ-রক্ষা-যুদ্ধের ঐ সংকটময় দিনগুলোতে কালুরঘাটের মতো এত দূরবর্তী একটা অবস্থানে উদ্দেশ্যহীনভাবে ‘ডিফেন্স’ নিয়ে শত শত সৈন্যকে বসিয়ে রাখাটা যে সঠিক সামরিক পদক্ষেপ ছিল না, এ বিষয়েও দ্বিমতের অবকাশ না থাকারই কথা। কারণ কালুরঘাটে এতসব সৈন্য থেকে যাওয়ার কারণেই যুদ্ধে আমরা প্রয়োজনীয় সৈন্য পেলাম না, যার ফলে চট্টগ্রাম শহরের পতন ঘটে।”

মেজর রফিকুল ইসলাম বলেন, “ আমাদের সৈন্যরা কালুরঘাটে প্রতিরক্ষা অবস্থান নেয়ার দুই সপ্তাহ পরে সেখানে যুদ্ধ শুরু হয় এবং সে সময় পর্যন্ত এখানে এই সৈন্যরা কোনো সংঘর্ষে লিপ্ত হয়নি। পাকিস্তানিরা এখানে আক্রমণ শুরু করলে আমাদের সৈন্যদের মতো অফিসাররাও অদম্য সাহস এবং প্রচুর মনোবল নিয়ে যুদ্ধ করে। কিন্তু সিনিয়র অফিসারদের অনুপস্থিতি সবাই অনুভব করছিল। আমাদের সঙ্গে খুব বেশি সিনিয়র অফিসার ছিল না। কিন্তু তাদেরই একজন মেজর শওকতকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল কক্সবাজার এবং ৮ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। মেজর জিয়া এবং মেজর শওকত আমাদের পরে বলেছিলেন যে, অপরিচিত যে আগন্তুকটি রেলওয়ে হিলে আমার সঙ্গে দেখা করে আমাকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য এবং রেডিওতে গিয়ে ভাষণ দিতে বলেছিলেন, সেই একই ব্যক্তি তাদের সাথেও দেখা করে এবং তাদের প্রস্তাব দেয় যে একটা বৃহৎ শক্তির ‘নেভাল ফ্লিটের’ কয়েকটি জাহাজ তাদের সহায়তা দেয়ার জন্য কক্সবাজারের অদূরে সমুদ্রে অপেক্ষায় আছে। পরিচিত সেই আগন্তুকের কথায় কিছু সৈন্যসহ মেজর শওকতকে কক্সবাজার পাঠানো হয়।  এটি খুবই  একটি অভাবনীয় এবং বিস্ময়কর ব্যাপার...”

আমি মনে করি দুই ধরনের মুক্তিযোদ্ধা আছেন— মুক্তিযোদ্ধা by conviction এবং under compulsion. অর্থাৎ যারা হৃদয় এবং বিশ্বাস থেকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছেন এবং যারা বাধ্য হয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। যারা আত্মার ভেতরে মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন তারা কখনও বিচ্যুত হন না। কিন্তু যারা বাধ্য হয়ে মুক্তিযুদ্ধে গেছেন তাদের ভেতর দোদুল্যমানতা দেখা যায়। তাই আমি সব সময় এই কথাটি বলে এসেছি, যে স্বাধীনতাবিরোধী সে সব সময়ই স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, সে পাল্টায় না। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা বদলে গিয়ে রাজাকারের পক্ষে চেয়ে যেতে পারে যদি বিশ্বাসের ভিতটি শক্ত না হয়।

আবেদ খান ● সম্পাদক প্রকাশক দৈনিক জাগরণ।     

বি.দ্র : পরবর্তী পর্ব প্রকাশ হবে আগামী ১১ ডিসেম্বর, বুধবার। ] 

আরও পড়ুন