• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ০৮:১৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ০৮:১৫ পিএম

কাউন্সিলরদের মধ্যে কার্ড বিতরণ

নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছাত্রদল

নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছাত্রদল
নির্বাচন সরাসরি তত্ত্বাবধান করবেন তারেক রহমান

দীর্ঘ ২৭ বছর পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দলের অন্যতম সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার কাউন্সিল ও ভোটের মাধ্যমে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবে। লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপির মাধ্যমে ভোটগ্রহণের শুরু থেকে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা সরাসরি তত্ত্বাবধান করবেন।  

ছাত্রদলের কাউন্সিল সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে রিটার্নিং অফিসারসহ ৬ কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে ফজলুল হক মিলনকে রিটার্নিং অফিসার, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে সহকারি রিটানিং অফিসার, আজিজুল বারী হেলাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শফিউল বারী বাবু ও সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুকে কাউন্সিল-২০১৯ এর পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে এবিএম মোশাররফ হোসেন ছাড়া বাকি সবাই একসময়ে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান খায়রুল কবির খোকন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

খায়রুল কবির খোকন জানান, এই কাউন্সিল পর্যবেক্ষণের জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নির্বাচন যেন স্বচ্ছ, বিতর্কের ঊর্ধ্বে, কোনো কারণে যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেজন্য সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ থাকবে যদি কোনো ধরনের সংশয় থাকে, প্রশ্ন থাকে- সে বিষয়ে আপনারা আমাদের জানাবেন। ভোটগ্রহণের পর ভোটগণনা শেষে সেদিনই গণমাধ্যমের সামনে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

তিনি জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। ভোটগ্রহণের স্থান আগামীকাল (শুক্রবার) জানানো হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদলের কাউন্সিলরদের মধ্যে কার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রার্থীদের পক্ষে নেতা-কর্মী-সমর্থকরা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে জীবনী ও অঙ্গীকার সম্বলিত লিফলেট নিয়ে সমবেত হয়। তারা প্রার্থীদের পক্ষে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্লোগান দেয়।

খায়রুল কবির খোকন বলেন, আমরা চাই ছাত্ররাই তাদের ভোটের মধ্য দিয়ে নেতা নির্বাচন করবেন। সেখানে কোনো ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ সিলেকশন হবে না। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই উদ্যোগ নিয়েছেন এবং তিনি প্রত্যক্ষভাবে আমাদের এই দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন যে, ছাত্রদলকে এবার ঢেলে সাজাতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্রদলের যে গৌরবোজ্জ্বল অতীত ইতিহাস, দীর্ঘ ৯ বছর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে করে এরশাদের পতন ঘটিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করেছিলাম, সেই ঐতিহ্য নিয়ে ছাত্ররা কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করবে বলে আমরা আশা করছি। প্রতিকুল রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে দীর্ঘদিন ছাত্রদল কাউন্সিল করতে পারেনি।

তিনি বলেন, আমরা একটা দৃষ্টান্ত করতে চাই, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি করতে চাই। নিয়মিত ছাত্র, অবিবাহিত তারাই শুধু ছাত্র নেতৃত্বে আসবে। সেখানে অছাত্র, ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী তারা ছাত্র রাজনীতি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের যে প্রক্রিয়া চলে আসছে ‘ওভার নাইট’ হয়তবা আমরা সফল হবো না। তবে ভুল-ত্রুটি, ছোট-খাটো বিচ্যুতি সংশোধন করে পর্যায়ক্রমে আমরা সফল হব ইনশাল্লাহ।’

এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান বলেন, আমাদের প্রতিশ্রুতি যে আমরা কোনো অবস্থায় প্রভাবিত হবো। সেখানে কোনো সিন্ডিকেট কাজ করবে না, লাইকিং-ডিজলাইকিং কোনো কাজ করবে না। সবাই আমরা সাবেক ছাত্রদল নেতা নিরপেক্ষভাবে এই কাউন্সিল সম্পন্ন করব। ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাররা ভোট দেবেন।

কাউন্সিলের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হবে। সভাপতি পদে ৯ জন এবং সাধারণ সম্পাদক ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণে ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা দৈনিক জাগরণকে জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সরাসরি নির্দেশনায় ছাত্রদলের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে কোনোরকম অনৈতিক হস্তক্ষেপ, প্রভাব বিস্তার বা ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই।

তারা জানান, ভোটের দিন প্রথম থেকেই তারেক রহমান লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে ভোট তদারকি করবেন। ব্যালট বাক্স বসানোর সময় থেকে তিনি স্কাইপিতে দেখে নেবেন। ভোটের বুথ রুম স্কাইপির আওতায় থাকবে। বুথ কক্ষে কে কী করছেন, কে ভোট দিচ্ছেন, বৈধ ভোটার তালিকায় তার নাম আছে কি না- সব কিছু তিনি যাচাই-বাছাই করবেন। তিনি সব খেয়াল রাখবেন। শুধু ব্যালটে সিল দেয়ার স্থানটি পর্দা দিয়ে ঘেরা থাকবে। তাই ভোট হবে অত্যন্ত সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ।

নির্বাচন পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতা দৈনিক জাগরণকে বলেন, ছাত্রদলের এবারের নির্বাচনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন মোট ৫৩৩ জন কাউন্সিলর। নির্বাচনের জন্য যে কয়জন কাউন্সিলর- ঠিক সেই কয়টি ব্যালটই ছাপানো হয়েছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হচ্ছে- কোন প্রেসে এ ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে বা হয়েছে, তা বিএনপির নেতাকর্মীরা জানেন না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার নিজস্ব বিশ্বস্ত কয়েকজনকে দিয়ে অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যদিয়ে এ ব্যালট পেপার ছাপানোর ব্যবস্থা নিয়েছেন। একটি বাড়তি ব্যালট পেপারও ছাপানোর কোনো সুযোগ নেই।  

আরেক নেতা বলেন, নির্বাচন শতভাগ স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন নিয়ে অনেকেই অনেক ধরনের প্রপাগান্ডা ছড়ানোর অপচেষ্টা করছেন। এটা নিছকই অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু নয়।

টিএস/ এফসি

আরও পড়ুন