• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০১৯, ০৯:৫০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৪, ২০১৯, ০৩:৩৬ পিএম

বাবার সংগঠনের হাল ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় হলেন শেখ পরশ

বাবার সংগঠনের হাল ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় হলেন শেখ পরশ
শেখ ফজলে শামস পরশ

যু ব লী গ

.........

‘‘ছোটবেলায় হারিয়েছি মা-বাবা এবং অন্যান্য স্বজন। আমাদের দুঃখ শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা অনুধাবন করতে পারেন। তাই আমি রাজনীতি থেকে অনেক দূরে ছিলাম। কারণ যে ব্যক্তি জাতির জন্য এতো ত্যাগ স্বীকার করেছে, তাকে যখন নির্মমভাবে হত্যা করা হলো,  সে ঘটনায় আশাহত হই। এটাই স্বাভাবিক। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যার দেশের প্রতি উদার ভালবাসা দেখে আমি সাহস পাই। আমি বলতে চাই, আমার ওপরে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে পালন করবো’’

..............................................

বাবা শেখ ফজলুল হক মনির হাতের গড়া সংগঠন আওয়ামী যুবলীগের হাল ধরলেন বড় ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ। মূলত ফুফু শেখ হাসিনার কথাতেই রাজনীতিতে সক্রিয় হলেন তিনি।চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ফলে তার দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচি সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স কর্মসূচিকে বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের একটি কর্মসূচি হিসেবে নিয়েছেন। তিনি এও অঙ্গীকার করেছেন চেয়ারম্যান হিসেবে নয়, একজন একনিষ্ট কর্মী হিসেবে বাবার সংগঠনটিতে নিবেদিত প্রাণ হয়ে জনকল্যাণের কাজ করে যাবেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) যুবলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ৭ম জাতীয় কংগ্রেসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার নাম ঘোষণা করেন।

শেখ পরশের বাবা শেখ ফজলুল হক মনি ১৯৬০-১৯৬৩ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২ সালে হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তিনি গ্রেফতার হন এবং ছয় মাস কারাভোগ করেন। ১৯৬৪ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর আবদুল মোনেম খানের নিকট থেকে সনদপত্র গ্রহণে তিনি অস্বীকৃতি জানান এবং সরকারের গণবিরোধী শিক্ষানীতির প্রতিবাদে ‘সমাবর্তন বর্জন’ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার ডিগ্রি প্রত্যাহার করে নেয়। পরবর্তী সময়ে তিনি মামলায় জয়লাভ করে ডিগ্রি ফেরত পান। ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হন এবং দেড় বছর কারাভোগ করেন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের দায়ে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয় এবং তিনি কারারুদ্ধ হন। এ সময় বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের সময় তাকে মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তার উদ্যোগে ‘মুজিব বাহিনী’ গঠিত হয়। এ বাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে তিনি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামে হানাদার পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকা দৈনিকে রূপান্তরিত করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তিনি ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি তেজগাঁও আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৭৩ সালের ২৩ আগস্ট তিনি ‘সাপ্তাহিক সিনেমা’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯৭৪ সালের ৭ জুন তার সম্পাদনায় দৈনিক বাংলাদেশ টাইমস প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠিত হলে তিনি এর সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য মনোনীত হন। তার রচিত গল্পের সঙ্কলন ‘বৃত্ত’ ১৯৬৯ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সামরিক বাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সদস্যের হাতে তিনি নির্মমভাবে নিহত হন।

বাবার সংগঠনের হাল ধরে শনিবারই প্রথম অনুভূতির প্রকাশ করে শেখ পরশ বলেন, ছোটবেলায় হারিয়েছি মা-বাবা এবং অন্যান্য স্বজন। আমাদের দুঃখ শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা অনুধাবন করতে পারেন। তাই আমি রাজনীতি থেকে অনেক দূরে ছিলাম। কারণ যে ব্যক্তি জাতির জন্য এতো ত্যাগ স্বীকার করেছে, তাকে যখন নির্মমভাবে হত্যা করা হলো,  সে ঘটনায় আশাহত হই। এটাই স্বাভাবিক। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যার দেশের প্রতি উদার ভালবাসা দেখে আমি সাহস পাই। আমি বলতে চাই, আমার ওপরে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে পালন করবো।

শেখ পরশ বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে জিরো টলারেন্স কর্মসূচি দিয়েছেন সেই কর্মসূচিকে বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের একটি কর্মসূচি হিসেবে দেখি। যুবলীগের সকল কর্মীদের একটাই দায়িত্ব সম্পূর্ণ উদ্দীপ্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মসূচি সফল করা। দেশের সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যার ওপর আস্থাশীল। তারা দেখেছেন গত কয়েক বছরের কিভাবে দেশকে আর্থ-সামাজিকভাবে দাঁড় করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা এও দেখছেন কিভাবে এদেশের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম কর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তাই আমাদের দায়িত্ব- আমরা যেন আমাদের কর্মের মাধ্যমে এই বিশ্বাসের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে পারি। আমার প্রচেষ্টা থাকবে যুব সমাজ যেন ‘আই হেটস পলিটিক্স’ কালচার থেকে বেরিয়ে এসে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান তুলে দেশের কাজে নিজেদের নিয়োজিত করবে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা। আমাদের একটাই পরিচয় আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যার সাধারণ কর্মী।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর ছাড়াও ঘাতকরা আক্রমণ করে আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির ধানমণ্ডি বাড়িতেও। ঘাতকের বুলেটে মনি এবং তার স্ত্রী শেখ আরজু মনি নিহত হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান দুই শিশুপুত্র শেখ ফজলে শামস পরশ ও শেখ ফজলে নূর তাপস। ১৯৭৫-এ শেখ ফজলে শামস পরশের বয়স ছিল ৬।শেখ ফজলে নূর তাপসের ৪ বছর। পরিণত বয়সে তাপস রাজনীতিতে পাকাপোক্ত অবস্থান করে নিলেও দূরে ছিলেন পরশ। শেখ ফজলে শামস পরশ ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ছোট ভাই শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা-১২ আসনের তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। 

১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ট্রাজেডিতে বাবা-মাকে হারানো শেখ পরশ ধানমণ্ডি সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেয়ার পর দেশে ফিরে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছিলেন।

সম্প্রতি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে যুবলীগের অনেক শীর্ষ নেতা বিতর্কিত হয়ে যাওয়ায় ক্লিন ইমেজের নেতা খোঁজা হচ্ছিল। প্রথম থেকেই আলোচনায় ছিলেন শেখ ফজলে শামস পরশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাজনীতিতে ব্যাপক অবদান রয়েছে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও যুবলীগের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের বাবা শেখ ফজলুল হক মনির।যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির রক্তের উত্তরাধিকারী কেউ সংগঠনের চেয়ারম্যান হবেন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের এমন একটি আবেগ দীর্ঘদিনের। সে হিসেবে সংগঠনে রাজনীতিতে থাকা শেখ পরশের ছোট ভাই শেখ ফজলে নূর তাপসের কথা শোনা যাচ্ছিল। কারণ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হলেও রাজনীতির মাঠে দেখা যেতো না শেখ পরশকে। এমনকি ছোটভাই তাপসের নির্বাচনি প্রচারেও তাকে খুব-একটা নামতে দেখা যায়নি। তবে ভাবমূর্তি সঙ্কটে থাকা যুবলীগকে উদ্ধারে ফুপু শেখ হাসিনার কথায় পরশ এবার রাজনীতিতে সক্রিয় হলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা। যদিও প্রথম দিকে তিনি রাজি ছিলেন না। ফুফু শেখ হাসিনা তাকে কাছে ডেকে বোঝালেন। তারপরেই রাজি হন পরশ। 

সম্মেলন প্রস্তুতির জন্য যুবলীগের যে কমিটি হয়েছে, তাতে আকস্মিকভাবে পরশের যুক্ত হওয়া দেখে সবার মধ্যে আলোচনার জন্ম দেয় তার নামটি। সম্মেলন প্রস্তুতি দেখতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুক্রবার (২২ নভেম্বর) যখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিলেন, তখন তার সাথে ছিলেন শেখ পরশ। সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপ-কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কার্যালয়ে তিনি গেলে কর্মীরা করতালি দিয়ে তাকে পরবর্তী ‘চেয়ারম্যান’ হিসেবে শুভেচ্ছা জানায়।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) যুবলীগের নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক বিল্পব বড়ুয়া প্রমুখ। 

কংগ্রেস উদ্বোধন ও অন্যান্য তথ্য 

এর আগে সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে প্রথম সারিতে শেখ ফজলে শামস পরশ উপস্থিত থাকলেও বক্তব্য রাখেননি। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১১টার সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন। এরপর যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি। এর পর আওয়ামী লীগ সভাপতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান আতা ও প্রকৌশলী নিখিল রঞ্জন গুহ। প্রধান অতিথির হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম ও সদস্য সচিব হারুন অর রশিদ। ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূলপর্ব শুরু হয়। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য বেলাল হোসাইন। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান চৌধুরী। সাংগঠনিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ।

এএইচএস/এসএমএম

আরও পড়ুন