• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৬:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৬:৫৭ পিএম

বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী

এত বড় সংগঠন, এত নেতা, কোথায় ছিল তখন?

এত বড় সংগঠন, এত নেতা, কোথায় ছিল তখন?
৪৯তম বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ছবি : টিভি থেকে নেয়া

৪৯তম বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, এত বড় সংগঠন, এত নেতা, কোথায় (১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট) ছিল তখন?

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৯তম বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ প্রশ্ন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের হত্যার ঘটনা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, এত বড় একটা ঘটনা, বাংলাদেশের কোনো লোক জানতে পারল না? কেউ কোনো পদক্ষেপ নিল না? লাশ পড়ে থাকল ৩২ নম্বরে! সেই কথা আমি এখনও ভাবি! মাঝে মাঝে আমার জানতে ইচ্ছে করে, কেউ সাহসে ভর দিয়ে এগিয়ে আসতে পারল না? বাংলার সাধারণ মানুষ তো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মাঝে মাঝে অবাক লাগে! সেই ৯টা মাস একাকী তিনি পাকিস্তান কারাগারে বন্দি। একটি বৈরী পরিবেশ, বৈরী আবহাওয়া। সেখানে যেমন গরম, তেমন শীত। তাকে কীভাবে রেখেছিল? কী খেতে দিয়েছিল? যাকে তারা ফাঁসি দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল, তাকে তারা কত কষ্ট দিতে পারে- সেটা কল্পনাও করা যায় না। আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার ভেতর যে আত্মবিশ্বাস ছিল, সেই আত্মবিশ্বাসই তাকে দৃঢ় করে রেখেছিল। যে কারণে এত কষ্টের পরেও বেঁচে ছিলেন। এরপর তিনি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলার মাটিতে এসে ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখা ঘোষণা করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, মাত্র সাড়ে ৩টা বছর তিনি সময় পেয়েছিলেন। এই সাড়ে ৩ বছরের মধ্যেই যুদ্ধের ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে গিয়েছিলেন। তিনি প্রতিটি কাজের ভিত্তি তৈরি করে দিয়ে গেছেন। একটা সংবিধান পর্যন্ত তিনি দিয়ে গেছেন। কিন্তু আমাদের দুভার্গ্য, যখন বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ে তুলে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। শুধু তাকে একা না, আমাদের পরিবারের সব সদস্যকে হত্যা করল ঘাতকরা। এমনকী আমার মেজো ফুফু, ছোট ফুফু- সব বাড়িতেই তারা হানা দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, হয়তো এই ব্যর্থতার খেসারতই দিতে হয়েছে জাতিকে। কারণ জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৮/১৯টা ক্যু হয়েছে। অত্যাচার নির্যাতন চলেছে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ওপর। সেই সময় যদি কেউ সাহস করে দাঁড়াত, হয়তো এ অত্যাচার হতো না। এত বারবার ক্যু হত না। বারবার ক্যু করে একটা দেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শুধু তাই না, যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় তা ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছিল।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। সভাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

এইচএস/ এফসি