• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২০, ০৪:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ১৩, ২০২০, ০৪:১২ পিএম

‘ইসিকে ইভিএম মেশিন বঙ্গোপসাগরে ফেলার আহ্বান ’

‘ইসিকে ইভিএম মেশিন বঙ্গোপসাগরে ফেলার আহ্বান ’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

ইভিএম মেশিনগুলো বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কোনো অনুমোদন ছাড়া নির্বাচন কমিশন এলসি খুলে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ইভিএম মেশিন কিনেছে। এতে দেশের জনগণের চার হাজার কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। 

আমির খসরু বলেন,কোনো গণতান্ত্রিক দেশে যেখানে সামান্য পরিমাণ জবাবদিহিতা আছে সেখানে যারা মূল স্টেকহোল্ডার তাদের মতামত সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে নির্বাচন কমিশন এরকম কাজ করতে পারে না। আর সবচাইতে বড় কথা হলো আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ যেখানে ২১ হাজার টাকা করে ইভিএম মেশিন কিনেছে সেই ইভিএম মেশিন আমাদের নির্বাচন কমিশন ক্রয় করছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দামে। অর্থাৎ প্রায় ১১ গুন বেশি দাম দিয়ে। তাই আমি নির্বাচন কমিশনকে বলবো এসব মেশিন ক্রয় করা হয়ে গেছে দুর্নীতির টাকাও পকেটে ঢুকে গেছে। এখন আল্লাহর ওয়াস্তে বাংলাদেশের জনগণকে বাঁচান।ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার স্বার্থে, এদেশের গণতন্ত্রের সার্থে, এদেশের মানুষের অধিকারের স্বার্থে দয়া করে মেশিন গুলোকে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিন। এই জাতিটাকে এবার মাফ করে দেন আপনারা। 

তিনি বলেন,যারা প্রযুক্তি বুঝে, যারা প্রযুক্তির জন্ম দেয় সেই সমস্ত দেশে ইভিএম বন্ধ করে দিয়েছে। এই ইভিএম ব্যবহার করলে তাদের ভোট অধিকার নিয়ে শঙ্কা আছে এইজন্য তারা এটা কে বাদ দিয়েছেন। 

আমির খসরু আরও বলেন, ব্যালটবাক্সে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সই দিয়ে দিনের বেলা ভোট চুরি করা এতটা সহজ নয় সেটা আওয়ামী লীগ ৩০ তারিখের নির্বাচনে বুঝতে পেরেছিল। তাই ২৯ তারিখ রাতে ভোট ডাকাতি করেছিল।  এজন্য সরকার জানে যে ব্যালটে সিল মেরে দিনের আলোতে ভোট চুরি করা কতটা কষ্টের। তাই তারা নতুন অধ্যায়ে চালু করেছে আর সেই অধ্যায় হলো ইভিএম অধ্যায়। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে ইভিএম বন্ধ করতে হবে। আর ইভিএম বন্ধ না হলে আগামী দিনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে আমাদের ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।  

চট্টগ্রামের উপ নির্বাচন প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের উপনির্বাচনে প্রায় সকল কেন্দ্র ক্ষমতাসীনরা দখল করে নিয়েছে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভয়-ভীতির মাধ্যমে তারা কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে। ভোটাররা ভোট দিক বা না দিক তারা তাদের ইভিএমের মাধ্যমে সুন্দরভাবে ভোটগুলো তাদের পক্ষে নিয়ে নিচ্ছে। কেন্দ্র দখল করে ইভিএমের মাধ্যমে সরকারি দল তাদের পক্ষে ভোট গুলো নিয়ে নিচ্ছে। ঢাকাতেও একই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ৩০ তারিখের আগ পর্যন্ত কোনো গ্রেফতার-হয়রানি বা অভিযান চলবে না বলে নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছিলো উল্লেখ করে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন,আমি নিজে গিয়েছি নির্বাচন কমিশনার আমাকে কথা দিয়েছেন ৩০ তারিখ পর্যন্ত কোনো গ্রেফতার হবে না অভিযান চলবে না কিন্তু কি দেখা যাচ্ছে গ্রেফতারও চলছে অভিযান চলছে। আক্রমণ চলছে হামলা চলছে। হামলা মামলার মাধ্যমে ভয় ভীতির সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, একটু আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলাম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ফজলে নূর তাপসের পক্ষে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য তাদের স্কুল থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চলনায় মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপরি ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান,যুগ্ন মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সাদস্য বিলকিস ইসলাম, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ,জমিয়তে ওলামায়ে বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সোয়াইব আহমেদ,ঢাকা মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাসির হায়দার, তাতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।

টিএস/বিএস