• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৭, ২০২০, ০২:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৭, ২০২০, ০২:৫২ পিএম

অবশেষে করোনার ভয় ভুলে মসজিদে মুসল্লিরা

অবশেষে করোনার ভয় ভুলে মসজিদে মুসল্লিরা
প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়কে দূরে ঠেলে মসজিদের জামাতে নামাজ পড়া শুরু করেছেন মুসল্লিরা। সরকার অনুমতি দেয়ার পর বৃহস্পতিবার (৭ মে) জোহরের ওয়াক্ত থেকে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় শুরু করেছেন সাধারণ মুসল্লিরা।

এর আগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারাদেশে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ৪ এপ্রিল এবং ২৩ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমা এবং রমজান মাসের তারাবির জামাত সীমিত আকারে আদায়ের জন্য নির্দেশনা দেয়।

পরবর্তীতে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামারা পবিত্র রমজানুল মোবারক মাসের গুরুত্ব বিবেচনা করে মসজিদে নামাজ আদায়ের শর্ত শিথিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। তারই প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার জোহরের ওয়াক্ত থেকে মসজিদে জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার অনুমতি দেয় সরকার।

বৃহস্পতিবার বায়তুল মোকাররমে জোহরের নামাজ আদায় ক্রুতে আসা মুসল্লিদের অনেকেই জানান, মসজিদে নামাজ পড়ে যে শান্তি পাওয়া যায়, ঘরে নামাজ পড়ে সেই শান্তি পাওয়া যায় না। তাই করোনা নিয়ে ভয় থাকলেও মসজিদে নামাজ পড়তে এসেছেন তারা। তবে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনেই মসজিদে নামাজ আদায় করা হয়েছে।

বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করা এক মুসল্লি বলেন, আমরা যারা নামাজি তারা যেন একটা অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলাম। আজ থেকে মন খুলে মসজিদে আসার পরিবেশ শুরু হয়েছে। আশা করি এটা অব্যাহত থাকবে। আশা করি আমরা সবাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলবো। সরকারের এই সিদ্ধান্ত যেন মুসল্লিদের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় আমাদের সেদিক অবশ্যই নজর রাখতে হবে।

উত্তরার বিভিন্ন মসজিদেও মুসল্লিদের জামাতে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। ৭ নং সেক্টর পার্ক সংলগ্ন জামে মসজিদে নামাজ আদায় বাদেমহিবুল হক দৈনিক জাগরণকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে জনস্বার্থে সরকার থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেকদিন মসজিদে নামাজ আদায় করা হয়নি। এখন সরকার মসজিদে নামাজ আদায় করার অনুমতি দিয়েছে। তাই মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করলাম। অনেক ভালো লাগছে। আমরা সচেতনভাবে না চললে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না, সেক্ষেত্রে আবারো এই সুযোগ নষ্ট হতে পারে। তাই নিজেদের ও রাষ্ট্রের স্বার্থে আমাদের সরকারি নির্দেশনা মেনে জামাতে নামাজ আদায় করা উচিত।

মসজিদে নামাজ পড়তে মানতে হবে যেসব শর্ত-
১. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন।


২. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান-পানিসহ হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং আগত মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।

৩. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে সুন্নত নামাজ আদায় করে মসজিদে আসতে হবে। অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

৪. কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ তিন ফুট পরপর দাঁড়াতে হবে।

৫. এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে।

৬. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশ নিতে পারবেন না।

৭. সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদের অজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

৮. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

৯. মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না।

১০. উল্লিখিত শর্ত পালন সাপেক্ষে প্রত্যেক মসজিদে সর্বোচ্চ পাঁচজন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ইতেকাফের জন্য অবস্থান করতে পারবেন।

১১. করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করা যাচ্ছে।

১২. খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।

এসকে