বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বড় বিষন্নতার সাথে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আশাঙ্কাজনক অবনতি ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসায় ৬১৩ দিন যাবৎ বন্দী করে রেখেছেন তাকে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, কারাগারে নেয়ার সময় সম্পূর্ণ সুস্থ খালেদা জিয়া এখন হুইল চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারেন না। তিনি কারও সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতে পারেন না। নিজের খাবার নিজে খেতে পারেন না। মাথার চুলও বাধতে পারেন না। তার পোশাকও আরেকজনকে পরিয়ে দিতে হয়। হাত-পা শক্ত হয়ে গেছে। হাত-পায়ের আঙ্গুল ফুলে গেছে। এ অবস্থায় তিনি পিজি হাসপাতালের আট বাই দশ ফুটের ছোট্ট কক্ষে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, আর্থ্রাইটিস ও ফ্রোজেন শোল্ডার সমস্যার কারণে স্বাস্থ্যের আরও গুরুতর অবনতি ঘটছে। ঘাড়-মাথা সোজা রাখতে পারছেন না। কয়েক বছর আগে অপারেশন করা চোখ এবং হাঁটুর ব্যাথা ক্রমশ বৃদ্ধির ফলে অসহ্য ব্যথায় কাতরাচ্ছেন ‘গণতন্ত্রের মা’। ব্যথার কারণে রাত্রে তার ঘুম হচ্ছে না এবং সারাক্ষণ তিনি অস্থির থাকছেন।
রিজভী বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ও দেশ বিক্রি করার জন্য আইন আদালতকে কব্জা করে দেশনেত্রীর জামিনে বাধা দেয়া হচ্ছে। কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানি থেকে মেধাবী তরুণ আবরার ফাহাদকে হত্যা ও বেগম জিয়ার বন্দিত্ব একই সুতায় গাঁথা। বিএসএমএমইউর পরিচালককে দিয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে বলানো হচ্ছে-‘খালেদা জিয়া ভালো আছেন, তার অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি।’ কতটা অমানবিক হলে এতো বড় মনগড়া কথা তারা বলতে পারেন। জরুরিভিত্তিতে তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। অন্যথায় যে কোন সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে আমরা আজই দেশনেত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
বিএনপির প্রভাবশালী এই নেতা আরও বলেন, গতকাল চিকিৎসা শেষে ঢাকা আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে নামার সাথে সাথেই সাজানো মিথ্যা মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ-বীরবিক্রমকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। প্রথমে বিমানবন্দর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে পরে পল্লবি থানায় হস্তান্তর করে। এ গ্রেফতার সু-পরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানুষের চোখকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার অপকৌশলমাত্র।
‘সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে তিনি পানির ন্যায্য হিস্যা ও দেশের স্বার্থের পক্ষে একজন নির্ভিক ভাষ্যকার। পানির চুক্তির চক্রান্তের নানাদিক তুলে ধরতে পারতেন সাবেক এ পানি মন্ত্রী। এ কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার গ্রেফতার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। আমরা এ মুহূর্তে তার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’
টিএস/টিএফ