• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১২, ২০১৯, ০৪:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১২, ২০১৯, ০৪:৫৬ পিএম

ছাত্রদল নিয়ে উভয় সংকটে বিএনপি : গয়েশ্বর রায়

ছাত্রদল নিয়ে উভয় সংকটে বিএনপি : গয়েশ্বর রায়

 

বয়সসীমা না করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে ছাত্রদলের আন্দোলন ও কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি উভয় সংকটের মধ্যে আছে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, ছাত্ররা কোথায় থাকবে? কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ তারা ক্যাম্পাসে যেতে পারে না! তারা তাদের কর্মকাণ্ড ক্যাম্পাস ভিত্তিক কিংবা ছাত্রদের নিয়ে করতে পারছে না। ছাত্রদলের নিয়মিত কাউন্সিল হওয়া দরকার। কিন্তু কাউন্সিল হওয়ার মতো হয়তো পরিস্থিতি নাই। যার কারণে আমাদের কাউন্সিলগুলো হতে বিলম্ব হয়। একারণে অনেকের ছাত্রত্ব থাকে না। আর কাউন্সিল নিয়মিত হলে ছাত্ররা তাদের অবদান অনুযায়ী পুরস্কৃত হয়। বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের চেম্বারে সাংবাদিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রদলের আন্দোলন ও কমিটির বিষয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এটা নিয়ে আমরা উভয় সংকটে। এই যে ওরা (ছাত্ররা) দীর্ঘদিন জেল খাটলো, মামলা এবং পুলিশের হয়রানির স্বীকার হলো, অথচ ওদের অবদানের বিনিময়ে ওরা কি পাবে? ওদের কি মূল্যায়ন হবে? দোষটা কার? দোষ কারো না। কারণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল তার কাজটি সঠিকভাবে করতে পারে না।

বয়সসীমা না করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে ছাত্রদলের আন্দোলনে বিষয়ে জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, ছাত্রদল বিরাট একটি সংগঠন। এই সংগঠনের আন্দোলন-সংগ্রামের অনেক ঐতিহ্য আছে। তবে অতীতের মত ওদের আন্দোলনের ধারাবাহিক ঐতিহ্যটা নাই। কিন্তু তারপরও তো তারা চেষ্টা করে।

ছাত্রদলের বিক্ষোভের বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, মঙ্গলবার যেটা হয়েছে, সেটাকে অস্বাভাবিক মনে করি না। কারণ বড় বড় রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনে  প্রতিযোগিতাগুলো অনেক সময় প্রতিহিংসারও রূপ নেয়। সুতরাং এটাকে বড় করে বা নেতিবাচকভাবে দেখার কিছুই নাই। তবে এক্ষেত্রে আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে- সেটা হলো, ওদেরকে বুঝানো এবং এই সিদ্ধান্ত বানচালের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা। তাই আমি সবাইকে বলবো, এটাকে স্বাভাবিকভাবে নেন।

ছাত্রদলের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, আমরা তাদের কথাগুলো শুনবো এবং সেই কথাগুলো শুনে আমরা সমাধান করা চেষ্টা করবো। আমি বিশ্বাস করি, ওরা এটা বুঝবে। সুতরাং ওদের সঙ্গে আলাপ করে আমরা এটার সমাধান করবো।

বিএনপি একটি বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যে প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেন, ওবায়দুল কাদেরকে বলবো, উনি নিজের চরকায় তেল দিক, তার চেহারাটা আয়নায় দেখুক। কারণ আমার সংগঠনকে তিরস্কার করে তার সংগঠনের দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোনো কারণ নেই। সুতরাং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজের ঘর গোছানোর কাজটা আগে করুক।

প্রশ্ন উঠেছে যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করে বিএনপির কি লাভ হলো- এই প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, এখানে দলের লাভ-ক্ষতির হিসাব করার সময় না। আর যদি দলীয় লাভের হিসেব করি তাহলে তো ঐক্য হবে না।

কবে নাগাদ বিএনপি আন্দোলনের মাঠে নামবে জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, আমরা তো মাঠে নামি। কিন্তু আমাদের মাঠে নামাটা নামার মতো কেউ দেখে নাই। সেই দেখানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আর বিএনপির জন্ম বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রশ্নে। আর যদি ঐক্য নাও হয় তাহলে বিএনপি কি ঘরে বসে থাকবে? তাহলে তো জনগণের দল হিসেবে বিএনপি দায়িত্বশীল দল হলো না।

আন্দোলনের জন্য বিএনপি কতটা সংগঠিত এই প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, কোনো দলই শতভাগ প্রস্তুতি এবং দল গুছিয়ে আন্দোলন করে না। কারণ আন্দোলনের মাধ্যমেই দলটা গুছিয়ে আসে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কোনো আন্তর্জাতিক চাপ নেই, ক্ষমতাসীন দলের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, আমরা মনে করি, আমার দেশে আমি বাস করি। সুতরাং আমার দেশের সমস্যা আমাকেই সমাধান করতে হবে।

খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে গয়েশ্বর রায় বলেন, সরকারের যখন ইচ্ছে তখন যে কোনো কারাগারে নিতে পারে। এটা সরকারের ইচ্ছা। এখানে কোনো প্রতিক্রিয়া নাই।
 
টিএস/এসজেড