নির্বাচন কমিশনের ওপর শুধু আমাদের নয়, এদেশের কোনও মানুষের আস্থা নাই। এরপরও আমরা জেনেশুনে বিষ পান করেছি

....................................

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপি জেনেশুনে বিষ পান করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের নিয়ে জিয়ার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাসাস এর সভাপতি ড. মামুন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদারসহ সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গয়েশ্বর বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর শুধু আমাদের নয়, এদেশের কোনও মানুষের আস্থা নাই। এরপরও আমরা জেনেশুনে বিষ পান করেছি। আমরা নির্বাচনে গেলেও সমালোচনা হয়, আবার না গেলেও সমালোচনা হয়। তাই সবাই অপেক্ষা করেন নির্বাচন কমিশনের শেষ পদক্ষেপের জন্য। আর একটা সময় আসবে যখন এই নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে আপনারা মুখ ফিরিয়ে নেবেন, তখন আমরাও মুখ ফিরিয়ে নেবো এবং কোন নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করবো না।

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবহাওয়া কেমন দেখছেন- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি নির্বাচন নিয়ে কোনও আবহাওয়া তৈরি হয় নাই। তবে ফরম বিক্রি, ক্রয় ও জমা দেয়ার জন্য আবহাওয়া তৈরি হতে পারে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও আগ্রহ ফিরে আসে নাই। কারণ জনগণ যেহেতু ভোট দিতে পারেন না, সে কারণে কোনও নির্বাচনে জনগণ আগ্রহ দেখাই না। আর জনগণের মধ্যে যদি কোনও আগ্রহ না থাকে তাহলে সেই নির্বাচন নির্বাচন হয় না।

নির্বাচন নিয়ে কি আশা করছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, আমরা এই নির্বাচনে কি আশা করছি? আমরা নিকট অতিতে যা দেখছি, তার প্রতিচ্ছবি দেখবো। যেখানে নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে, উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে জনগণ ভোট দেবে, সেটা আশা করা যাচ্ছে না।

তারপরেও কেনো নির্বাচনে যাচ্ছেন- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনাদের (গণমাধ্যম) মনোতুষ্টির জন্য নির্বাচনে যাচ্ছি। আমরা না গেলেও আপনারা অনেক কথা বলবেন।

ইভিএমে ভোট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, সাধারণ মানুষের ইভিএমের প্রতি কোনও আগ্রহ নাই। কারণ তথ্য-প্রযুক্তির ওপরে মানুষের ধারণা নাই। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার জেদ করছেন জনগণকে ইভিএম গিলাবেন। সুতরাং জনগণের ইচ্ছার বাইরে যখন নির্বাচন কমিশন কোনও কিছু জেদ করে চাপাইয়া দেয় তখন বুঝতে হবে এই ইভিএমের পিছনে অনেক রহস্য আছে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন কি সুষ্ঠু হবে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটাকে তো নির্বাচন কমিশন বলা যায় না। এটা হলো সরকারের ইচ্ছা বাস্তবায়নের একটা প্রতিষ্ঠান। তাই এটাকে নির্বাচন কমিশন বলা হলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিদ্রুপ করা হবে।

আইনের শাসন আজকে সম্পূর্ণভাবে নাই মন্তব্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকে প্রচলিত আইনে মাধ্যমে কোনও মামলার মীমাংসা করতে পারে না। একমাত্র সরকার নির্দেশই আজকে আদালতের মাধ্যমে কার্যক্রর করা হয়। সুতরাং পুলিশ, প্রশাসন ও আদালত এক হয়ে যদি সরকারের নির্দেশ মান্য করে সেখানে মানুষের বিশ্বাস করার আর কোনও জায়গা থাকে না। সে কারণে কোন বিচার পাওয়ারও আশা থাকে না।

টিএস/এসএমএম