• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯, ০১:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯, ০২:৪২ পিএম

রাজধানী বাড্ডায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

রাজধানী বাড্ডায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
বাড্ডায় বিক্ষোভ মিছিলে রুহুল কবির রিজভী -ছবি : জাগরণ

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আদালত খারিজ করে দেয়ার প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়ার অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাড্ডায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ মিছিলে ধাওয়া করে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে বিএনপি।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নেতৃত্বে বাড্ডার সুবাস্তু নজরভ্যালি টাওয়ারের সামনে থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ফুজি টাওয়ারের সামনে গিয়ে শেষ হয়। 

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে মিছিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির আহসানুল্লাহ হাসান, এজিএম শামসুল হক, এবিএম আবদুর রাজ্জাক, তাজুল ইসলাম, আব্দুল কাদের বাবু, নুরুল ইসলাম কাজী, তুহিন, সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, হারুনুর রশিদ সহ তিন শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সেনাপ্রধান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘খন্দকার মোশতাকের সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোক ছিলেন জিয়া। যদি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়া জড়িত না-ই থাকবেন, তবে খন্দকার মোশতাক তাকে কেন সেনাপ্রধান বানিয়েছিলেন’? এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১৯৭০ সালে মেজর পদে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসেন কেএম সফিউল্লাহ। ১৯৭২ সালের ৫ এপ্রিল মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান কেএম সফিউল্লাহকে ডেকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিতে বলেন, তখন দেশের সামরিক বাহিনীর প্রধান অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন এমএজি ওসমানী। সফিউল্লাহর পদবী তখন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ছিল (যুদ্ধের সময় পদোন্নতিপ্রাপ্ত), তিনি সেনাপ্রধান হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিতে হয় এবং তাকে পূর্ণ কর্নেল পদে উন্নীত করা হয়। অথচ জিয়াউর রহমান ছিলেন সেসময়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার এবং একই বছরের ১০ অক্টোবর তিনি মেজর জেনারেল পদবী লাভ করেন, তার সঙ্গে জিয়াউর রহমানও পদোন্নতি পেয়ে উপ সেনাপ্রধান হয়েছিলেন। যারা সরকারি চাকরি করেন তারা তো পদোন্নতি পাবেন এটা স্বাভাবিক। সেটা যখন যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেনো। সুতরাং শহীদ জিয়া কারো বদান্যতায় সেনাবাহিনীর প্রধান হননি। তিনি নিজের যোগ্যতা বলেই সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছিলেন। 

রিজভী বলেন, ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত সফিউল্লাহ সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। সেসময়ই তো শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। অথচ ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ১৬ বছর কেএম সফিউল্লাহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন আর ইংল্যান্ড। ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হন। কই প্রধানমন্ত্রী তো সে বিষয়ে কিছু বলেননি। সুতরাং তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। 

মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে মর্মান্তিক ও বিয়োগান্তক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, সেসময় শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই বহু নেতা তাদের আত্মতৃপ্তির কথা বলেছিলেন। তাদেরই একজন আব্দুল মালেক উকিল লন্ডনে থাকাবস্থায় বলেছিলেন যে, ‘ফেরাউনের পতন হোক’। এমনকি খন্দকার মোশতাকের শপথ বাক্য পাঠ করান তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদ সচিব এইচটি ইমাম। আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম সিনিয়র উপদেষ্টা। কই প্রধানমন্ত্রী তো সে বিষয়ে কিছু বলেননি। অথচ পরবর্তীতে মালেক উকিলসহ হত্যাকাণ্ডের সমর্থনকারী বহু নেতাই তো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন। আজকে নিজের ঘরের দিকে তাকান না প্রধানমন্ত্রী। আমি বলবো আগে নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখুন আর ভাবুন যে কারা খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন? 

দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা ও সম্পাদককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। গণমাধ্যমের মত প্রকাশ ও মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে হয়েছে। কারো সাথে কারো মতের মিল না থাকতে পারে। রাজনীতিতে ভিন্ন ভিন্ন মত থাকবে এটা স্বাভাবিক। তাই বলে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা ফ্যাসিবাদী শাসনের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে হয়।

টিএস/একেএস

আরও পড়ুন