• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৯:০৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৯:২৮ এএম

বিএনপি নেতা-কর্মীদের নৈরাজ্যের শঙ্কায় নিরাপত্তাবলয়ে হাইকোর্ট

বিএনপি নেতা-কর্মীদের নৈরাজ্যের শঙ্কায় নিরাপত্তাবলয়ে হাইকোর্ট

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ-মিছিল কর্মসূচি রয়েছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের। এ কর্মসূচির আড়ালে উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে অরাজকতার সৃষ্টি করতে পারে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এমনটা শঙ্কার কথা উঠে এসেছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। এ কারণে হাইকোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা হাইকোর্টের আশপাশে অবস্থান নেয়ার কথা রয়েছে। হাইকোর্টের আশপাশের সকল স্থাপনায় নাশকতার আশঙ্কা করছেন সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। 

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধের পাশাপাশি গাড়ি-ভাঙচুরসহ তাণ্ডবলীলা চালায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিষয়টি মাথায় রেখেই বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এমনই আভাস দেয়া হয়েছে।  

বিএনপির নেতা-কর্মীরা বৃহস্পতিবার আদালত প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার শতভাগ শঙ্কার কথা বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা হাইকোর্টের বেষ্টনির বাইরে অবস্থান এবং বিক্ষোভের পাশাপাশি নাশকতাও ঘটাতে পারে।

সূত্র জানায়, বিএনপি ঘরানার আইনজীবী সমাবেশ করবেন আদালতের ভেতরে। জামিনের শুনানির সময় তারা শো ডাউন করবেন। এ সকল কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থায়নে রয়েছেন সাবেক একজন মেয়র প্রার্থী ও একজন ড্যাব নেতা। 

বিদেশে পালিয়ে থাকার বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাও আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। বিদেশ থেকে হাই কমান্ডের নির্দেশ হচ্ছে, গত জাতীয় নির্বাচনে প্রায় প্রতিটি আসনে বিএনপি তিনজন করে প্রার্থী বাছাই করে রেখে ছিলেন। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ওই ৩ জন প্রার্থীর প্রতিজনকে ৫ জন করে বিএনপি-কর্মী নিয়ে হাইকোর্ট এলাকায় অবস্থান নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। সে হিসেবে ৩০০ আসনের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার লোকের সমাগম করবে বিএনপি। খালেদা জিয়ার জামিনের ক্ষেত্রে শো ডাউনের মাধ্যমে সরকারকে জানান দেবে তারা। এমনটাই হাই কমান্ড থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনের তথ্য পেয়ে সরকারও হার্ড লাইনে রয়েছে। বুধবার রাতেই হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শাহবাগ, পল্টন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, দোয়েল চত্বর, কাকরাইল, মৎসভবন মোড়, হাইকোর্টের সকল প্রবেশপথে অতিরিক্ত পুলিশ ও গোয়েন্দা মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি রাখা হয়েছে স্ট্রাইকিং ফোর্স, জলকামান, এপিসি, রায়টকার ও দমকল বাহিনীর ইউনিট। থাকছে র‌্যাবের সাজোয়া যান, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। নিরাপত্তা চাদরে মোড়া থাকবে হাইকোর্ট। আইনজীবী ও ক্লায়েন্ট ব্যতীত কোনও অবাঞ্ছিত বা অযাচিত লোকজনকে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে ঢুকতে দেয়া হবে না। হাইকোটের ফটকগুলোকে পুলিশ চৌকি বসিয়ে তল্লাশি করা করবে। এমনটাই বলেছেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কোনও রকম অনাকাঙ্খিত ঘটনা বরদাশত করা হবে না।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শেষে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান আজকের এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে তারা নিয়মিত আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন। 

আন্দোলন ছাড়া বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি সরকার দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। তিনি বলেন, আন্দোলন না করলেও কারাগারে যেতে হয়, তাই আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

এইচএম/এসএমএম