• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১, ০২:৪৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১, ০২:৪৮ পিএম

ভাষা ও অধিকারের প্রশ্নে বাংলা পৃথিবীর নেতৃত্বস্থানীয়

ভাষা ও অধিকারের প্রশ্নে বাংলা পৃথিবীর নেতৃত্বস্থানীয়

সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। প্রজাতন্ত্র শব্দের ব্যাখ্যায় বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে— “বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যাহা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে পরিচিত হইবে।” এই ব্যাখ্যা ও বাংলা ভাষার স্বীকৃতি সংবিধান প্রদত্ত, এটা দাপ্তরিক ও আনুষ্ঠানিক। বাংলা ভাষার এই স্বীকৃতি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরের প্রথম সংবিধানেই বিধৃত। এই সংবিধান বাহাত্তর সালে প্রণীত হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের দিন ষোল ডিসেম্বর একাত্তর থেকেই কার্যকর। এই স্বীকৃতির বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতিসহ ভাষা নিয়ে সকল প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আর আন্দোলনের স্বীকৃতির চূড়ান্ত রূপ।

মাতৃভাষা বাংলার ইতিহাস সুদীর্ঘ কালের হলেও ভাষা নিয়ে আন্দোলনের বিস্তৃতি পাকিস্তান সৃষ্টির পর। যখন পাকিস্তানিরা বাংলাকে অস্বীকার ও অবমাননা শুরু করে তখন থেকে। এর পরিণতিতে শাসকের মুখের ওপর বীর বাঙালি প্রতিবাদী উচ্চারণে ‘না’ বলতে পেরেছিল। কেবল উর্দু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে, এই বক্তব্যের বিপরীতে অসম সাহসী বাঙালি ‘না’ উচ্চারণে পাকিস্তানিদের জানিয়ে দিয়েছিল বাংলাকেও অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে হবে। বাঙালির এই সাহস পাকিস্তানিদের ক্ষুব্ধ করেছিল। এরপর বাঙালির বুকের তাজা রক্ত ঝরেছে রাজপথে। বাংলাকে অস্বীকারের সরকারি অপচেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়েছে রাজধানী ঢাকা, সিলেটসহ সারাদেশ। এরপর সেই পাকিস্তানিরা বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বলে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।

এটা ইতিহাসের পাঠ। ইতিহাসের এই পাঠ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। ফলত বাঙালির ভাষা আন্দোলনের রক্তে ঝরা দিন একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা দিবস আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এই দিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ বিশ্বজনীন হয়েছে। মাতৃভাষার রক্ষার দাবি হয়েছে সর্বজনীন। ‘বাংলা’ ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন পেয়েছে ভাষাবিষয়ক সামগ্রিক প্রপঞ্চের মূল্য। আমাদের বাংলা ভাষা পৃথিবীর অন্তত পাঁচ হাজারের বেশি মাতৃভাষার স্মারকমূল্য পেয়েছে। ভাষা ও অধিকার এই দুয়ের সম্মিলনে বাংলা হয়েছে নেতৃত্বস্থানীয়।

প্রচলন আর অনুশীলনে বাংলা ভাষা পৃথিবীর নেতৃত্বস্থানীয় ভাষা না হলেও মাতৃভাষার অধিকারের প্রশ্নে বাংলা ভাষা হয়েছে অগ্রগণ্য, এটা অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে। বাংলা ভাষার সম্মানের এই স্বীকৃতি কেবলই বাংলাকেন্দ্রিক হয়ে থাকেনি, এর বিস্তৃতি ঘটেছে সকল ভাষাভাষী মানুষদের মাঝেও। বৈশ্বিক উপযোগিতা কিংবা ব্যবহারের প্রসঙ্গ এখানে না থাকলেও অনাগত দিনে পৃথিবীর একজন মানুষও কোনো একটা ভাষায় কথা বলতে চাইলে বাংলার ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও বৈশ্বিক স্বীকৃতি তার জন্যে বর্ম হয়ে আছে। দুনিয়ার সকল দেশের সকল শাসক অন্তত একজন মানুষের হলেও স্বতন্ত্র সে মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চাইলে একুশের এই স্বীকৃতি, মাতৃভাষা দিবসের এই স্বীকৃতি জোরপূর্বক ভাষাহরণের যেকোনো অপচেষ্টাকে রুখে দেবে।

ইউনেস্কোর মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির দিনটি এই সংস্থাভুক্ত সকল দেশ পালন করে থাকে। যে পাকিস্তানের কাছ থেকে রক্তের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষার স্বীকৃতি আদায় করেছি সেই পাকিস্তানকেও বাঙালির একুশে ফেব্রুয়ারির অমর দিনটিকে পালন করতে হয়। পাকিস্তান তাদের মতো করে দিনটি পালন করলেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট, আন্দোলন, রক্ত আর আত্মদানের ইতিহাসকে অস্বীকারের উপায় নাই তাদেরও। এটা আমাদের অনন্য অর্জন।

বাংলার এই বিশ্বজনীন রূপ, ভাষার অধিকার আদায়ের এই বিশ্বস্বীকৃতি আমাদের স্বাতন্ত্র্য আর গৌরবের অমূল্য অর্জন। এই অর্জনকে ধরে রাখতে আমাদেরকেই উদ্যোগী হতে হবে। নিজ নিজ মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসার ঘটাতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে। মাতৃভাষা সংরক্ষণের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগগুলোর পথ ধরে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে একে ছড়িয়ে দিতে হবে। জাতিসংঘের ইউনেস্কোর সঙ্গে মিলে এজন্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হলে সংস্থার সদস্যভুক্ত দেশগুলোর কাছে সরাসরি যাওয়া সম্ভব। আর এতে করে বিশ্ববাসী জানবে কী প্রক্রিয়ায়, কত রক্তে আদায় হয়েছিল ভাষার অধিকার।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট এবার ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ নামের একটা পুরস্কারের ঘোষণা করেছে। এই পদকপ্রাপ্তের তালিকায় দেশের দুইজনের পাশাপাশি আছেন দেশের বাইরে দুই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে অবদানের জন্য খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা ও উজবেকিস্তানের গবেষক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ এবছর প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের জন্যে মনোনীত হয়েছেন; এর বাইরে প্রতিষ্ঠান হিসেবে আদিবাসী ভাষা নিয়ে কাজ করা বলিভিয়ার অনলাইন উদ্যোগ অ্যাক্টিভিজমো লেংকুয়াস এ বছর বাংলাদেশ সরকারের এ সম্মাননা পাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই এই পুরস্কার চালুর মাধ্যমে মাতৃভাষার অধিকারের বিষয়টি বিশ্বের আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে। এক্ষেত্রে এই পুরস্কার দিয়েই থেমে গেলে চলবে না, নানা মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক প্রচারও চালাতে হবে। বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে পৃথিবীর সকল ভাষাভাষীর নিজ ভাষায় কথা বলার অধিকারকে আমরা কীভাবে আমরা আদায় করেছি, কীভাবে সুরক্ষা দিচ্ছি। ভাষার অধিকার আদায়ের প্রশ্নে বাংলাদেশকে এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে হবে।

বাংলাদেশে বাংলা রাষ্ট্রভাষা হলেও এই দেশে প্রচলিত অন্য ভাষাগুলোকেও এক্ষেত্রে অগ্রাহ্য করা যাবে না। আমাদের আদিবাসীদের ভাষাকেও অস্বীকার করা যাবে না। অস্বীকার করা যাবে না বিভিন্ন প্রান্তের আঞ্চলিক ভাষাগুলোকেও। আঞ্চলিক ভাষাগুলো প্রমিত বাংলার বিকৃতি নয়, ওগুলো প্রান্তিক মানুষের নিজস্ব ভাষা; এই বোধকে জাগ্রত করার পাশাপাশি একে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার চিন্তাও করতে হবে।

বর্তমান সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের’ স্বপ্ন দেখাচ্ছে। দেশের সকল পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রসার ঘটাতে সরকার কাজ করছে। এক্ষেত্রে সরকারি অনেক উদ্যোগ রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতে বাংলা বানানের যে অবস্থা তাতে ভাষাকে বিকৃত করা হচ্ছে। এতে করে বাংলা ভাষার প্রতি সরকারি পর্যায়ের অবহেলা পরিলক্ষিত হচ্ছে। একটা দেশের সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতে ভাষার এমন রুগ্নরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত। যে দেশ মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের প্রশ্নে সারাবিশ্বে অনুকরণীয় হয়ে আছে সেই দেশের সরকারি ওয়েবসাইটে দেশটির রাষ্ট্রভাষার এমন করুণ উপস্থাপন মেনে নেওয়া যায় না। এছাড়াও গুগল যেভাবে বাংলাভাষা বিশেষত গুগল ট্রান্সলেটে উপস্থাপিত হচ্ছে তা রীতিমত বিব্রতকর। বিব্রতকর এবং অপমানজনক এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।

বাংলাভাষা বাংলাদেশে সর্বক্ষেত্রে প্রায়োগিক ভাষা নয়। অফিস-আদালত-চিকিৎসা-বিজ্ঞান-প্রকৌশলে বাংলা অনেকটাই উপেক্ষিত। এর যৌক্তিক নানা কারণ থাকতে পারে, হতে পারে এসব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহারের মতো এত সমৃদ্ধ ভাষা নয়। তবে এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাভাষার বহুল ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যাপক গবেষণার পথ সৃষ্টি করতে হবে। আদালতে মাঝে মাঝে বাংলায় রায় লেখা হচ্ছে কিন্তু সেটা নিয়মিত অনুশীলিত নয়। রায়ের ক্ষেত্রে আইনি পরিভাষাগত নানা দিক বিবেচনা করতে বাংলা ভাষার সীমাবদ্ধতা আছে সত্য তবে এই সীমাবদ্ধতাকে কীভাবে অতিক্রম করে বাংলা ভাষাকে আইন-আদালতে ব্যবহার করা যায় এ নিয়ে কাজ করার দরকার। অতি সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে আদেশ ও রায় ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদে সক্ষম একটি সফটওয়্যার চালু করেছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ‘আমার ভাষা’ নামের এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইংরেজিতে দেওয়া রায়গুলো বাংলায় অনুবাদ করা সম্ভব হবে। সম্প্রতি এই সফটওয়্যার উদ্বোধন করা হয়। এই সফটওয়্যার বাংলাদেশ ভারত থেকে শুভেচ্ছা উপহারস্বরূপ পেয়েছে; এবং এটা ২০১৯ সাল থেকে ভারতে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানা গেছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হলেও এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার।

আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পথে, তখন কেন আমাদের বাংলাকে সকল ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ করার কাজ শেষ করতে পারিনি? কেবল সংবিধানে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমেই রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি। বাংলা ভাষার বিস্তৃতি ঘটাতে, সকল পর্যায়ে বাংলাকে প্রায়োগিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সম্ভব সকল ক্ষেত্রে আমাদের কাজ করার দরকার ছিল, ব্যাপকভাবে। সেটা হয়নি; তবে হয়নি বলে আর কখনও হবে না বা করা যাবে না এমনও না। যেখানে আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে সেই সব জায়গা চিহ্নিত করে এখনও কাজ শুরু করা দরকার। বিজ্ঞান-চিকিৎসা-প্রকৌশল-আইন-আদালতসহ যেসকল ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে সেগুলো বাদ দিলেও অন্য সকল ক্ষেত্রে বাংলাকে প্রায়োগিক ভাষা হিসেবে পরিণত করা যায়নি। আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। দেশের সকল সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাড়ির নম্বরপ্লেট, সরকারি দপ্তরের নামফলক এবং গণমাধ্যমে ইংরেজি বিজ্ঞাপন ও মিশ্র ভাষার ব্যবহার বন্ধ করার আদেশ দিলেও সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। হাই কোর্টের ওই আদেশের পর এর দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের ওপর ন্যস্ত করা হলেও তারা ফেব্রুয়ারি এলেই কেবল নড়েচড়ে বসে, বছরের বাকিটা সময় থাকে গণঘুমে!

রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে বাংলাকে প্রায়োগিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি মানে অন্য ভাষা বিশেষত সারা বিশ্বে প্রচলিত ইংরেজির প্রতি বিদ্বেষ নয়। এই ইংরেজি কিংবা অন্য কোনো ভাষার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি না করেও সেটা করা যায়। বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে ইংরেজিকে বাদ দিতে হবে এমন না। ইংরেজি বা অন্য ভাষাকে বাদ দিয়ে নয়, প্রায়োগিক ক্ষেত্রে বাংলাকে প্রাথমিক ভাষা হিসেবে নির্ধারণ করে অন্য ভাষার ব্যবহারও করা যায়। এটা সংঘাতের বিষয় নয়, এটা প্রয়োগ ও দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। আমাদের ভাষা আন্দোলন, একুশে ফেব্রুয়ারি, ভাষার স্বীকৃতি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বৈশ্বিক স্বীকৃতি সে শিক্ষাই দেয় আমাদের।

ভাষা আন্দোলনে মাতৃভাষার স্বীকৃতি আমাদের রক্তে রাঙানো। আমাদের এই রক্তের ওপর দিয়ে বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মিলেছিল যখন আমরা ভিনভাষীদের অধীনে ছিলাম। একাত্তরের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধে একটা দেশ অর্জনের পর বাংলা ভাষার মাহাত্ম্য বেড়েছে। আমাদের বাংলা, আমাদের ভাষার আন্দোলন কেবল একটা মাতৃভাষার জন্যেই কেবল আন্দোলন হয়ে থাকেনি, এটা হয়েছে এখন বিশ্বের সকল ভাষার অধিকার আদায়ের স্মারক। আমাদের ভাষা নেতৃত্ব দিয়েছে সকল ভাষা রক্ষার অধিকার আদায়ে, আমাদের আন্দোলন স্মারক হয়েছে অন্য সকল ভাষাভাষীর কাছে।  

ভাষা আন্দোলন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেবল দিবসি আয়োজন হিসেবে না রেখে বাংলা ভাষাকে আরও সমৃদ্ধ করতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি আমাদের গৌরবের অতীতকে বিশ্বপরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দরকার। সেজন্যে আর দেরি নয়, শুরু হোক এখনই।

লেখক : প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক