• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০১৯, ০৯:৫০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৯, ২০১৯, ০৯:৫২ এএম

খালেদার মুক্তি-নতুন নির্বাচনের দাবিতে

প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি

প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি


জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, সুচিকিৎসা এবং দেশে নতুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের মাঠে নামছে বিএনপি। আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে চলতি মাস থেকেই সমাবেশ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দলটি। এরই মধ্যে রাজশাহী, বরিশাল, চট্টগ্রামের সমাবেশের দিনক্ষণ নির্ধারণ হয়েছে। এসব সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা অংশ নেবেন। এছাড়াও এসব সমাবেশে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশদলীয় জোটের বাইরে থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েকজন নেতা অংশ নিতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরের প্রাণকেন্দ্রে সমাবেশ করব। আশাকরি আগামী ঈদুল আজহার আগেই এসব সমাবেশ হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিভাগে সমাবেশের তারিখও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

গত শুক্রবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ ও রংপুর ৮ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে এক্ষেত্রে বিভাগীয় স্থানীয় নেতারা তাদের সুবিধা অনুযায়ী সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করবেন বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, আমরা আশা করছি এ সমাবেশের মধ্য দিয়েই ঝিমিয়ে পড়া তৃণমূল নেতাকর্মীরা আবার চাঙ্গা হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে চাপে রাখতে চান তারা। পাশাপাশি আইনি লড়াইও চালিয়ে যাবেন। সরকার হস্তক্ষেপ না করলে শিগগিরই খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।

বিএনপি সূত্র জানায়, চলতি জুলাই মাসেই চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী এবং বরিশাল বিভাগেও সমাবেশ করার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওই সব অঞ্চলের নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতারা এসব প্রস্তুতির সার্বিক তদারকি করছেন। প্রতিটি বিভাগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তার অধীন জেলা ও মহানগর নেতাদের নিয়ে ইতোমধ্যেই এসব সমাবেশ সফলে বৈঠক করছেন। প্রস্তুতির সার্বিক তদারকি করছেন। চলতি মাসের পর বাকি বিভাগের সমাবেশও ঈদুল আজহার আগেই শেষ হবে বলে বিএনপি সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘মাডামের (খালেদা জিয়া) নিঃশর্ত মুক্তি ও দেশে দ্রুত নতুন সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা (বিএনপি) প্রতিটি বিভাগে সমাবেশ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আমার বিভাগ রাজশাহীতে এ সমাবেশ হবে সম্ভবত চলতি মাসের ৩০ অথবা ৩১ তারিখে।

দুলু জানান, রাজশাহী শহরের ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানে এ সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির ও দলের অন্য সিনিয়র নেতারা অংশ নেবেন।

বিএনপি সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৫ জুলাই খুলনাতে সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ঢাকায় মহাসমাবেশ হবে সবার পর।  রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই মহাসমাবেশের টার্গেট নিয়েছে বিএনপি।

বিএনপির সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন দৈনিক জাগরণকে বলেন, আমাদের সিলেটের সমাবেশের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কারণ হিসেবে হয়ত আপনারা জানেন যে, আমরা সিলেট জেলা বিএনপির কমিটি শিগগির ঘোষণা করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে নতুন কমিটির নেতৃত্বে যারা আসবেন তাদের নিয়েই এ সমাবেশের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিতে হবে। খুব বেশি হলে সপ্তাহ দশদিনের মধ্যে সিলেট বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে। কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার কমিটি দেয়া হয়েছে। তাই নতুন কমিটি আসলেই সিলেটের সমাবেশের সকল প্রস্তুতি নেয়া হবে।

ডা. জীবন আরও বলেন, তবে আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই যে সিলেটের সমাবেশ হবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়। 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর দল পুনর্গঠনের কাজে মনোযোগ দেয় বিএনপি। যে কারণে গত ছয় মাসে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি দেয়নি দলটি। কেন্দ্রীয়ভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে শুধু মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে বড় ধরনের কর্মসূচি না দেয়ায় এ নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাশেম বকর দৈনিক জাগরণকে বলেন, ২০ জুলাই আমরা ম্যাডামের মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে সমাবেশ করব। ইতোমধ্যে লালদীঘির ময়দানের অনুমতি চেয়ে আমরা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। আশা করি অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসন কোনো টালবাহানা করবে না। তবে, সেখানে অনুমতি না পেলে জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর অথবা কাজীর দেওড়ির মোড়ে সমাবেশ করব। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, খুলনাতে আমরা ২৫ জুলাই সমাবেশ করব। ইতোমধ্যে নগরের হাদিস পার্ক, সোনালী ব্যাংক চত্বর ও শিববাড়ীর মোড়- এই তিনটি ভেন্যুর যে কোনো একটি চেয়ে প্রশাসনের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা, নতুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এই সমাবেশ হবে।

ঢাকা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, সব শেষে ঢাকা বিভাগীয় শহরে মহাসমাবেশ হবে। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা এ মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

টিএস/আরআই

আরও পড়ুন