• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০১৯, ০৬:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩০, ২০১৯, ০৬:০৪ পিএম

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে দ্রুত রেললাইন মেরামতের দাবি

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে দ্রুত রেললাইন মেরামতের দাবি
‘রেললাইনের দুরবস্থা ও রেল দুর্ঘটনা, বন্যা পরবর্তী নিরাপদ ঈদ যাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা - ছবি : জাগরণ

বন্যা পরবর্তী ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে দ্রুত রেল লাইন মেরামত করার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) পবা ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে পবার সেমিনার কক্ষে ‘রেললাইনের দুরবস্থা ও রেল দুর্ঘটনা, বন্যা পরবর্তী নিরাপদ ঈদ যাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবি করেন।  

আলোচনায় বলা হয়, সারাদেশে মানসম্পন্ন রেললাইন রয়েছে মাত্র ৭৩৯ কিলোমিটার বা ২৫.২৩ শতাংশ। বছরের পর বছর এ সেতুগুলো সংস্কার না করার কারণে এর মধ্যে ৪০২টি রেল সেতুগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এর ফলে যাত্রী দুর্ভোগের পাশাপাশি রেলওয়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়, ট্রেন উদ্ধার ও মেরামত এবং লাইন মেরামতে অর্থ ব্যয় হচ্ছে। ঈদে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনগুলোয় ট্রেন চলাচলে রেলওয়ের সাবেক অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে করণীয় নির্ধারণ করা এবং অভিজ্ঞ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান দ্বারা দ্রুত মেরামতের কাজ সম্পন্ন করে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার পাশাপাশি মেরামতের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে তদারকি করতে হবে। 

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. অতিকুর রহমান। তিনি বলেন, রেললাইনের পাথর স্বল্পতা, নড়বড়ে ট্র্যাক, রেললাইনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাব ও আধুনিক মেশিনারিজের অভাবে রেললাইনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিবছর ৫ লাখ ৫৬ হাজার ঘনফুট ক্রাশড স্টোনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু পাওয়া যায় মাত্র ১ লাখ ঘনফুট পাথর। বছরে ৫ লাখের বেশি ক্লিপ চুরি বা ভেঙে গেলেও পাওয়া যায় সোয়া ২ লাখ। বাংলাদেশ রেলওয়ে ইতিমধ্যে ১১৩৫.২৩ কিমি রেলপথ পুনর্বাসন, ২৯৫টি রেল সেতু পুনর্বসান কাজ সম্পন্ন করলেও তাতে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন হয়নি। রেললাইন সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণে আধুনিক মেশিন এবং সেই অনুযায়ী লোকবল ও ওয়ার্কশপ প্রয়োজন।

আলোজনায় ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, রেলের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠিত হয়েছে ঠিকই, তবে এখনও রেলে অনেক সংকট ও রেলকে পিছিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দুর্নীতি ও জবাবদিহিতার অভাব রেলকে ভয়াবহ সংকটে ফেলে দেবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেলকে কেন্দ্র করে বহুমাধ্যমভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রীয় সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সরকার তথা জনগণের একটি শক্তিশালী যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। 

পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, রেলপথ পরিদর্শক বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা এবং নিয়মিত রেললাইন ট্রলি করা ও রিপোর্ট প্রকাশ করা এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। রেললাইনে ব্যবহৃত পাথরের মান যাচাই করে মানসম্মত পাথর ব্যবহার করতে হবে। বর্তমানে রেলসেতুগুলোয় কী ধরনের ভারি মেরামতের প্রয়োজন রয়েছে তা নিরূপন করে পর্যায়ক্রমে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।
 
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণে দক্ষ লোকবলের অধীনে নতুন লোক নিয়োগ করে জনবল সংকট দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে পবার সভাপতি আবু নাসের খান বলেন, রেলওয়ের আজকের যে করুণ পরিণতি তা একদিনে হয়নি। দাতা সংস্থা এবং স্বার্থন্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার রেল। 

পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন মো. মুসা, অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, হীলের জেবুন নেসা এবং ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জীবন কুমার সরকার প্রমুখ।

টিএস/ এফসি

আরও পড়ুন