• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২০, ০৪:২৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৩০, ২০২০, ০৪:২৯ পিএম

কোভিড-১৯

সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপির ‘নেই নেই’ অভিযোগ

সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপির ‘নেই নেই’ অভিযোগ
পিপিই পরে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী ● সংগৃহীত

করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারের পলিসি জনগণের কাছে একদম পরিষ্কার মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনলাইন  সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, নো কিট, নো করোনা। নো টেস্ট, নো করোনা। নো পেশেন্ট, নো করোনা। যে পলিসি করে ইরান ও ইতালি সরকার করেছিল সেই একই পলিসি নিয়ে বর্তমান সরকার।

তারা যেভাবে তার নিজের দেশের  সর্বনাশ করেছে আমাদের দেশের সরকারও তাই করছে। ওই নীতির কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব থেকে তারা। আমরাও সেই লুকানোর পলিসি দিয়েই সবকিছু ম্যানেজ করতে চলেছি বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সরকারের এই লুকানো পলিসি যাতে কেউ প্রকাশ না করতে পারে, সেজন্য নানা রকমের অপচেষ্টা চলছে, এই লুকানোর পলিসির নাম দিয়েছে গুজব।

রিজভী বলেন, কোভিড-১৯ ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নিয়েছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, দুই মাস সময় পেলেও সরকার সমস্যার দিকে কোনও মনোযোগ দেয়নি। উপদ্রুত দেশগুলো থেকে দেশে প্রত্যাবর্তনকারী প্রবাসীদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণে কোয়ারেন্টাইন করার সরকারি ব্যর্থতা প্রমাণ করে, সমন্বয়হীনতা ও প্রস্তুতির অভাব দেশকে কত বড় বিপদে ফেলতে পারে।

তিনি বলেন, মহাবিপদ মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি নেই, সমন্বয় নেই, আক্রান্ত রোগী শনাক্তকরণের পর্যাপ্ত উপকরণ ও ব্যবস্থাপনা দেশে নেই। নেই চিকিৎসকদের রক্ষার ব্যবস্থা, নেই যথেষ্ট মাস্ক, স্যানিটাইজার ও ভেন্টিলেটর। পরীক্ষার ব্যবস্থা ছাড়া সরকার আক্রান্ত সংখ্যার যে তথ্য দিচ্ছে তা বিশ্বাসযোগ্যতা পাচ্ছে না।

সরকারের পক্ষ থেকে টানা দু’দিন বলা হচ্ছে, দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত নেই। অথচ পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনসহ মিডিয়া প্রতিদিন সর্দি, জ্বর, কাশিতে মারা যাওয়ার খবর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যুর সংবাদ ছাপা হয়েছে আজকের খবরের কাগজে।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, জাতির মহাবিপদের মুহূর্তে দুর্যোগ মোকাবেলার কোনও সমন্বিত উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো বাস্তবতা অস্বীকার করে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে সরকারের মিথ্যা সাফল্যের বন্দনায় মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের ব্যস্ততা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য জনগণকে গভীরভাবে চিন্তিত, ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সংক্রমিত রোগীদের সংস্পর্শে আসা সবাইকে চিহ্নিত করে পরীক্ষার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। বিদেশ থেকে আসা সবার পরীক্ষাও হয়নি। এই অচিহ্নিত লোকগুলোই ভাইরাসটি সমাজে জ্যামিতিক হারে ছড়িয়ে দেয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে।

বিদেশ থেকে দেশে ফেরা মানুষের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন পথে ছয় লাখ ৬৫ হাজার ১৩ জন দেশে প্রবেশ করেছেন। শেষ দুই সপ্তাহে এসেছেন পৌনে দুই লাখ মানুষ। এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইইডিসিআরের হট নম্বরগুলোয় সহায়তা চেয়ে ফোনকল এসেছে ৮ লাখ ২ হাজার ৫৮০ জনের। এ পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭৬ জনের। বাকি লোকদের ভেতর কতজন আক্রান্ত তা কেউ বলতে পারছে না।

বিএনপির এ নেতা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ২০ শতাংশ অর্থাৎ তিন কোটি ৪০ লাখ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এর মধ্যে প্রায় দুই কোটি মানুষের অবস্থান অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে। তাদের কাছে খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে। কিন্তু সরকারের পর্যাপ্ত উদ্যোগ ও আন্তরিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। 

এসএমএম