• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০১৯, ০৮:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৯, ২০১৯, ০৮:১২ পিএম

বর্তমান সরকার গণতন্ত্রহীনতার রোল মডেল : মওদুদ

বর্তমান সরকার গণতন্ত্রহীনতার রোল মডেল : মওদুদ
মওদুদ আহমদ - ফাইল ছবি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বর্তমান সরকার নিজেদের উন্নয়নের রোল মডেল বললেও তারা হলো গণতন্ত্রহীনতার রোল মডেল। বিচারহীনতার রোল মডেল, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের রোল মডেল। এই সরকার একদলীয় শাসনের রোল মডেল, ভোটের অধিকার হরণ করার রোল মডেল, ভোট চুরির রোল মডেল, বিনাভোটে সরকার গঠন করার রোল মডেল। পৃথিবীর কোথাও এরকম রোল মডেল পাবেন না। 

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। 

২০১৯ সালকে সরকারের মরণকাল দাবি করে মওদুদ বলেন, এই দশ মাসে যত ঘটনা ঘটেছে সবগুলোর সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগ জড়িত। যুবলীগ-ছাত্রলীগের তাণ্ডবে মানুষ অতিষ্ট। এই যুবলীগ-ছাত্রলীগের ঘটনা আগে আমরা জানতাম না। জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্রলীগের শোভন-রাব্বানী ভিসির সঙ্গে ৮৬ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগাভাগি করতে গেছে। এরপর যুবলীগের শামীম, সম্রাট, খালেদের নামগুলো আগে জানতাম না। শামীমের অফিসে ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। আর আমার নেত্রী খালেদা জিয়া ১ বছর ৮ মাস যাবত কারাগারে। 

বাংলাদেশের প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা হলে টর্চার সেল আছে উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বুয়েটে ১০টি টর্চার সেল আছে। এই টর্চার সেলের কাজই হলো ভিন্নমতের শিক্ষার্থীদের নিয়ে টর্চার করা। আমরাও লেখাপড়া করেছি। কিন্তু এই টর্চার সেলের কথা তো চিন্তাই করতে পারি না। 

আবরারকে কেন হত্যা করা হয়েছে- প্রশ্ন করে মওদুদ বলেন, গত দশ বছরে এই সরকার শুধু দিয়েছে, কিন্তু দেশের জন্য এক ফোটা পানিও আনতে পারেনি। তারা শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের সব স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছে। আগে ট্রান্সশিপমেন্টের কথা ছিল। এখন আমাদের রাস্তা দিয়ে তাদের গাড়ি যাবে। উপকূলে ভারতের রাডার সিস্টেম করা হবে। কিসের জন্য? নিরাপত্তা সার্ভিলেন্সের জন্য? কাদের নিরাপত্তা- আমাদের না আমাদের প্রতিবেশী দেশের? আর এসবের প্রতিবাদ জানানোর জন্য আবরার মৃত্যুবরণ করেছে। আবরার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছে। সারা পৃথিবীর মানুষ জেনেছে- বাংলাদেশে ভিন্নমত অবলম্বন করলে তাদেরকে হত্যা করা হয়। 

তিনি বলেন, আমি সব সময় বলেছি- আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে রাজপথে নামতে হবে। রাজপথ ছাড়া কোনো দেশে কোনো স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন সফল হয়নি। আমাদেরও সেই একটাই পথ। যদি আমরা পারি তাহলে সফল হব। খালেদা জিয়া কোনোদিন প্যারলে মুক্তি চাইবেন না। যারা প্যারলের কথা বলেন, তারা ভুল বুঝে বলেন, না হলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বলেন। প্যারলে নয়, রাজপথেই খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে।  

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহাবুব হোসেন, নিতাই চন্দ্র রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ। 

উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারেফ হোসেন, বিএনপি নেতা মীর সরফত আলী সপু, মাহবুবুল হক নান্নু, আব্দুল আউয়াল, শিরীন সুলতানা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, আবু নাসের রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।            

টিএস/ এফসি

আরও পড়ুন