• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৯:০৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৯:০৪ এএম

জাবিতে কোটি টাকা লেনদেনের রাব্বানী ও সাদ্দামের অডিও ফাঁস

জাবিতে কোটি টাকা লেনদেনের রাব্বানী ও সাদ্দামের অডিও ফাঁস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে চলমান আন্দোলনের মধ্যে সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও জাবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের মোবাইল কথোপকথন ফাঁস হয়েছে।
গোলাম রাব্বানী ও সাদ্দাম হোসাইনে কথপোকথনটি হুবহু প্রকাশ করা হলো-

গোলাম রাব্বানী : হ্যাঁ, অন্তর, কোথায় আছো, টাকা নেয়ার সময় ছিল কে কে?
হামজা রহমান অন্তর : জুয়েল ভাই, চঞ্চল ভাই ও সাদ্দাম ভাই ছিল আরকি।
গোলাম রাব্বানী : টাকাটা দিছে কোথায়?
অন্তর : ভাই, ম্যামের বাসায়। সাদ্দাম ভাইয়ের সাথে একটু কথা বলেন। আমার পাশেই আছে।
গোলাম রাব্বানী : আচ্ছা দাও দাও।
সাদ্দাম হোসাইন : ভাই আসসালামু আলাইকুম।
গোলাম রাব্বানী : ওয়ালাইকুম সালাম, সাদ্দাম কি খবর ভাই।
সাদ্দাম হোসাইন : ভাই খবর তো আপনাকে জানাইছি ভাই। খবর তো ভালো না বেশি একটা। আমি আপনাকে বলছিলাম না ভাই, আমি তাজ, জুয়েল চঞ্চল আমরা চারজন ছিলাম ওই মিটিংয়ের সময়। আজকে কিছুক্ষণ আগে জাহাঙ্গীরনগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রেস রিলিজ দিছে আপনাদের বিপক্ষে।
গোলাম রাব্বানী : সেটা তো দেখলাম।
সাদ্দাম হোসাইন : বিষয়টা হচ্ছে ভাই, বামের সাথে সেটিংয়ে গেছে। বৈঠক হইছে বামের সাথে। তারপর বৈঠকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত বাদে বাকিগুলা বামের সাথে মেনে নিছে। আর বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যাপারে মানবে কিনা আগামী বুধবার পর্যন্ত ভাই তিনদিন সময় দিছে।

গোলাম রাব্বানী : আন্দোলন নিয়া?
সাদ্দাম হোসাইন : হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ।
গোলাম রব্বানী : ম্যাম তো বলছে যে আন্দোলনও নাকি আমরা করাচ্ছি। সামথিং লাইক ওরকম কিছু। আন্দোলন কারা করতেছে ওটাও তো আমরা জানি না। এটা তো আমরা জানি না।
সাদ্দাম হোসাইন : ভাই বিষয়টা হচ্ছে উনি ছাত্রলীগের ওপর দিয়ে সবকিছু করে নিজের ফ্যামিলিকে সেফ করতে চাচ্ছে আরকি। উনি বাঁচতে চাচ্ছেন। আর প্রধানমন্ত্রীর রেফারেন্স দিয়ে অনেকগুলা কথা বলছে আপনার বিপক্ষে, মানে সেন্ট্রাল ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। যুগান্তরে ভাই, নিউজটা কি দেখছেন...

গোলাম রাব্বানী : ওটা দেখছি, আচ্ছা টাকা যখন দিছিলো তখন তুই ছিলি না।
সাদ্দাম হোসাইন : ছিলাম ভাই আমি আর তাজ ছিলাম। এখন আপনি ভাই বলেন কি করতে হবে, আমরা করতেছি। সমস্যা নাই।
গোলাম রব্বানী : তুই আর কে?
সাদ্দাম হোসাইন : আমি আর তাজ, আমার বন্ধু ভাই।
গোলাম রাব্বানী : অহ তাজ তাজ, সহ-সভাপতি। তুই হলি জয়েন্ট সেক্রেটারি। টাকাটা কীভাবে, ম্যাডাম দিছিলো নাকি অন্য কেউ ছিল?
সাদ্দাম হোসাইন : ওইখানে আর কেউ ছিল না। ব্যাপারটা হচ্ছে ম্যাডাম আমাদের সাথে ডিলিংটা করছে। টাকাটা আমাদের হলে পৌঁছায় দিছে।
গোলাম রাব্বানী : ওহ হলে পৌঁছায় দিছে টাকা।
সাদ্দাম হোসাইন : হ্যাঁ হ্যাঁ। কথা তো হইছেই। আমি আর জুয়েলসহ তিনজনের সাথেই কথা হইছে।

গোলাম রাব্বানী : কয় টাকা দিছে?
সাদ্দাম হোসাইন : আমাদেরকে বলছে এক কোটি। আমরা বাকিটা জানি না। জুয়েল-চঞ্চলের সাথে আলাদা ডিল হইতে পারে। বাট আমাদের সাথে বসে মীমাংসা...
গোলাম রাব্বানী : আমি শুনলাম যে ১ কোটি ৬০ লাখ...
সাদ্দাম হোসাইন : ব্যাপারটা হচ্ছে ভাই ৬০ এর টা আমরা জানি না। ওখানে বসে ভাগ করে দিছে ৫০ হচ্ছে জুয়েলের, ২৫ আমাদের আর ২৫ চঞ্চলের।

গোলাম রাব্বানী : ওহ ম্যাডাম ওভাবে ভাগ করে দিছে! জুয়েল ভালো ছেলে ওই জন্য ৫০ আর চঞ্চল ক্যাম্পাসের বাইরে থাকে এজন্য ২৫...
সাদ্দাম হোসাইন : চঞ্চল তো ভাই ওই ঝামেলায় আমাদের বাদ দিতে পারে নাই।
গোলাম রাব্বানী : ও সেক্রেটারির টাকাই তোদেরকে দিছে।
সাদ্দাম হোসাইন : আমরা বলছি আমাদের ২৫% দিতে হবে। চঞ্চলকে ২৫% দিতে হবে। আমাদেরকে না জানাইয়া ওদের আলাদা ৬০ লাখ টাকা দিছে। এটা হতে পারে। আমরা ওটা জানি না। আমরা ১ কোটির হিসাব জানি।

গোলাম রাব্বানী : কিন্তু তোমার ম্যাডাম যে এখানে আমাদের নাম জড়াইলো, আমার তো কোনো আইডিয়াই নাই।
সাদ্দাম হোসাইন : ভাই উনি খুব নোংরামি করতেছে ভাই। আপনারা ভাই সিদ্ধান্ত নেন। আমাদের কি করা লাগবে আমরা করতেছি।
গোলাম রাব্বানী : তোমাদের কিছু করা লাগবে না। তোমরা সাইলেন্ট থাকো। যেহেতু আপার কানে দিয়েছে, আমিও বুঝতেছি সে নিজে সেফ হওয়ার জন্য নিজের ফ্যামিলিকে সেফ করার জন্য। আরেকটি জিনিস, এই ৬টা কাজ ডিল করছে কে বেসিক্যালি?
সাদ্দাম হোসাইন : তার ছেলে, মূলত হচ্ছে তার ছেলে, তার পিএস সানোয়ার ভাই আর হচ্ছে পিডি, আর হচ্ছে তার হাজবেন্ড। এই হচ্ছে চারজন।
গোলাম রাব্বানী : স্বামী, ছেলে, পিএস সানোয়ার ও পিডি নাসির? আগে থেকে ৬টা কোম্পানি রেডি করে রাখছে না!
সাদ্দাম হোসাইন : শুরু থেকেই তারা সবকিছু করছে ভাই। টেকনিক্যাল কমিটিতে ওরা ছিল।

গোলাম রাব্বানী : টেকনিক্যাল কমিটিতে ওরা ছিল? না না ওরা তো থাকতে পারে না। এটার নিয়ম নেই।
সাদ্দাম হোসাইন : কথা হলো উনিতো সবাইকে ফেরত টেরত পাঠালো না! ছিনাই নিচ্ছিলো। তখন আমরা বললাম সবাইকে ড্রপ করাতে দিতে হবে। তখন সবাইকে ড্রপ করাতে দিলো। কিন্তু কাজ হচ্ছে... হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ওটা নাটক ছিল। শিডিউল বিক্রির টাইমে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ইচ্ছে করে। যেন কেউ যোগাযোগ করতে না পারে।
গোলাম রাব্বানী : ওহ আচ্ছা আচ্ছা। শিডিউল বিক্রির টাইমে সে হাসপাতালে ভর্তি হইছে ইচ্ছা করে?
সাদ্দাম হোসাইন : হ্যাঁ ভাই।

গোলাম রাব্বানী : তুই জানলি কেমনে এইটা?
সাদ্দাম হোসাইন : শিডিউল বিক্রির সময় উনি হাসপাতালে ছিলেন। শিডিউল বিক্রি শেষ উনি....
গোলাম রাব্বানী : আমি তোর সাথে কথা বলবোনি প্রয়োজন হলে। ম্যাম আমাদের সম্পর্কে যা মিথ্যাচার করলো!
সাদ্দাম হোসাইন : আমি ফোন দিলে ভাই.....
গোলাম রাব্বানী : আচ্ছা। থ্যাংকিউ থ্যাংকিউ

এসএমএম