• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০১৯, ১০:১৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৩:৩৮ পিএম

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল

নেতৃত্বের আলোচনায় তরুণ-সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা

নেতৃত্বের আলোচনায় তরুণ-সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা

৮১ সদস্যের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কারা জায়গা পেতে যাচ্ছেন তা নিয়ে দলের ভেতর আলোচনা ও কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে। তবে দলীয় প্রধান এবার তারুণ্য-নির্ভর কমিটি করতে চান— এ রকম জোর আলোচনা চলছে দলে। তাই আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ফের উচ্চারিত হচ্ছে দলের বেশ কয়েকজন তরুণ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতার নাম। কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারেন মন্ত্রিসভা ও জাতীয় সংসদের তরুণ সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির বেশ কয়েকজন ত্যাগী সদস্য। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের পরীক্ষিত ছাত্রলীগ নেতাদেরও কাজে লাগাতে চান দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। 

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, তৃণমূল নেতৃত্বকে ধারণ করে সৎ, পরিচ্ছন্ন, ত্যাগী এবং দল ও দেশের জন্য ঝুঁকি নিতে পারবেন এমন তরুণ ও সাবেক পরীক্ষিত ছাত্রলীগ নেতারাও নেতৃত্ব আসতে যাচ্ছেন।  

চলমান শুদ্ধি অভিযানের প্রেক্ষাপটে দলে তরুণ নেতৃত্ব আসছে এমন আলোচনা জোড়ালোভাবে রয়েছে। এরই মধ্যে কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগে ত্যাগ স্বীকারকারীদের নেতৃত্বে নিয়ে এসেছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও দলের তরুণ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা যারা ৯০’এর গণ অভ্যুত্থান, ২০০১ সালে পরবর্তী বিরোধী দল ও ২০০৭ এর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনের সাহসী ভূমিকা রেখেছেন তাদের বেশ কয়েকজনকে এবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে দিতে পারেন শেখ হাসিনা।

সূত্র  জানায়, পরীক্ষিত ও স্বচ্ছ ইমেজের প্রায় ডজন খানেক তরুণ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেয়া হবে। এসব সাবেক ছাত্রনেতার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।

শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে দলকে কারা নেতৃত্ব দেবেন সে বিষয়টিকেই কাউন্সিলে গুরুত্ব দেয়া হবে। এটি মাথায় রেখে নতুন কমিটিকে তারুণ্য-নির্ভর করে সাজানো হবে। এ জন্য এবার দলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রদবদল হতে যাচ্ছে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন কাউকে এবারই দলের কমিটিতে জায়গা দেয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক পরীক্ষিত ছাত্রলীগ নেতারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদেও চলে আসতে পারেন। 

জানা যায়, ৯০-এর গণআন্দোলনে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন এমন কয়েকজন ছাত্রনেতা এখন রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েও কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেই। তাদের নানা কারণেই বিভিন্ন সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া সম্ভব হয়নি। স্থান হয়নি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোতেও। এমন কয়েকজন নেতার একটি তালিকা করা হয়েছে। দলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ও ভূমিকা বিবেচনায় কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেয়া হতে পারে। এর বাইরে ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন সাবেক নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। হামলা-মামলা ও গ্রেফতার হয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সম্মেলন সামনে রেখে এমন কয়েকজন নেতার বিষয়েও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরেও অনেক ছাত্রনেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে এমন কয়েকজন সাহসী ছাত্রনেতাকেও কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেয়া হতে পারে।

জানা গেছে, তরুণদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে আসতে পারেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, সংসদ সদস্য সাবেক উপ-মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, ডাকসুর সাবেক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর কাদের কোরাইশী, নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতা, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য শফী আহমেদ, ছাত্রলীগের সাবেক কার্যকরী সভাপতি শাহে আলম, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক দফতর সম্পাদক আ খ ম জাহাঙ্গীর, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল সংসদের সাবেক ভিপি সুভাষ সিংহ রায়, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে নাহিম রাজ্জাক, নারী সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, কাজী নাবিল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাবেক ও প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর ছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী, সাবেক ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান মনির, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এপিএস ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুজ্জামান শিখর, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।

দলের সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন এমন কয়েকজন নেতার নামও শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন- যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের একাংশের সভাপতি অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক নুজহাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার।

আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল হবে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ‘মুজিববর্ষ উদযাপনের সরকারি ও দলীয় পরিকল্পনার কারণে এবারকার কাউন্সিল সাদামাটাভাবে আয়োজন করা হচ্ছে।

এএইচএস/এসএমএম

আরও পড়ুন