• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৮, ২০১৯, ০৮:৪৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৮, ২০১৯, ০৯:৪৩ পিএম

খালেদার ‘মুক্তি প্রস্তাব’ সংসদে তুলছেন সংসদ সদস্য হারুন

খালেদার ‘মুক্তি প্রস্তাব’ সংসদে তুলছেন সংসদ সদস্য  হারুন
শপথগ্রহণের পর জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ-ফাইল ছবি

‘খালেদা জিয়ার মুক্তি সময়ের দাবি। সরকার তাকে রাজনৈতিক কারণে বন্দি করে রেখেছে। এজন্য আমি ওই সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি আনছি’

.........................................

শপথ শেষে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে যোগ দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেছিলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সংসদে সোচ্চার থাকবেন তিনি। কথা রাখতে চলেছেন বিএনপির এই সংসদ সদস্য। সংসদে বিএনপির প্রতিনিধিত্বকারী অন্য সংসদ সদস্যরা সমর্থন না করলেও খালেদার মুক্তির প্রস্তাব সংসদে তোলার জন্য ‘সিদ্ধান্ত প্রস্তাব’ আনছেন হারুনুর রশিদ। পাশাপাশি বিএনপিসহ সকল বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা গায়েবি মামলাসমূহ প্রত্যাহারেরও প্রস্তাব আনবেন তিনি।

সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে (১১ জুন বসবে এই অধিবেশন) বেসরকারি দিবসে নোটিশ আনার জন্য সংসদের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদার মুক্তির ‘সিদ্ধান্ত প্রস্তাব’টি জমা করেছেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, কারাবন্দি খালেদার মুক্তিপ্রস্তাবে হারুনুর রশিদ শিরোনাম করেছেন, ‘‘সংসদের অভিমত এই যে, অবিলম্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হউক’’। বাজেট অধিবেশনের বেসরকারি দিবসে নোটিশ আনার জন্য সংসদের সংশ্লিষ্ট শাখা প্রস্তাবটি গ্রহণও করেছে। সাধারণভাবে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব জমা দেয়ার পর অনেক সংসদ সদস্যই তা সমর্থন করেন। কিন্তু সংসদে বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনসহ আরও পাঁচজন সংসদ সদস্য থাকলেও এখন পর্যন্ত তারা তা সমর্থন করেননি।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আগামী ১১ জুন (মঙ্গলবার) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন আহ্বান করেছেন। সংসদ চলাকালীন প্রতি বৃহস্পতিবারকে বেসরকারি দিবস হিসেবে রাখা হয়। এদিন মন্ত্রী নন, শুধু সংসদ সদস্যরা এমন বিল ও সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সংসদে তুলতে পারেন। এ সুযোগ ব্যবহার করে বাজেট অধিবেশনের বেসরকারি দিবস অর্থাৎ বৃহস্পতিবার খালেদার মুক্তির ‘সিদ্ধান্ত প্রস্তাব’ সংসদে তুলবেন বিএনপি সংসদ সদস্য হারুন। তবে বিষয়টি আদালতের এখতিয়ারভুক্ত হওয়ায় স্পিকার যদি মনে করেন এই সিদ্ধান্ত প্রস্তাব বিচার কাজে প্রভাব ফেলতে পারে— তাহলে তিনি তা উত্থাপনের অনুমতি নাও দিতে পারেন।

দৈনিক জাগরণকে সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার মুক্তি সময়ের দাবি। সরকার তাকে রাজনৈতিক কারণে বন্দি করে রেখেছে। এজন্য আমি ওই সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি আনছি। এছাড়া ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুক্তি, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের দাবিসমূহ অবিলম্বে বাস্তবায়ন, শেয়ার বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ও সর্বস্বান্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে পুনর্বাসন এবং ব্যাংক ও শেয়ার বাজার লুণ্ঠনকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হউক’ নামে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সংসদের সংশ্লিষ্ট শাখা গ্রহণ করেছে। আশা করি, আমি আলোচনার সুযোগ পাব।’’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া-ফাইল ছবি

সংসদের আইন শাখা-২ সূত্রগুলো জানায়,  সংসদ সদস্যদের আনা সিদ্ধান্ত প্রস্তাবে মন্ত্রী একমত না হলে তিনি (সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী) ব্যাখ্যা করে সেই সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে তা গ্রহণ করেন। তবে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণ বা প্রত্যাখান- দুটোই ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটে পাস করে নিতে হয়।

সূত্র জানায়, স্বাধীনতার পর সংসদে এ পর্যন্ত সংসদ সদস্যদের ভোটে ২৩টি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গৃহীত হলেও সেগুলো তেমন বাস্তবায়ন হয়নি। গত দশম সংসদে চারটি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়। কিন্তু যত সমারোহে সিদ্ধান্ত প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করা হয়, ততো গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইন করা বা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সংসদের কার্যপ্রণালি বিধি ১৪৩ এর (২) ধারা অনুযায়ী, ‘‘গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনও ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পরে সংসদকে তা অবহিত করতে হয়। কিন্তু দশম সংসদে চারটি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব পাস হলেও এ সম্পর্কে মন্ত্রীরা কী করেছেন- তা সংসদে জানানো হয়নি।’’

জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সংসদে জানাবেন— এটাই আইন। সেটা না মানাটা সংসদীয় চর্চার বড় ব্যাঘাত।

এইচএস/এমএইউ/এসএমএম