• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২০, ০৭:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৪, ২০২০, ০৮:০৫ পিএম

৫ আসনের উপ-নির্বাচন

হাইভোল্টেজ ঢাকা-১৮ : হাবীব হাসানেই দলের আস্থা

হাইভোল্টেজ ঢাকা-১৮ : হাবীব হাসানেই দলের আস্থা
গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীব হাসান - ফাইল ফটো।

টানা তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-১৮ আসনের সাংসদ হিসেবে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছিলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের বর্ষীয়াণ নেত্রী প্রয়াত এডভোকেট সাহারা খাতুন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের অভিজ্ঞ এই রাজনীতিকের মৃত্যুতে অভিভাভবহীন হয়ে পড়ে আসনটি। যার প্রেক্ষিতে দেশের আরো চারটি সংসদীয় আসনের মত উক্ত শূন্য আসনটিতেও সাংবিধানিক নিয়মানুসারে উপ-নির্বাচন ঘোষিত হয়।

আসন্ন উপ-নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা-১৮ আসনে প্রয়াত সাংসদ সাহারা খাতুনের উত্তরসূরি হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীতা লাভের আশায় দলীয় মনোয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেন মোট ৫৬ জন প্রার্থী। ক্ষমতাসীন দলের মনোয়ন অর্জনে এত বিপুল সংখ্যক প্রার্থীতা প্রত্যাশিদের সরব উপস্থিতিতে ৫টি আসনের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে উঠে আসে ঢাকা-১৮।

সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আসন্ন উপ-নির্বাচনে দলের প্রতি নিবেদিত, দীর্ঘ পরিসরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এমন সৎ, নির্ভরযোগ্য ও সক্রিয় রাজনৈতিক নেতাদেরই প্রার্থীতা প্রদানের কথা আগেই জানিয়েছিলো ক্ষমতাসীন দলটি। যার প্রেক্ষিতে জানা যায়, আসন্ন উপ-নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীব হাসান।

এখন পর্যন্ত পাবনা-৪ আসনের উপ-নির্বাচন ছাড়া অন্যান্য আসনগুলোতে দলীয় প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা হলেও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে৷ তবে আসনগুলোতে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এরইমধ্যে নাম প্রকাশ্যে আসা এসকল প্রার্থীদের ব্যাপারে শুরু হয়েছে বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধান।

স্বাভাবিকভাবেই ৫৫ জন মনোয়ন প্রত্যাশিকে পেছনে ফেলে আসন্ন উপ-নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হওয়া হাবীব হাসানের নামটিই এক্ষেত্রে রয়েছেন লাইম লাইটে।

ঢাকা মহানগ উত্তর আওয়ামী লীগের এই অভিজ্ঞ রাজনীতিকের প্রসঙ্গে স্থানীয় সূত্রের বরাতে পাওয়া তথ্য মতে জানা যায়, প্রয়াত সাংসদ এডভোকেট সাহারা খাতুনের আশীর্বাদপুষ্ট একান্ত ঘনিষ্ট ও আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীব হাসান দলীয় ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তৎপর ও বিচক্ষণ একজন নেতা হিসেবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ রাজনীতিক হিসেবে বরাবরই প্রশংসিত তিনি। তবে হাবীব হাসান সম্পর্কে যে বিশেষ তথ্যটি জানা যায় তা হলো, রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে দলীয় পদ-পদবির জন্যে কখনই হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তকে অবজ্ঞা করেননি তিনি। বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও তার সক্রিয়তা উল্লেখযোগ্য বলে জানা যায়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতারা জানান, বরাবরই নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন নেতা হিসেবে নয় বরং নিবেদিত কর্মী হিসেবেই মূল্যায়ণ করে আসা এই অভিজ্ঞ রাজনীতিক রাজপথের প্রতিটি সংগ্রামে ছিলেন সরব। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং ক্লিন ইমেজই সম্ভবত দলের সুদৃষ্টি আকর্ষণে বিশেষ নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

তারা জানান, মুজিববর্ষ উদযাপনের মত একটি বিশেষ উপলক্ষকে সামনে রেখে স্থানীয় প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই প্রত্যক্ষভাবে কার্যক্রম তদারক করেছেন হাবীব হাসান। তাছাড়া চলমান করোনা পরিস্থিতির মাঝে প্রধানমন্ত্রীর আপদকালীন উপহার বিতরণ ও সাংগঠনিক পর্যায় থেকে স্থানীয় জনসাধারণের প্রতি নিবেদিতভাবে সহায়তা প্রদানে তার ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।

নিজের মনোয়ন প্রাপ্তি প্রসঙ্গে হাবীব হাসান জানান যে, এখনই এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু বলার সময় আসেনি। দলীয় বিষয়, দলের হাইকমান্ডই সুনির্দিষ্ট সময়ে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবেন বলেও জানান তিনি।

অভিজ্ঞ এই আওয়ামী লীগ নেতা আরো জানিয়েছেন যে, এ বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই তার কাছে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবেচনায় প্রার্থী হিসেবে যোগ্য বিবেচিত হলে, দল ও দলীয় নেতৃত্বের আস্থা বজায় রেখে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে সরকারের তরফ থেকে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টা করবেন তিনি।

তার ভাষ্য মতে, আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শকে আমার পাথেয় করেছি। কারণ জাতির পিতার রাজনৈতিক দর্শনের অনুসারী না হয়ে বাংলাদেশকে ও তার মানুষকে ভালোবাসা অসম্ভব।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়ণের রাজনৈতিক তত্ত্বে নয় বরং গণমানুষের রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনায় আত্মনিবেদনে বিশ্বাসী যার প্রত্যক্ষ প্রতিফলন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার রাজনৈতিক চর্চায় সুস্পষ্ট।

গণতান্ত্রিক মুক্তি ও গণমানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে প্রতিটি সংগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজপথে লড়াই করেছি। আগামীতেও নেত্রীর নির্দেশিত পথেই আমার রাজনৈতিক পথচলা অব্যাহত রাখবো, সেক্ষেত্রে তিনি যে দায়িত্ব দেবেন আমি তা সততার সঙ্গে পালনে প্রতীজ্ঞ।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গত রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মুহাম্মদ ফারুক খান।

এসকে