• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯, ০৭:১৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯, ০৭:১৫ পিএম

তাজিয়া মিছিলে হামলাকারীদের ফাঁসি দাবি নিহত জামালের পরিবারের 

তাজিয়া মিছিলে হামলাকারীদের ফাঁসি দাবি নিহত জামালের পরিবারের 
রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল-ফাইল ছবি

হোসেনী দালানে তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন জামাল হোসেন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। তার বৃদ্ধ মা আয়েশা বিবি ডায়বেটিকসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জের পাগলায় ভাড়া বাসায় রয়েছেন। আর্থিক অনটনে মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছেন না নিহত জামাল হোসেনের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন। 

তিনি জানান, তার ভাই জামাল কসমেটিক ও লেইস ফিতাসহ নারীদের প্রসাধনী উপকরন পেরি করে বিক্রি করতেন্। ওইদিন তাজিয়া মিছিল বের হওয়ার মুহুর্তে হোসেনী দালানের প্রধান গেটের পাশে চেকিং রুমের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জামাল। এ সময় রাত ১টা ২২ মিনিট। তাজিয়া মিছিল গেট দিয়ে বের হচ্ছিল। এ মুহুর্তে পশ্চিমপাশের কবরস্থানে দিক থেকে জঙ্গিরা পর পর ৫টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে মিছিল লক্ষ্য করে। এ ঘটনায় প্রায় একশত লোক আহত হন। তাদের হাসপাতালে নেয়ার পর জামাল ও সঞ্জু মারা যান।

জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তার ভাই জামাল মারা যাওয়ার পর দাফন করার জন্য ৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিলো। এরপর থেকে গত ৪ বছর কেউ জামালের পরিবারের খোঁজ খবর নেয়নি। জামালের মা বোনসহ গোটা পরিবারের লোকজন আর্থিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। জাহাঙ্গীর দৈনিক জাগরণের এ প্রতিবেদককে বলেন, যারা এ গ্রেনেড হামলা চালিয়ে মানুষ খুন করেছে। তিনি তাদের ফাঁসি দাবি করেছেন। এছাড়া জামালের পরিবারকে যেন সরকার আর্থিক সহযোগিতা করেন এ দাবি করেছেন নিহত জামালের ভাই জাহাঙ্গীর আলম। 

জানা গেছে, রাত তখন পৌঁনে দুইটা। হঠাৎ একটি বিস্ফোরণের শব্দ হয়। শব্দ কম হওয়ায় ভাবছিলাম টায়ার বা টিউবলাইট বিস্ফোরণ হয়েছে। এর এক মিনিটের মধ্যে দ্বিতীয় এবং কয়েক সেকেন্ডের মাথায় তৃতীয় বোমাটির বিস্ফোরণ হয়। লোকজন আল্লাহু আকবার, হায় হোসেন, ইয়া আলী’ বলে চিৎকার করছিল। শেষ বোমাটি বিস্ফোরণ হয় ক্লিনিকের সামনে খাওয়ার পানির ট্যাংক ঘেঁষে। আর এতে স্প্লিন্টার বিদ্ধ হন তিনি, তার স্ত্রী ও সন্তান। লোকজন ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে জামাল হোসেনকে আইসিইউতে রাখা হয়। ঘটনার তিনদিনের মাথায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জামাল হোসেন। 

এবিষয়ে হোসনী দালান ইমামবাড়ার তত্ত্বাবধায়ক এমএম ফিরোজ হোসেন বলেন, আমরা কখনও কল্পনাও করিনি এ হামলা হতে পারে। এখানে শিয়া-সুন্নিসহ সব মতের মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান- সব ধর্মের মানুষ তাজিয়ায় শামিল হয়। এমন ঐতিহ্যের ওপর হামলাকারীরা ইসলাম ও দেশের শত্রু। আমাদের ৪০০ বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করাই ছিল হামলাকারীদের উদ্দেশ্য। তিনি আরও বলেন, পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলও ছিল। এরপরও এমন হামলা হল। কারা করেছে তা আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। তবে আমরা মনে করছি তারা ইসলামের শত্রু। আমরা সিয়া সম্প্রদায় এ সকল সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। 

এইচ এম/বিএস