• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০১৯, ১০:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০১৯, ০৯:৪৪ পিএম

হজ পালনে ওমরাহ’র চেয়ে খরচ বাড়ে সাড়ে তিনগুণ

হজ পালনে ওমরাহ’র চেয়ে খরচ বাড়ে সাড়ে তিনগুণ
হজ ফ্লাইটে হজযাত্রীরা; ফাইল ফটো


সাধারণত ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় ওমরাহ পালন করা গেলেও পবিত্র হজ পালনে খরচ বেড়ে যায় প্রায় সাড়ে তিনগুণ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের প্যাকেজ অনুযায়ী প্রত্যেক হজযাত্রীর হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ পড়বে (প্যাকেজ-২) ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।  অপরদিকে প্যাকেজ ১-এ খরচ পড়বে ৪ লাখ ১৮ হাজার ৫শ’ টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে খরচ পড়বে প্যাকেজ ২-এর চেয়ে বেশি।

হজে ওমরাহর চেয়ে সাড়ে তিনগুণ বেশি খরচ হওয়া প্রসঙ্গে সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। আর বাড়তি খরচের ব্যাপারে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম জানালেন,  হজ ফ্লাইটের যাওয়া আসার পথে খালি সিটের ভাড়াও গুণতে হয় মুসল্লিদের। এ কারণেই খরচ অনেক বেড়ে যায়। 

বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের কাছে ওমরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর প্যাকেজ অফার অনুযায়ী ওমরাহ পালনে খরচ পড়ে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। সময় পাওয়া যাবে ৮ থেকে ১০ দিন। এই খরচ আরো কমে আসে যদি ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর সহযোগিতা ছাড়া ওমরাহ পালন সম্ভব হয়।   

সরকারের পক্ষ থেকে গত মাসের প্রথম দিকে চলতি বছরের জন্য হজ প্যাকেজ ২০১৯ ঘোষণা করা হয়। এই প্যাকেজে অনুযায়ী সরকারি ব্যবস্থাপনার মুসল্লিদের জন্য প্যাকেজ ১-এর খরচ নির্ধারণ করা হয় ৪ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। 

প্যাকেজ ২-এর খরচ নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের হজ প্যাকেজের খরচ সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-২ এর কম হতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে খরচ ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকার বেশি পড়বে।

সরকারের ঘোষিত প্যাকেজ অনুযায়ী সর্ব নিম্ন খরচে (প্যাকেজ- ২) দেখা যায়  বিমান ভাড়া- ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, সৌদি আরবে মক্কা-মদিনার বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য- ১ লাখ ৬ হাজার ৬০৫ টাকা, সৌদি আরবে প্রদেয় বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ ও পরিবহন ভাড়া- ৪০ হাজার ৮৮২ টাকা, উন্নতমানের বাস ভাড়া-২ হাজার ২৫০ টাকা, জমজম পানি- ২৫৯ টাকা, অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ (মক্কা, মিনা ও আরাফায় খাবার/নাস্তা)- ২৮ হাজার ৩৫০ টাকা। এছাড়া তাবুতে ম্যাট্রেস, বিছানার চাদর, কম্বল, ওয়াটার কুলার, জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে মক্কা যাওয়ার সময় আপ্যায়ন, ল্যাগেজ পরিবহন ও ভ্যাটসহ মোট খরচ-৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।    

গত মাসে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উত্থাপিত হজ প্যাকেজ ২০১৯ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ আগস্ট হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ৭ হাজার ১৯৮ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায়। বাকিরা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন। 

হজ পালনে ওমরাহ’র চেয়ে সাড়ে তিনগুণ খরচ বেশি পড়ার বিষয়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘হজ পালনে ওমরাহ’র চেয়ে সাড়ে তিনগুণ খরচ বেশি এটা সত্য। তবে কেন, এর যথার্থ যুক্তি আছে। সবচেয়ে বেশি খরচ বাড়ে বিমান ভাড়ায়। হজে বিমান ভাড়া পড়ে- ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। অন্য সময় বিমান ভাড়া পড়ে- ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্রশ্ন করতেই পারেন কেন বিমান ভাড়া তিনগুণ? ওমরাহ’র সময় বিমান ভরে যাত্রী যায় সৌদি আরবে। আর আসার সময়ও যাত্রী ভরে আসে। আর হজ ফ্লাইটে বিশেষ ফ্লাইট হিসেবে সব সিট পূর্ণ করে মুসল্লিদের নিয়ে যাওয়া হয় এবং ফ্লাইটটি সৌদি আরব থেকে খালি আসতে হয়। আবার হাজীদের ফেরত আসার সময়ও একই অবস্থা। অর্থাৎ হাজীদের পূর্ণ করে নিয়ে আসার পর ফেরত যায় খালি ফ্লাইট। এ কারণেই বিমান ভাড়া বেড়ে যায়। অন্য খাতগুলোও একই ভাবে বেড়ে যাওয়ায় খরচ সাড়ে তিনগুণ হয়।’ বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের সরকার এ নিয়ে আলোচনায় বসলে খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব বলেও মনে করেন হাব মহাসচিব।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী দৈনিক জাগরণকে এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ আমরা বিষয়টি নিয়ে আমাদের হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে বসবো। পরে সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে কবে নাগাদ আলোচনা করবেন, সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি প্রতিমন্ত্রী।   

এমএম/আরআই