• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০১৯, ০২:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২, ২০১৯, ০২:০৭ পিএম

‘ডেঙ্গু আক্রান্ত গরিব মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে হবে’

‘ডেঙ্গু আক্রান্ত গরিব মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে হবে’

ডেঙ্গু আক্রান্ত গরিব মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত গরিব মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে হবে। দুই মেয়রকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে হবে এবং সাধারণ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো যেভাবে এগিয়ে এসেছে তাদেরকে শত্রু মনে করে দমন না করে তাদেরকে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ডেঙ্গু আক্রান্তদের ফ্রি টেস্ট ও চিকিৎসা এবং বনার্ত  এলাকার সকল ঋণ মওকুফ ও সুদবিহীন নতুন ঋণ প্রদানের দাবিতে এ মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদ নামক এক সংগঠন এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমাদের রাজনীতির মূল বিষয় হচ্ছে আত্ম মানুষের পাশে থাকা, অসহায় মানুষের পাশে থাকা এবং নির্যাতিত মানুষকে সহায়তা করা। আপনারা দেখেছেন প্রথম থেকেই অর্থমন্ত্রী শুরুতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় জাতীয় বাজেট পেশ করতে পারেননি। অর্থমন্ত্রী পরবর্তীতে অনেকবার বলেছেন, আমি অফিসে যাই না ডেঙ্গু মশার ভয়ে। নাসিম সাহেব বলেছেন দুই মেয়র ব্যর্থ। মোহাম্মদ নাসিম গত কালকেও আবার বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতারা ফিল্মি স্টাইলে রাজধানীর প্রধান সড়কে ওষুধ ছড়ালে তাতে কাজ হবে না। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যেতে হবে। একইসাথে তাদের ব্যর্থতা এবং এই নকল মশার ওষুধ এক মেয়র স্বীকার করেন আরেক মেয়র স্বীকার করেন না। এই সমন্বয়হীনতার মধ্য দিয়ে দেশে আবার নতুন করে একটি মহামারী আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ ইমামের কড়া সমালোচনা করে আলাল বলেন,'অবশেষে ডেঙ্গু মধ্যে আরও চিনি ঘি ইত্যাদি দিয়ে ভালো করে পাকিয়ে দিয়েছেন এইচটি ইমাম সাহেব। তিনি গতকাল বলেছেন যে ঈদের সময় যারা বাড়িতে যাবেন যাবার আগে ঢাকায় রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিয়েন। নাহলে কিন্তু এই জীবানু কিন্তু গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে যাবে।তিনি চমৎকার একটি কাজ করেছেন। যে আতঙ্কটা মূলত রাজধানীতে বেশি ছিলো সেই আতঙ্কটাকে এইচটি ইমাম সাহেব প্রধানমন্ত্রীর রেফারেন্সে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিলেন। এটাই দায়িত্বহীনতার নমুনা।

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, কিছু দিন আগে আমাদের জাতীয় দুর্যোগ ফণী যখন এসেছিল তখন আওয়ামী লীগের নেতা মোহাম্মদ হানিফ বলেছেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর অগ্রিম সতর্কবার্তা পাওয়ার কারণে ফণী মোকাবিলা করতে পেরেছি। কত বড় অপদার্থ হলে ওয়েদার স্যাটেলাইট কোনটা আর মূল স্যাটেলাইট কোনটা এইটা বুঝেনা এই হলো আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈশিষ্ট্য। তখন একটি টেলিভিশন প্রচার করলো যে ছাত্রলীগ প্রস্তুত থাকার কারণে ঘূর্ণিঝড় ফণী শক্তিশালী হতে পারেনি। এই হলো হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র তোষামোদকারীদের দেশে আমরা বসবাস করছি। 

তিনি বলেন, সরকারের সমালোচনা মানে সরকারের শত্রুতা নয়। সরকারের সমালোচনা মানি সরকারের ভুল ধরিয়ে দেয়া। সরকারের  সমালোচনা করার মানে দায়িত্বশীলরা যেনো ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সেই কাজে সহায়তা করা। বিএনপি তার প্রমাণ রেখেছে, আমরা বানভাসি মানুষদের কাছে ১৫ টি টিম করে সেখানে গিয়েছি। দিনের পর দিন সেখানে থেকেছি। আমাদের মেডিকেল টিম এখনো সেখানে রয়েছে। 

আলাল বলেন, আমরা এই ডেঙ্গু মশার প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য গণ সচেতনতা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। লক্ষ লক্ষ লিফলেট আমরা ছাপিয়েছি সারাদেশে বিতরণের জন্য। ড্যাবের নেতৃত্বে মেডিকেল টিম হয়েছে। আপনারা দেখছেন গতকালও প্রশাসন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির  সচেতনতা মূলক র‌্যালির অনুমোদন দেয়নি। আমরা বলবো অনতিবিলম্বে বাংলাদেশের দল মত নির্বিশেষে সমস্ত চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ এবং জনগণের কল্যাণে যারা কাজ করছে সে সকল মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার করা হোক। যেখান থেকে ডেঙ্গু রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হবে। 

সরকারকে উদ্দেশ করে আলাল বলেন, ৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছেন। যে টাকা দিয়ে  ১৮ টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যায়। ডেঙ্গু আক্রান্ত গরিব মানুষদের চিকিৎসা কেন বিনামূল্যে করতে দিবেন না? ঋণখেলাপিদের শেয়ার মার্কেট  ছেড়ে দিয়েছেন, ঋণখেলাপিদের  ব্যাংক ছেড়ে দিয়েছেন, লুটপাটের স্বর্গ  রাজ্য করে দিয়েছেন। তাহলে কেনো কৃষকের ঋণ মওকুফ করবেন না? 

আয়োজক সংগঠনের ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুল আলমের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের মহাসচিব আ স ম মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ,অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা,তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ড.কাজী মনিরুজ্জামান মনির,কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

 টিএস/টিএফ
 

আরও পড়ুন