• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০১৯, ০৮:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৯, ২০১৯, ০৮:০৯ পিএম

টিআইবি রিপোর্ট একপেশে, উদ্দেশ্যমূলক : তথ্যমন্ত্রী

টিআইবি রিপোর্ট একপেশে, উদ্দেশ্যমূলক : তথ্যমন্ত্রী
বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ -ছবি : জাগরণ

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দশম সংসদের কার্যক্রমের ওপর টিআইবি প্রকাশিত রিপোর্ট একপেশে এবং উদ্দেশ্যমূলক। যে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে সেখানে অনেক ভুল রয়েছে। অতীতেও টিআইবি এ ধরনের ভ্রান্ত রিপোর্ট করেছে। সে জন্য তাদের উচিত ছিল জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া। আমরা সমালোচনা চাই।সমালোচনা পথচলাকে শাণিত করে। তবে একপেশে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে অহেতুক প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কোনও সমালোচনা কাম্য নয়।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তৃণমূল বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি-তৃণমূল বিএনপি আয়োজিত জাতির পিতার ৪৪তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তৃণমূল বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি-তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা উপস্থিত ছিলেন।

ড. হাছান বলেন, অতীতেও দেখেছি পদ্মাসেতু নিয়ে যখন অমূলক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তখন টিআইবি বিশ্বব্যাংকের চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। অথচ বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টই ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে, সে অভিযোগের কোনও সত্যতা নাই। এরপর টিআইবির উচিত ছিল জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালে সুন্দরবনে অনিয়ম নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল। কেউ যদি তাদের রিপোর্টের প্রাথমিক বিষয়গুলো পড়ে, মনে হবে অনিয়মগুলো ২০১০ কি ২০০৯ সালে হয়েছিল। কিন্তু আসলে অনিয়মগুলো ২০০৭ এবং ২০০৮-এ ঘটা, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না, ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারা যে কয়েক বছর পুরনো রিপোর্ট করছেন, তাদের উচিত ছিল প্রথমেই সেটি পরিষ্কার করা। 

দশম পার্লামেন্টের স্পিকার বিশ্বের সমস্ত দেশগুলোর ভোটে আন্তর্জাতিক পার্লামেন্টের অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন, দশম পার্লামেন্টের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন-আইপিইউ এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন- এই তথ্যগুলোও টিআইবি’র একপেশে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্টে নাই’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি টিআইবিকে অনুরোধ জানাবো, সঠিক তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে যেন রিপোর্ট তৈরি করা হয় এবং গণতান্ত্রিক দেশকে এইভাবে অমূলক প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা না করতে। এটি গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক নয়।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বিএনপি’র বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নানা কথাবার্তা বলেছেন। তাদের কথায় প্রতীয়মান হয়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন তাদের উদ্দেশ্য নয়, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে জলঘোলা করা। আমি বিএনপি মহাসচিবকে বলবো, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে সরকার সঠিক পথে এগুচ্ছে, সে লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মহলকে সম্পৃক্ত করেছে। কিন্তু কিছু এনজিও ও একইসাথে বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মী যারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে খেলতে চায় তাদের কারণেই এবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। অচিরেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে। 

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান এ সময় বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎবার্ষিকী পালন করায় ‘তৃণমুল বিএনপি’কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আশা করি তৃণমূল বিএনপির কাছ থেকে বিএনপি কিছু শিখবে। একইসাথে তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী কর্ণেল ফারুক-রশিদ টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জিয়াউর রহমান তখন উপ-প্রধান সেনাপ্রতি। বঙ্গবন্ধুহত্যার পরিকল্পনা নিয়ে তার কাছে গেলে তিনি বলেন, ‘তোমরা কর, আমি সিনিয়র অফিসার হিসেবে সামনা-সামনি থাকতে পারি না।’ আবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সেনাবাহিনী অফিসাররা জিয়াউর রহমানের কাছে গেলে তিনি তাদের বলেন, ‘সো হোয়াট! ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার!’ রাষ্ট্রের উপ-প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রপতিকে হত্যার করার পরিকল্পনা যখন তিনি অবগত হন সেটি দ্রুতগতিতে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা। তিনি সেটা করেননি এবং রাষ্ট্রপতি নিহত হয়েছেন, সেটিও দ্রুত ঊর্ধ্বতনদের জানানো ও যারা এ অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যা তিনি করেননি। আর তাতেই প্রমাণিত হয় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের একজন জিয়াউর রহমান।

এমএএম/এসএমএম

আরও পড়ুন