• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০১৯, ০৯:০২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২০, ২০১৯, ১১:২৬ এএম

(ভিডিওসহ)

নিখোঁজের ১১ দিন পর ময়মনসিংহ থেকে উদ্ধার সোহেল তাজের ভাগ্নে

নিখোঁজের ১১ দিন পর ময়মনসিংহ থেকে উদ্ধার সোহেল তাজের ভাগ্নে

 

নিখোঁজের ১১ দিন পর ময়মনসিংহের তারাকান্দা থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজের ভাগ্নে সৌরভকে (২৫) উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ভোরে তাকে উদ্ধার করা হয়।

তারাকান্দা থানার ওসি মিজানুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তারাকান্দার উপজেলার মধুপুরের বটতলা বাজার এলাকার জামিল অটোরাইস মিলের সামনে দুর্বৃত্তরা সৌরভকে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। সৌরভ বর্তমানে সুস্থ আছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে ভাগ্নের উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সোহেল তাজও। তিনি ফেসবুক লাইভে জানান, ভোর ৫টা ২৭ মিনিটে তার মামাতো বোন তাকে ফোন করেন। মামাতো বোন জানান, কিছু মানুষ একটা লোকেশন থেকে তাকে (মামাতো বোন) ফোন করেন। ওই লোকেশনের নাম বলবেন না বলে জানান সোহেল তাজ। এরপর সোহেল তাজ বলেন, ওই কলে বোনকে জানানো হয়, একটা ছেলেকে ছন্নছাড়া অবস্থায় কিছু মানুষ গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে। পরে ওই লোকেরা ছেলেটিকে তাঁদের কর্মস্থলে নিয়ে গেছেন।

লাইভে সোহেল তাজ বলেন, এরপর তাঁর পরিবারের সদস্যরা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের ডিসি ওই এলাকার পুলিশ সুপারের (এসপি) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসপি নিজে গিয়ে ইফতেখার আলম সৌরভকে ওই লোকেশন থেকে পুলিশ কাস্টডিতে নিয়ে যান। সৌরভকে পুলিশ কাস্টডি থেকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

সোহেল তাজ লাইভে সবাইকে ধন্যবাদ জানান। পুলিশ ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘সৌরভকে পাওয়া গেছে। ও আমাদের কাছে ফিরে আসছে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে আমরা অন্তত একটা মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি। আমরা আশা করব, এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে। আমি আশা করব, যারা মা বাবার কাছে নেই, তারা যেন ফিরে আসে।’ তিনি সবাইকে ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানান।

 

এর আগে সৌরভ নিখোঁজের ঘটনায় বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় ফেসবুক লাইভে এসে সোহেল তাজ বলেছিলেন, তার মামাতো বোনের ছেলে সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভের নিখোঁজের ঘটনায় সূত্রগুলো সম্পূর্ণ অবহেলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, গণমাধ্যম এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণের বিবরণ দেয়ার পরও কেন বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়নি? কেন পরিবারের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে না?

সোহেল তাজ বলেন, আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম। সুতরাং এ ধরনের ঘটনা কীভাবে তদন্ত করতে হয় এ সম্পর্কে ওয়াকিফহাল। এ ধরনের ঘটনায় সাধারণত দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক. অপহৃতকে জীবত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করার অভিযান। দুই. পরিবার যে অভিযোগগুলো করেছে তা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা।

তিনি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগের বিবরণ দেয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমরা বলেছি, ফেব্রুয়ারি মাসের ১২ তারিখে বনানী থানায় সৌরভকে ডেকে পাঠানো হয়। ১৬ মে মোবাইল ট্র্যাকার দিয়ে সবার সামনে বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। সর্বশেষ তাকে চট্টগ্রামে দেখা যায়। আমার প্রশ্ন হলো ওই থানায় বা যারা সৌরভকে আটক করে নিয়ে গেল তাদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে বা পুলিশি তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে সেই জায়গাগুলোয় কি আপনারা তদন্ত করেছেন? কেন বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়নি? যারা দেশপ্রেমিক পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন তারা কেন এই প্রশ্নটা করছেন না?

তার আগে গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি নিজেই তদন্তের এ ঘোষণা দেন।  

তিনি বলেন, আমার মামাতো বোনের ছেলে সৌরভ গত ৯ দিন ধরে নিখোঁজ। সৌরভকে অক্ষত অবস্থায় সুস্থভাবে ফেরত পাওয়ার জন্য আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি। সৌরভ সুস্থ শরীরে ফিরে আসবে এজন্য আমরা সবাই অপেক্ষা করছি। 

তিনি বলেন, দেশের কল্যাণে আমি কিছু উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ করেছি। এরইমধ্যে আমার ভাগ্নে নিখোঁজ হলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে আমরা সৌরভকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি এবং আমি নিজে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক সাড়া ফেলে। প্রচুর ভিউয়ার তার এই ফেসবুক লাইভে কমেন্ট ও শেয়ার দিয়েছেন। অনেকেই এই ঘটনায় নিন্দা, প্রতিবাদ ও সহমর্মিতা জানান। তারা সোহেল তাজের ভাগ্নেকে অবিলম্বে খুঁজে বের করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।

প্রসঙ্গত, গত ৯ জুন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন আফমি প্লাজার সামনে থেকে সৌরভকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। সৌরভের পরিবার চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার সুন্নিয়া মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় পরদিন ১০ জুন পাঁচলাইশ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন সৌরভের বাবা। 

আরআই