• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০১৯, ০৯:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৪, ২০১৯, ০৯:৫৫ পিএম

রায়ের আগেই জীবনাবসান

মঞ্জুর হত্যায়ও জড়িত এরশাদ! 

মঞ্জুর হত্যায়ও জড়িত এরশাদ! 
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুর

শেষ হয়েও হলো না সাবেক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুর হত্যা মামলার বিচার। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণও ছিল মামলাটি। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘসূত্রতায় ফেলতে মামলাটি বিচারিক প্রক্রিয়ায় আবার পেছানোও হয়েছিল।

সর্বশেষ মামলার আসামি ও সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর কারণে তিনি মঞ্জুর হত্যায় জড়িত কি না এ প্রশ্নের জবাব না-ও মিলতে পারে বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই মামলার অন্যান্য জীবিত আসামি থাকায় মামলা চললেও এরশাদ মারা যাওয়ায় তার বিচার হওয়ার কথা নয়। তাই তিনি মঞ্জুর হত্যায় জড়িত কি না, তা আদালতের রায়ে মীমাংসা হবে না বলেই মনে করছেন তারা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঞ্জুর হত্যা মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৬ আগস্ট দিন ধার্য করেছে আদালত। গত ২৭ জুন মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহ্হার আকন্দ সময় আবেদন করায় ঢাকার ১ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শরীফ এ এম রেজা জাকের নতুন এ দিন ধার্য করেন।

২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সিআইডিকে অধিকতর তদন্ত করে ২২ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালতটির তৎকালীন বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ।

এ মামলার আসামিরা হলেন-  সদ্যপ্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক ও লে. কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১৯৮১ সালের ১ জুন মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর জেনারেল মঞ্জুরের বড় ভাই ব্যারিস্টার আবুল মনসুর আহমেদ বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

১৯৯৫ সালের ১৫ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ। এর আগে ১ মার্চ আসামি এমদাদুল হক, ১২ মার্চ মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ও শামসুর রহমান এবং ১৮ জুন মোস্তফা কামালকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ১১ জুন কারাগারে থাকা এরশাদকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলা দায়েরের ১৯ বছর পর মামলাটি শেষপর্যায়ে পৌঁছলেও বিচারক বদলি হওয়ায় তা আবার পিছিয়ে যায়।

২০১৪ সালের ২২ জানুয়ারি এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক হোসনে আরা আকতার ওই বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু রায়ের মাত্র ১৩ দিন আগে ২৯ জানুয়ারি তিনি পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটির বিচারের দায়িত্ব পান দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা জজ হাসান মাহমুদ ফিরোজ। এর আগে গত ১৯ বছরে বিভিন্ন সময়ে ২২ জন বিচারক এ মামলাটিতে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আইন ও রাজনীতি অঙ্গনে জোর সমালোচনা আছে যে, রাজনৈতিক কারণে মামলাটিকে দীর্ঘসূত্রতায় ফেলতেই এতবার বিচারক বদল করা হয়েছিল।

মঞ্জুর হত্যা মামলায় মোট ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ২০১২ সালের ২ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এরশাদ। এর সমর্থনে আদালতে লিখিত বক্তব্যও দেন তিনি। এ মামলার আসামিরা বর্তমানে সবাই জামিনে রয়েছেন।

এমএ/এফসি

আরও পড়ুন