• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৭:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৭:৩৬ পিএম

চন্দ্র বিজয়ের ৫০ বছর

চন্দ্র বিজয়ের ৫০ বছর


মানব সভ্যতার জন্য চাঁদে অভিযান ছিল উল্লেখযোগ্য এক পদক্ষেপ। সেই চন্দ্র অভিযান জয় করে তিন মহাকাশচারী বদলে দিয়েছিলেন মানব সভ্যতাকে। ১৯৬৯ সালে ১৬ জুলাই ‘স্যাটার্ন ৫’ রকেটে চেপে চাঁদে পাড়ি দিয়েছিল ‘অ্যাপোলো ১১’। চন্দ্র অভিযানে চাঁদের বুকে মানুষের পায়ের সেই স্পর্শ ৫০ বছর পূর্ণ হবে আগামিকাল শনিবার (২০ জুলাই)।

১৯৬৯ সালে ১৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে তিন জন নভোচারী তাদের নাস্তা সারেন। এরপর নভোচারীর পোশাক পরেন। পোশাক পরার একটু পরেই সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে বিদায় জানিয়ে ধীরে ধীরে রকেটের ভিতরে যান। সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে ৭৬ লাখ পাউন্ড জ্বালানি ভরা নাসার ‘স্যাটার্ন ৫’ রকেটের ইঞ্জিনের অংশ প্রজ্বলিত হয়। এরপর উড়াল দেয় চন্দ্র অভিযানের জন্য। চাঁদে পৌছাতে তাদের সময় লাগে ৪ দিন।

মহাকাশচারীরা প্রথমে চাঁদের চারপাশে একটি কক্ষপথ ধরে প্রদক্ষিণ করার পর ‘ঈগল’ নামক চন্দ্র মডিউলে করে ১৩-মিনিটের একটি সফরের পর চাঁদের বুকে পা রাখেন।

সর্বপ্রথম চাঁদের মাটিতে পা রাখেন নীল আর্মস্ট্রং। দ্বিতীয় পা রাখেন এডুইন অলড্রিন। তৃতীয় নভোচারি মাইকেল কলিন্স থেকে যান চন্দ্রাভিযানের কমান্ড মডিউলের পাইলট হিসেবে। চন্দ্র অভিযান শেষে ফেরার সময় একটি ব্যাগে করে নমুনা হিসাবে তারা সাড়ে ২১ কিলোগ্রাম চাঁদের মাটি এবং পাথর ভরে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে সময়ে তাদের নিজস্ব অনলাইন প্রতিবেদনে প্রকাশ করে সেই ব্যাগটি হারিয়ে ফেলে নাসার মহাকাশচারীরা। তবে ২০১৩ সালে সেটির খোঁজ মেলে।

যে রকেটে চেপে উড়েছিল অ্যাপলো ১১ তার উচ্চতা ছিল ৩৬৪ ফুট। এবং ওজন ছিল ২ লাখ ৩৯ হাজার ৭২৫ কিলোগ্রাম। আর অ্যাপলো ১১র ওজন ছিল ৪৫ হাজার ৭০২ কিলোগ্রাম। অ্যাপলো ১১ অভিযানে পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ এবং ফের পৃথিবীতে অবতরণ এই মিশন সম্পূর্ণ হতে মোট সময়  লেগেছিল ৮ দিন ৩ ঘন্টা ১৮ মিনিট।

তবে ‘অ্যাপলো ১১’ এই চন্দ্র অভিযান বিতর্কমুক্ত থাকেনি। অনেকেই চাঁদে পা রাখার বিষয়টাতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। অনেকে আবার বিশ্বাস করতে পারেননি চাঁদের মাটিতে পা রাখা। তবে ওই চন্দ্রাভিযানে নিয়ে যত বিতর্কই থাকুক না কেন, এ বছর সারা বিশ্বই সফল ওই অভিযানের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে।

‘চন্দ্র অভিযান একজন মানুষের কাছে একটি ছোট পদক্ষেপ, কিন্তু মানবতার জন্য এক বিশাল অগ্রযাত্রা’, চাঁদে অবতরণের পর এই বিখ্যাত উক্তির মাধ্যমে নিল আর্মস্ট্রং বোঝাতে চেয়েছিলেন, ৫০ বছর আগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কী অসামান্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছিল। ‘অ্যাপলো ১১’ কর্মসূচিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। কিন্তু সেই অর্থ কোনোভাবেই অপচয় হয়নি। কারণ প্রতিটি মানুষের জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে জানা অজানা সব তথ্য ও উপাত্ত এবং বিজ্ঞানের পথে নবযাত্রার শুরুটা কিন্তু এসেছিল ঐ দিনটি থেকে।

সূত্র : স্পেসডটকম, সিএনএসএ, নাসা।