• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০১৯, ০৮:২৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৪, ২০১৯, ০২:৩২ পিএম

আজ ৮ম রমজানুল করীম

রোজার আধ্যাত্মিক অলঙ্কার ‘তারাবি নামাজ’ 

রোজার আধ্যাত্মিক অলঙ্কার ‘তারাবি নামাজ’ 

মাহে রমজানের বিশেষ আকর্ষণ- সালাতুত তারাবি। রাহাতুন শব্দ থেকে তারাবি শব্দটি এসেছে যার অর্থ বিশ্রাম করা, আরাম করা। তারাবির নামাজ হলো সুন্নাতে মোয়াক্কাদা। মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনুল করীমে ঘোষণা করেন, হে বস্ত্রাবৃত রাত্রিতে দণ্ডায়মান হোন কিছু অংশ ব্যতিত অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম অথচ তদপেক্ষা বেশি এবং কোরআন আবৃত্তি করুন ধীরে ধীরে ও  সুস্পষ্টভাবে। (সূরা-মুজ্জাম্মিল, আয়াত নং- ১-৪)।

বলা যায়, এটি রমজান মাসের রোজার আধ্যাত্মিক অলঙ্কার ও সৌন্দর্য। রমজানের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর পরই শুরু হয় এ নামাজ। মুসল্লিদের ঢল নামে মসজিদে মসজিদে। যারা অবহেলায় এতদিন ঠিকমত নামাজ আদায় করেনি তারাও সারিবদ্ধ হন নামাজের কাতারে। এশার নামাজে উপচেপড়া ভিড় হয় প্রত্যেকটি মসজিদে। দু-রাকাআত করে দীর্ঘ ২০ রাকাআত নামাজ আদায় করতে হয়। দু-রাকাআতে এক নিয়ত এবং চার রাকাআত পর পর একটু বিশ্রাম ও বিরতি। এই ফাঁকে হাফিজ সাহেব ও মুসল্লিরা তারাবির বিশেষ দো’আ ও মোনাজাতের মাধ্যমে আর্তি জানায় তার মহিমা ও গুণগান প্রকাশের মাধ্যমে বেহেশতের সৌভাগ্য আর দোজখ হতে মুক্তি লাভের জন্য।

বছরের অন্য সময় নামাজ আদায় করা হয় কয়েকটি আয়াত বা নাতিদীর্ঘ সূরা পাঠের মাধ্যমে তা অনেক সময় মনে হয় ক্লান্তিকর। কিন্তু রমজানে তারাবির নামাজে পাঠ করা হয় পুরো কোরআন শরীফ। হাফিজ সাহেব প্রতিদিন দেড়পারা বা একপারা করে তেলাওয়াত করে খতম করেন ২০ রাকাআতে। এভাবে ২৭ দিনে এক খতম কোরআন শরীফ পাঠ শেষ হয়ে যায়। 

মুসল্লিরা হৃদয় মন নিবিষ্ট করে শুনেন এই তেলাওয়াত। এতো দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে ক্লান্তি আসার কথা। অথবা রাতের বেলা ঘুমের কোলে ঢলে পড়ার আশঙ্কা? কিন্তু না, কোন ক্লান্তি নাই। এক অনাবিল পবিত্র আনন্দ যেন সবার অন্তরে ছোঁয়া দিয়ে যায়। ফলে ইফতারের পর পর তারাবিহর নামাজের শুরুতে একটু ক্লান্তি মনে হলেও নামাজের শেষ ভাগে শরীর মনে হয় একেবারে হালকা হয়ে যায়। আল্লাহের এশকে মন বিভোর হয়ে যায়। ক্লান্তি অবসাদের চিহ্ন নেই কারো চেহারায়। মনে ঘুমে নয় বিনিদ্রার মধ্যে আনন্দ। এভাবে সারা রাত বিনিদ্রায় কাটাতে পারলেই আমাদের মাঝে ইহকাল এবং পরকালের সুখ আসবে ইনশা আল্লাহ। 

সারা দিন পরিশ্রম তার পর উপাস, প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত, সন্ধ্যায় ইফতার করার পর শরীর যেন ভেঙ্গে পড়ে বিছানার একটুখানি পরশ চায়। কিন্তু ঘণ্টাখানিকের মধ্যেই ডাক পড়ে এশার ফরজ ও তারাবির জন্য মসজিদের মিনারে ধ্বনিত হয় এশার আজান।ক্ষুধা-ক্লান্ত রোজাদার ব্যক্তি আজানের ডাকে যেন এক অব্যক্ত শক্তির সন্ধান পায়। যে ব্যক্তি দিনের বেলা সিয়াম পালন করবে আর রাতের বেলা কিয়াম অর্থাৎ তারাবির নামাজ পড়বে, সে ব্যক্তি ঈমান এবং এহতেছাবের সঙ্গে সে তার জননী যেদিন তাকে জন্ম দিয়েছিলেন সেদিনকার মতো গোনা থেকে পবিত্র হয়ে যাবে। (ইবনে মাযা শরীফ)

এসএমএম/টিএফ