• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০১৯, ০৮:৫১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৮, ২০১৯, ০৮:৫৫ এএম

‘গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আদালত এবং সংসদকে অবমাননা’

‘গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আদালত এবং সংসদকে অবমাননা’
সাবেক মন্ত্রী ও ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন- ছবি: সংগৃহীত

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আদালত এবং সংসদকে অবমাননা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মন্ত্রী ও ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, এনার্জি রেগুলেটারি কমিশন-বিইআরসি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করার মধ্য দিয়ে কোর্টকে, সংসদকে, সর্বোপরি জনগণকে অবমাননা করেছে।

রোববার (৭ জুলাই) রাতে সংসদ পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে একথা বলেন তিনি। এসময় ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশন চলছিল। এ নিয়ে তিনি সংসদে ৬৮বিধিতে একটি নোটিশ স্পিকারকে দিয়েছেন। নোটিশটি গ্রহণ করলে ওই নোটিশে সমর্থনকারী হাসানুল হক ইনু, মঈনুদ্দিন খান বাদল, মোস্তফা লুৎফুল্লাহসহ অন্যান্যরা বিশদ আলোচনা করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার।

মেনন বলেন, বাজেট অধিবেশনের সমাপ্তির পর পরই এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গ্যাসের মূল্য ৩২ দশমিক ৮ ভাগ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রভাবে গৃহস্থালীতে যেমন, শিল্প পরিবহনে, অর্থনীতির সামগ্রিক সবক্ষেত্রে একটা প্রতিক্রিয়া হবে। যেটা কৃষিমন্ত্রী স্বীকারও করেছেন। তিনি (কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক) বলেছেন জনগণের প্রতিক্রিয়া আছে। জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা আছে। আমি নিজেও হতাশ।

তিনি বলেন, বাজেট বক্তৃতায় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সাফল্যের প্রশংসা করে বলেছিলাম গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে আলোচনা করুন। যাতে সকল সংসদ সদস্য অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু দেখলাম বাজেট অনুমোদনের চার ঘণ্টার মাথায় বিইআরসি এই ঘোষণা দিয়ে দিলেন, এটা সংসদের চরম অবমাননা। সংসদকে এড়িয়ে যাওয়া।

মেনন বলেন, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম মোর্চা অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছিল, বিএনপি তাতে সমর্থন দিয়েছিল কিন্তু তারা মাঠে নামেনি। হরতাল হয়েছে কি, হয় নাই, অথবা কতটুক হয়েছে। হরতালের দিন আগের দিনের চাইতে যানজট বেশি ছিল এই সমস্ত কূটতর্ক নিয়ে কথা বলে লাভ নেই। বিষয়টির গভীরতা অনুভব করে আলোচনা করা উচিত। বলা হয়েছে মূল্য সমন্বয় করার জন্য এবং ভর্তুকি কমানোর জন্য এই ব্যবস্থা নিয়েছেন।

তিনি বলেন, এলএনজির মূল্য সমন্বয়ের কথা বলা হচ্ছে। ভারত যেখানে এলএনজির আমদানি মূল্য সাড়ে ৬ ডলার প্রতি হাজার সিএফটিতে। আমাদের দেশ আমদানি করেছে সাড়ে ১০ ডলার দিয়ে, পাকিস্তানও সাড়ে ১০ ডলার। আমাদের দেশে হুইলিং চার্জিং চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে গ্যাস শহরের মানুষ ব্যবহার করে। গ্রামের মানুষ এলপিজি ব্যবহার করে। ইতোমধ্যে এলজিপির মূল্য প্রায় ৩২ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মূল্য সমন্বয়ের কারণে এলপিজির মূল্য ৭১ শতাংশ বেড়ে গেছে। যখন সিএনজি বন্ধ করে দেয়া হবে, তখন সমস্ত সিএনজি স্টেশনগুলো এলপিজিতে রূপান্তরিত হবে। আসলে এলজিপির বাজার ঠিক করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কিনা? সেটাও আলোচনা বিষয়।

তিনি বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে—বিষয়টিকে অবহিত করে সংসদে আলোচনার দাবি করেন। সিদ্ধান্ত সরকার নেবে কোনো সন্দেহ নেই, জনগণের কথা শোনার দায়িত্বও সরকারের। বিইআরসি গণশুনানি নিয়ে মামলা হয়েছে সেই মামলার রুল হয়েছে। সেটার বাইরে গিয়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেটা অবৈধ বেআইনী, কোর্টকে অবমাননা করা। তারা (বিইআরসি) সংসদকে অবমাননা করছেন, কোর্টকে অবমাননা করছেন এবং সর্বোপরি জনগণকে অবমাননা করছেন।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজেটে পেশের পর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কর ভার এমন করা হবে না যাতে জনগণ কষ্ট পায়। আজকে আপনি (ডেপুটি স্পিকার) আমি সবাই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির কী কষ্ট সেটা পাচ্ছি। এজন্য ৬৮বিধিতে নোটিশ দিয়েছি। এসময় ডেপুটি স্পিকার বলেন, নোটিশটি স্পিকারের বিচেনাধীন রয়েছে। তাই নোটিশ গ্রহণের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিমন্ত্রীর বিবৃতি দিতে চাচ্ছি না। যদি স্পিকার গ্রহণ করেন তাহলে তো বিশদ আলোচনা করার সুযোগ পাবেন।

এইচএস/টিএফ

আরও পড়ুন