• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০১৯, ০৮:১৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৭, ২০১৯, ০৮:১৯ এএম

আজ এগার রমজানুল করীম

মাগফেরাত লাভের পালা শুরু 

মাগফেরাত লাভের পালা শুরু 

আমাদের নিকট থেকে বিদায় নিয়েছে রহমতের প্রথম ১০টি দিবস। 

আজ থেকে শুরু হলো আল্লাহের অশেষ দয়ার ভাণ্ডার থেকে মাগফেরাত লাভের পালা। 

নবীয়ে করীম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সহিত রমজান শরীফের রোজা রাখে। তার পূর্বের সমস্ত গোনাহ সমূহকে আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন মাফ করে দেন। এখানে দুটি শর্ত দেয়া হয়েছে, যারা এ দুটি শর্ত পালন করবে তাদের গোনাহ আল্লাহপাক মাফ করে দিবেন। 

০১. ঈমান থাকতে হবে, ঈমানের অর্থ বিশ্বাস স্থাপন, আকঁড়ে ধরা, বুঝা। অর্থাৎ আমি যে একজন মুমিন হিসেবে মহান রাব্বুল আলামিনের প্রতি ঈমান এনেছি। সেই ঈমানের পিছনে কতটুকু মেহনত করেছি। আমার ঈমান কতটুকু মজবুত, আমার ঈমান সঠিক আছে কি না তা বুঝে নেয়া। 

০২. ইহতিসাব অর্থ মনে মনে হিসেব করে দেখতে হবে যে, মূল শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য আল্লাহপাক রোজাকে ফরজ করেছেন, সেই মূল শিক্ষাটা আমি গ্রহণ করছি কিনা। অর্থাৎ রোজার মাসে দিনের বেলায় যেমন আল্লাহের হুকুম নেই বলেই খানাপিনা ও স্ত্রীদের সাথে সহমিলন থেকে দূরে থাকি। ঠিক তেমনি সমাজের যাবতীয় ভুল বা আল্লাহ বিরোধী আইন-কানুন যদি পরিত্যাগ করে আল্লাহেরই আইন-কানুন মেনে চলার মত মন তৈরি করতে না পারি তাহলে এ রোজায় কাজ হবে না। মানুষ যা খায় তার থেকে যদি পরিপাক যন্ত্রের মাধ্যমে খাদ্যে প্রাণ বা খাদ্যের মধ্যে যে ভিটামিন মানুষের দেহের ক্ষয় পূরণ ও দেহকে সুস্থ রাখার মত যে উপাদান আছে তা বের করে নিয়ে শরীরের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে অক্ষম হয়, তবে ওই খাদ্যে যেমন দেহের উপকার হয় না, ঠিক রোজার মৌলিক শিক্ষা যদি সমাজ জীবন বা সামগ্রিক জীবনের সর্বত্র কার্যকরী না হয় তবে ওই রোজার কোন ফায়দা হবেনা। 

এসব কথা হিসেব করে দেখার নামই হচ্ছে ইহতিসাবের সাথে রোজা রাখা। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবীয়ে করীম (সা.) বলেছেন যে, আদম সন্তানের প্রত্যেকটি নেক আমালের সওয়াব নিম্নে দশগুণ হতে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। 

আল্লাহপাক বলেন, তবে রোজা ব্যতীত। কারণ রোজা আমার জন্যই হয়ে থাকে, তাই এর বদলা আমি নিজেই দিবো। যেহেতু বান্দা আমার জন্যই তার কামনা বাসনা ও খানা-পিনা ত্যাগ করেছে (মুসলিম শরীফ)।

হযরত আবু উমামা বাহিলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীয়ে করীম (সা.) বলেছেন, আমি শুয়েছিলাম এমতাবস্থায় আমার নিকট দুজন ফেরেশতা আসলেন। তারা আমাকে সাথে নিয়ে একটি পাহাড়ের নিকট গেলেন। তারা উভয়েই আমাকে বললেন পাহাড়ে আরোহণ করুন। আমি বললাম তাতে আরোহণ করা আমার জন্য একটু কঠিন হবে। তারা বললেন আমরা আপনার জন্য তা সহজ করে দিবো। তখন আমি সেখানে আরোহণ করলাম, এমনকি আমি পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে গেলাম। সেখানে আমি কঠিন চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম এ আওয়াজ কিসের তারা আমাকে বললেন এটা হলো জাহান্নামিদের কান্নাকাটির আওয়াজ। অতঃপর তারা আমাকে নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলেন। সেখানে আমি কিছু লোক উল্টো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখলাম যাদের মুখ ফাটা এবং রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা? তারা আমাকে বললেন এরা ওই সকল লোক যারা রোজার দিন সময় হওয়ার আগেই ইফতার করে নিতো অর্থাৎ তারা যথা নিয়মে রোজা পালন করতো না। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন আমাদিগকে যথা নিয়মে রোজা রাখার তৌফিক দান করুন।

এসএমএম/টিএফ