• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ১৩, ২০১৯, ০৮:২০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৩, ২০১৯, ০৮:২০ এএম

আজ ৭ম রমজানুল করিম 

মর্যাদা ও মহাগৌরবের প্রতীক ‘কোরআনে হাফিজ’

মর্যাদা ও মহাগৌরবের প্রতীক ‘কোরআনে হাফিজ’

পবিত্র কোরআন শরীফের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সহীহ শুদ্ধভাবে যাদের মুখস্থ আছে তারাই হলেন হাফিজ সম্প্রদায়। হাফিজে কোরআনরা পবিত্র কোরআনে করিমের এক উজ্জ্বল প্রামাণ্য মজিজা। 

রমজান কোরআন নাজিলের মাস। দেশজুড়ে বিভিন্ন মসজিদে খতমে তারাবি পড়ানোর জন্য রমজান শুরু হওয়ার কমপক্ষে একমাস আগে থেকেই মসজিদ কমিটির কর্তা-ব্যক্তিরা হাফিজ সাহেবদের সন্ধান শুরু করেন। মুসলিম মিল্লাতের জন্য একজন কোরআনে হাফিজ অনেক বড় মর্যাদা ও মহাগৌরবের প্রতীক। 

কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ-তিতিক্ষার পর হাফিজে কোরআনরা কোরআন শরীফ মুখস্থ করেন এবং নিয়মিত তেলাওয়াতের মাধ্যমে আজীবন মুখস্থ রাখেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে হাফেজ বা হাফিজ সাহেবরা অবহেলিত। কোরআন নাজিলের পর থেকে অদ্যাবধি কতজন হাফিজে কোরআন হয়েছেন তার সঠিক কোনো হিসাব নেই। 

রাসূলে করিম (সা.) এর অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরামগণ হাফেজে কোরআন ছিলেন। রাসূল (সা.) এর ওফাতের পর হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এর শাসনামলে ইয়ামামার যুদ্ধে ৭০ জন হাফিজে কোরআন সাহাবায়ে কেরাম শাহাদাৎবরণ করলে হযরত ওমর (রা.) এর নেতৃত্বে কোরআনের বর্তমান পাণ্ডুলিপি তৈরি হয়, যা পরিপূর্ণভাবে হযরত ওসমান (রা.) এর আমলে শেষ হয়।

অধিকাংশ তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ী, মুফাচ্ছির, মুহাদ্দিছ, ফকিহ মুজতাহিদ ও আলেমই হাফিজে কোরআন ছিলেন। হাফিজে কোরআনরা আল্লাহ এবং রাসূল (সা.) এর অতিপ্রিয় ও সম্মানিত। মহান রাব্বুল আলামিন হাফিজে কোরআনের নূরে আলোকিত করবেন তাদের কবরকে। কেয়ামতের দিন কোরআনে হাফিজ ও তার মা-বাবাকে নূরানি তাজ পরিয়ে উঠাবেন। ইসলামে হাফিজে কোরআনদের এত সম্মান- মর্যাদা হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের দেশে তাদের বিশেষ কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। 

দেশের বিভিন্ন শ্রেণির নাগরিকদের জন্য সরকারি-বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে বিশেষ কোটা নির্ধারিত থাকলেও সৎ আদর্শবান ও বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন হাফিজে কোরআনদের জন্য কোন বিশেষ কোটা বা অগ্রাধিকরে নেই। নির্দিষ্ট একটি কর্মসংস্থানের অভাবে তাদের অনেককেই সীমাহীন দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জাতির বিশেষ একটি শ্রেণিকে উপেক্ষা করে বৃহত্তর অংশের উন্নয়ন, উন্নতি ও অগ্রগতি কি আদৌ সম্ভব? হাফিজ তৈরির কারখানা হাফিজিয়া মাদ্রাসাগুলোর প্রতিও সরকারের খুব একটা নজর নেই। 

কোরআন নাজিলের পবিত্র এই রমজান মাসে অবহেলিত হাফিজ সমাজের ব্যাপারে সরকার যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মুসলিম জাতির অমূল্য রত্নদের দেশ ও জাতির সেবা ও কল্যাণে ব্যাপকভাবে আত্ম-নিয়োগের সুযোগদানের বিশেষ অনুরোধ রইল। তাই আমরা যেন পবিত্র কোরআনের হাফিজ সাহেবদের পূর্ণাঙ্গ হক আদায়সহ সার্বিক খেদমত করতে পারি-ওমা তাওফিকি ইল্লা বিল্লা। 

এসএমএম/টিএফ