• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২০, ২০১৯, ০৮:০৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২০, ২০১৯, ০৮:০৯ এএম

রমজানের ১৪তম দিন আজ 

চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে রমজান 

চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে রমজান 

ইসলামের আদেশ-নিষেধ পালন করলে ইহকাল এবং পরকালে কল্যাণ হয় এ কথা আমাদের সবারই জানা। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিনের প্রতিটি আদেশ নিষেধ পালনের মধ্যে ব্যক্তি জীবন, সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিহিত রয়েছে কল্যাণ ও উপকারিতা। রোজা তেমনি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী বিধান। স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে রোজা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

মানবদেহের নির্মাতা স্বয়ং আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন ভাল করে জানেন শরীরকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখার জন্য এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য কি ব্যবস্থা নিতে হবে। উক্ত ব্যবস্থার অংশ হিসাবে তিনি বছরে একমাস রোজা রাখা ফরজ করেছেন। বিভিন্ন প্রকারের রোগ নিরাময়ের জন্য রোজার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। এ সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. আলেক্স হেইগ বলেন, রোজা শরীরের রক্ত প্রবাহকে পরিশোধন করে থাকে এবং সমগ্র প্রবাহনালীকে নবরূপ দান করে থাকে। 

রোজা উচ্চ রক্তচাপ ব্যাধি এবং অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা গেছে, রোজা রাখার ফলে ডায়াবেটিক রোগীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে, তাদের সুগার নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। হৃদরোগীদের অস্থিরতা ও স্বাস স্ফীত হ্রাস পেয়েছে। রোজার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় পাকস্থলির রোগীরা। রোজা গ্যাস্ট্রিক ও আলসার এবং তজ্জনিত পাকস্থলির দাহ্যতা ও এর প্রদাহ তাড়াতাড়ি উপশম করে। পাকস্থলী একটি বৃহদাকার পেশী বিশেষ।শরীরের অন্যান্য পেশীর মত এরও বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। একমাস রোজা রাখার ফলে পাকস্থলি ও অন্ত্র বিশ্রাম নেয়ার সময় পায় তখনি তা ক্ষতস্থান বা আলসার নিরাময়ে লেগে যায় এবং পূর্বাবস্থা পুনরুদ্ধারে নিয়োজিত হয়। 

যারা মনে করেন, রোজা রাখলে পেটের শুল-বেদনা বৃদ্ধি পায়, তাদের এ ধারণা সঠিক নয়। কয়েকজন রোজাদারের পেটের রস পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যাদের পাকস্থলিতে অ্যাসিড খুব বেশি বা কম রোজা রাখার ফলে তাদের উভয় দোষই সেরে গেছে। উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুস ক্যান্সার ও হৃদরোগ থেকে বাঁচার জন্য ধূমপান ত্যাগ করা একান্ত পরিহার্য। রোজা ধূমপান থেকে বিরত থাকার একটি সূবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। তাছাড়া পূর্ণ একমাস রোজা রাখার ফলে লিভার, কিডনি ও মূত্রথলি প্রভৃতি অঙ্গসমূহ বিশ্রাম পায়। এতে অঙ্গগুলো বেশ উপকারিতা লাভ করে। কিডনি ও মূত্রথলির নানা উপসর্গ রোজার ফলে নিরাময় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। 

চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. আলেক্স হেইগ বলেছেন, রোজা হতে মানুষের মানুষিক শক্তি বিশেষ অনুভূতিগুলো উপকৃত হয়। স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়, মনসংযোগ ও যুক্তিশক্তি বর্ধিত হয়। প্রীতি, ভালবাসা, সহানুভূতি এবং আধ্যাত্মিক শক্তির উন্মেষ ঘটে। ঘ্রাণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি প্রভৃতি বেড়ে যায় এবং খাদ্যের অরুচি দূর হয়। 

শারীরিক কতগুলো ব্যাধির উৎস হচ্ছে মানসিক অশান্তি। এ রোগসমূহকে বলা হয় সাইকোসোমেটিক ব্যাধি। মানুষ যদি রোজা রাখে তবে এসব ব্যাধি উপসর্গ কম হবার সম্ভাবনা থাকে। জৈবিক চাহিদাকে সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে রোজার প্রতিক্রিয়া অত্যাধিক। একবার জনৈক অতিদরিদ্র সাহাবি নবী করিম (সা.) এর নিকট বিবাহ করার জন্য আরজি পেশ করেছিলেন। নবী করিম (সা.) তাকে রোজা রাখার জন্য বলেছিলেন। যদি বিবাহ করার সামর্থ্য না থাকে তাহলে তোমরা রোজা রাখ।

এসএমএম/টিএফ