প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিহিংসা আর জেদের কারণে উপযুক্ত সুচিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী আহমেদ। 

শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, গতকালও (বৃহস্পতিবার) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বাৎসরিক মানবধিকার বিষয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সরকার দুর্নীতির শক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।’ রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ‘সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত আছে। কিন্তু কার্যত সব ক্ষমতাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে।’

রিজভী বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যে মধ্যযুগীয় সম্রাজ্ঞীর মতো দেশ শাসন করছেন সে কথা আমরা আগেই বলেছিলাম। আজ আর্ন্তজাতিকভাবেও শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে বিবৃতি আসছে। সকল সাংবিধানিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করে শেখ হাসিনা শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় সম্পূর্ণ নির্দোষ খালেদা জিয়াকে অন্তত দু’শ বছরের প্রাচীন ও জীর্ণ কারাগারে বন্দি করে রেখেছেন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টেও তা প্রমাণিত হলো।
 
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দেয়া হয়েছে, তাকে জামিন নিয়ে টালবাহানা করছে, তাকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হচ্ছে না। 

মধ্যরাতের নির্বাচনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই বিনা চিকিৎসায় ৭৪ বছর বয়সী ৪ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ছোট্ট অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ফেলে রেখে নারকীয় শাস্তি দেয়া হচ্ছে। দেশ চলছে শেখ হাসিনার নব্য নাৎসী শাসনে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার উপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের হিসেব একদিন জনগণের কাছে তাকে দিতেই হবে বলে হুঁশিয়ারি জানান রিজভী। 

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, সাধারণ মানুষের পেটে ছুরি মারতে আবারও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে সরকার। শুধুমাত্র লুটপাটের জন্য বেআইনিভাবে গ্যাসের মূল্য শতকরা ১০৩ ভাগ বৃদ্ধি করা হচ্ছে-যা বেআইনি ও মনুষত্বহীন পদক্ষেপ। জনসাধারণ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে তা বাতিলের দাবি  জানালেও সরকার তা শুনছে না। 
গত ১০ বছরে গ্যাসের দাম ৬ বার বাড়ানো হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির মাশুল দিতে হবে সাধারণ মানুষকে। এতে কারখানার বিকাশে বাধাগ্রস্ত হবে। কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হবে। সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে গ্যাসের বাড়তি দাম ওঠাবে। পরিবহন ব্যবসায়ীরা বাড়াবে ভাড়া। সব মিলিয়ে বাড়বে জীবনযাত্রার ব্যয়। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে দুর্নীতির মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের অর্থ উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। 

গণবিরোধী গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে দূরে সরে আসতে সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে রিজভী বলেন, অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। না হলে দাবি আদায়ের লক্ষে রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

টিএস/বিএস