• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯, ০৩:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯, ০৩:২১ পিএম

পদ্মা সেতুর আদলে গড়ে তোলা মঞ্চে প্রতিমা

পদ্মা সেতুর আদলে গড়ে তোলা মঞ্চে প্রতিমা

একটা সময় ছিল যখন দুর্গা পূজা মানেই দুর্গা, অসূর, কার্তিক গনেশ, লক্ষী, সরস্বতির প্রতিমা স্থাপন। এখন আর গুটি কয়েক প্রতিমার ধ্যান ধারণা থেকে সনাতন ধর্মালম্বীরা প্রতিমা তৈরির ও স্থাপনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছে ধর্মীয় বিভিন্ন পূরাণিক কাহিনী। এমন উদ্যোগ নিয়েছে এবার দুর্গা পূজা উৎসবে ডুমুরিয়া কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি ও মঠ কর্তৃপক্ষ। তারা মন্দিরে স্থাপন করেছে ১২৫টির মত প্রতিমা। আর সেগুলো স্থাপন করেছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি মঞ্চের উপর। প্রায় দুই মাস ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। এখনই প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষেরা সেগুলো দেখতে আসছে।

ডুমুরিয়া সদরের প্রাচীন হাটের দক্ষিণ পাশে ভদ্রা নদীর পাড়ে প্রতিষ্ঠিত ডুমুরিয়া কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি ও মঠ। সেখানকার প্রাচীর ঘেরা মন্দিরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি করা অর্ধডিম্বাকৃতির মঞ্চ। সেই মঞ্চের পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্ত থেকে উত্তর দিকে প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। একটি প্রতিমা একটি পূরাণিক ইতিহাস। দুই একদিনের মধ্যেই সকল কাজ শেষ হবে বলে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এছাড়া মন্দিরের দুর্গা পূজার প্রধান আকর্ষণ দুর্গাদেবীর প্রতিমা তৈরি করা হযেছে। সেখানে দুর্গা, অসুর, কার্তিক গনেশ, লক্ষী, সরস্বতির প্রতিমার পাশাপাশি তাদের বাহন সিংহ, মহিষ, মহিষ, ময়ূর, ইঁদুর, পেঁচা, রাজহাঁস স্থাপন করা হয়েছে। সেগুলোর রংয়ের মাধ্যমে জীবন্ত রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মূল মন্দিরে এসব পাশিাপাশি আরও কমপক্ষে ২৫টি প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে যা পুরাণিক কাহিনীকে কেন্দ্র করে তৈরি করা। 

এ সকল প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার ভাস্কর অনীল কুমার ভাস্কর। তিনি ৫ জন সহকারী নিয়ে দিনরাত কাজ করে চলেছেন। তিনি বলেন, একটা সময়ে শুধুমাত্র দুর্গাদেবী ও তার সন্তানদের প্রতিমা স্থাপন করা হত। দুর্গা দেবীর ভাগ্নে অসুরকে বধকেই বোঝানো হত। কিন্তু বেশ কয়েক বছর যাবত সনাতন ধর্মালম্বীদের পুরাণিক কাহিনী সম্বলিত প্রতিমা স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পুরাণিক কাহিনী পড়ে সেসব দেব-দেবীর চেহারা কল্পনা করে এসব প্রতিমা তৈরি করা হয়। 

ডুমুরিয়া কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি মঠ ও মন্দির কমিটির যুগ্ম আহবায়ক তুষার কান্তি দত্ত জানান, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার পদ্মা সেতুর উপর মঞ্চ তৈরি করে তার উপর প্রতিমা স্থাপন করতে হবে। আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য পরিতোষ কুমার বৈরাগী জানান, আমাদের সন্তানেরা ধর্মীয় কাহিনী এখন শুনতে চায় না পড়তেও চায় না। তাই পুরাণিক সেসব দেব-দেবীকে তাদের সামনে পরিচিত করতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাপস কুমার রাহা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেতু পদ্মা সেতু। সেই সেতুর কাজ এগিয়ে দ্রুত গতিতে। আমরা পরিচিত করতে পদ্মা সেতুর আদলে মঞ্চ তৈরি করেছি। 

ডুমুরিয়া উপজেলায় এবার ১৯৮টি মন্দিরে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে বলে জানিয়েছেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোবিন্দ ঘোষ। এরমধ্যে ধামালিয়া ইউনিয়নে ৮টি মন্দিরে, রঘুনাথপুর  ইউনিয়নে ২১টি মন্দিরে, রুদাঘরা ইউনিয়নে ১২টি মন্দিরে, খর্ণিয়া ইউনিয়নে ১৩টি মন্দিরে, আটলিয়া ইউনিয়নে ১৯টি মন্দিরে, মাগুরাঘোনা ইউনিয়নে ৭টি মন্দিরে, শোভনা ইউনিয়নে ১৮টি মন্দিরে, শরাফপুর ইউনিয়নে ১২টি মন্দিরে, সাহস ইউনিয়নে ৭টি মন্দিরে, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নে ১২টি মন্দিরে, ডুমুরিয়া ইউনিয়নে ১১টি মন্দিরে, রংপুর ইউনিয়নে ২৬টি মন্দিরে, গুটুদিয়া ইউনিয়নে ১৮টি মন্দিরে ও মাগুরখালি ইউনিয়নে ১৪টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। 

দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ডুমুরিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে সনাতন ধর্মালম্বীরা দুর্গাপূজা উদযাপন করবে। প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক আনসার বাহিনীর নারী ও পুরুষ সদস্য থাকবে। এছাড়া মন্দিরের পক্ষ থেকেও নিজস্ব নিরাপত্তারর জন্য স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরাও দায়িত্বপালন করবে।

কেএসটি

আরও পড়ুন