• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৬:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৬:২৭ পিএম

মানবদেহ মরণশীল,মানব আত্মা মরণশীল নয়

মানবদেহ মরণশীল,মানব আত্মা মরণশীল নয়

পৃথিবীর সব প্রাণীর দেহ মরণশীল, কিন্তু রুহ বা আত্মা মরণশীল নয়। আমরা সাধারণত জগৎ বলতে ইহজগৎ এবং পরকালের জগৎ বুঝি। আসলে পরকালের জগৎ হলো কবরের জগত-আলমে বারজাখ, যেখানে মানব জাতি মৃত্যুর পর তাঁর দেহটাকে আলমে বারজাখ অর্থাৎ কবরের জীবন বসবাস, আর মৃত্যুর সাথে সাথে রুহটা চলে যায় আলমে আরওয়াহ অর্থাৎ রুহের জগতে। রুহ এবং দেহের পাঁজরের হাড়ের সংমিশ্রণে হয়তো ইল্লিন অর্থাৎ সুখময় জীবন হবে পরকালে অথবা দুঃখগাঁথা জীবন হবে সিজ্জিনে। বিচারের দিনে কিয়ামতের ময়দানে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে উঠবে কর্মের ফলে হয়তো পাবে শান্তিময় জীবন জান্নাতে, নয়তো বা শাস্তিময় জীবন জাহান্নামে।

 এ প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামীন বলেন, ওইয়াছ আলুনাকা আনীর রুহ, কুলির রুহমিন আমরি রাব্বী, ওয়ামা উতিতুম মিনাল ইলমি ইল্লা ক্বালিলা। তারা আপনাকে রুহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলে দিন রুহ আমার পালনকর্তার আদেশ ঘটিত। এ বিষয়ে তোমাদিগকে সামান্য জ্ঞান দান করা হয়েছে। তবে রুহ জগতের সাথে আলমে বারজাখের সম্পর্ক খুবই সুনিবিড়। রুহ যদি শান্তিময় হয় তাহলে আলমে বারজাখ বা কবরের জিন্দেগী শান্তি আরো শান্তিময় হবে। রুহ যদি শাস্তিতে থাকে তাহলে আলমে বারজাখেও  শুধু শাস্তি  আর শাস্তি। ইহকালে কোন অসুবিধা নেই, অসুবিধা হলো এবং ভয়ঙ্কর দিবস হলো কিয়ামত। 

পরকালে এ ভয়ঙ্কর শাস্তি থেকে রক্ষা পেতেই আল্লাহর উপাসনা এবং গুণকীর্তন অতীব জরুরি। মহান রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন যে, ফাজ কুরুনি আজর্ক্কুম, ওয়াস কুরুলি ওয়ালা তাকফুরুন। তোমরা আমার জিকির করো (স্মরণ করো) আমিও তোমাদিগকে স্মরণ করবো। তোমরা আমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো আমি তোমাদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবো। (আল কোরান)
আল্লাহর গুণকীর্তনে অন্তরলোকময় শান্তি এবং ফেরেশতাসুলভ আচরণ হয় রুহ জগতের। শ্বাস- প্রশ্বাসের সাথে আল্লাহর গুণকীর্তন করার ফলে ব্যক্তি সত্তার রুহের মাঝে এক বিরাট শক্তি সঞ্চালিত হয়। যা আল্লাহর মর্জি অনুসারে রুহ এবং দেহের উপর শাসন ক্ষমতা চালাতে সক্ষম হয়। মানবদেহের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মৃত্যু হয়, কিন্তু রুহটা জীবিত থাকবে অনন্তকাল যার কোন মৃত্যু নেই।

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয় এমন সব  পুণ্যময় কাজ করতে পারলে এবং আল্লাহর নিষিদ্ধ সকল পাপাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারলে ইহকাল, পরকাল, আলমে বারজাখ, আলমে আরওয়াহ, ইয়াত্তমুল কিয়ামাহতে আপনাদের সবার দেহ এবং রুহ আল্লাহর অগণিত রহমতে জান্নাতি হতে পারে। কারণ আল্লাহ হলেন অতিশয় দয়ালু, তিনি ক্ষমাশীল।

লেখক : সাবেক ইমাম ও খতিব, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ