• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০১৮, ১২:৫৯ এএম

পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে সব কিছু করা সম্ভব: সজীব ওয়াজেদ জয়

পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে সব কিছু করা সম্ভব: সজীব ওয়াজেদ জয়
সজীব ওয়াজেদ জয়; ফাইল ফটো

 

পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে সব কিছু করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। 

শুক্রবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, ‘অনেকে বলে যে এটা সম্ভব না, ওটা সম্ভব না। আমরা সেটা বিশ্বাস করি না। আমরা সব সময় বিশ্বাস করি হ্যাঁ, পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে সব কিছু করা সম্ভব।’ 

আওয়ামী লীগের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ও ‘ভিশন ২০২১’ প্রসঙ্গে জয় বলেন, ‘যখন আমরা ভিশন ২০২১ নিয়ে যাত্রা আরম্ভ করি। তখন সবাই বললো যে এটা সম্ভব না। দশ বছরে এটা কোনো মতেই সম্ভব না। যখন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা প্রকাশ করি তখন অনেকেই বলে এটা সম্ভব না।কিন্তু আমরা কিন্তু তা দেখিয়ে দিয়েছি।’

এ সময় পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে জয় বলেন, ‘এই যে দেখেন পদ্মা সেতু। সবাই বলেছিলো এটা সম্ভব না, বিশেষ করে যখন বিশ্বব্যাংক চলে গেল। তখন কিন্তু আমি এবং আমরা অনেকেই আমার মাকে পরামর্শ দিলাম। দেখো আমাদের অর্থনীতি কিন্তু এত নিম্ন না। আমরা কিন্তু গরীব না। আমাদের হাতে কিন্তু নিজেদের অর্থ আছে। বিশ্বব্যাংকের কোনো প্রয়োজনই অামাদের নেই। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম। নিজেদের টাকায় আমরা এটা করবো।

এ সময় পদ্মা নদীতে দ্বিতীয় একটি সেতু হবে বলেও জোর দিয়ে বলেন জয়। তিনি বলেন, বলেন, অবশ্যই হবে। কেন হবে না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে অবশ্যই দ্বিতীয় পদ্মাসেতু হবে।

এ সময় বাংলাদেশকে একটা উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় প্রকাশ করে জয় বলেন, ‘এটা আমাদের স্বপ্ন ছিলো। এটা আমার নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিলো। যে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা করা। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের কারণে তিনি সে স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করতে পারেন নি। সে কারণে আমার মার স্বপ্ন ছিলো, বাংলাদেশকে উঠিয়ে আনা, বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন করা। 

প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে তিনি এখনই আসতে ইচ্ছুক কি না উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, রাজনীতি একটা ২৪ ঘণ্টার সার্ভিস। তিনি এখনও পরিবারকে সময় দিচ্ছেন। পরিবারকে ছেড়ে এখনই তিনি রাজনীতি আসতে আগ্রহী নন।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। আমার মেয়ে ছোট, স্কুলে পড়ে। ওর সঙ্গে সময় কাটাতে, ওয়াইফের সঙ্গে সময় কাটাতে আমি ভালোবাসি। সেটা ছেড়ে এখন এখানে... রাজনীতি হচ্ছে একটা ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস। আমার পরিবারকে একদম ছেড়ে দিয়ে আমি রাজনীতিতে সরাসরি আসতে এখনো আমি রাজি না।’

এ সময় তার ছেলেবেলায় মায়ের রাজনৈতিক জীবনের সংগ্রামের স্মৃতিচারণ করে জয় বলেন, ‘যে কথা আমি আমার মাকে, আমার ক্রিস্টিনকে বলেছি... ছোট বেলায় আমরা মাকে পাইনি। মা তো ২৪ ঘণ্টা ব্যস্ত থাকতেন। তারপর তখন তো সামরিক আইন ছিল, মাঝে মধ্যে ওনাকে গ্রেফতার করা হতো। প্রথম প্রথম একেবারে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হতো, তারপর অ্যাটলিস্ট হাউজ অ্যারেস্ট থাকতেন। ‘আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমার মেয়ে যত দিন ছোট আছে, ওকে সে কষ্টটা আমি দেব না। আমি ওকে যত সময় পাই, দেব। ও যখন বড় হয়ে যাবে তখন দেখা যাবে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তী সময়ে নিজেদের দেশে থাকার সময়ের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘তখন খুব ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে আমাদের দিন গেছে। বঙ্গবন্ধুর নাম তো উচ্চারণ করাই যেত না, জয়বাংলা উচ্চারণ করা যেত না।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সন্তানদের হাতে বিদ্যালয়েও নির্যাতন ও ভয়ভীতির শিকার হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা স্মরণ করে জয় বলেন, ‘যখন আমরা স্কুলে পড়ি, তখন যুদ্ধাপরাধী এবং আমার পরিবারের যারা হত্যাকারী তাদের ছেলে-মেয়েরা তখন স্কুলে পড়ে। তাদের সঙ্গে তখন আমাদের ক্লাস করতে হয়। স্কলাসটিকা। কিছু কিছু টিচার ছিল যে, যতই ভালো পেপার, পরীক্ষা দিই মার্কস কেটে দিতো আমাদের। কিছু ছেলে-মেয়ে, এই যুদ্ধাপরাধীদের ছেলে-মেয়েরা, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীর ছেলে-মেয়েরা আমাদের ওপর নির্যাতন চালাতো। আমাকে পেটানোর চেষ্টা করতো। ক্লাসের বাইরে আমাকে দুই-তিনজন হামলা করতো। সে কারণেই আমার খালা সিদ্ধান্ত নিলেন আমাদের হোস্টেলে পাঠিয়ে দেয়া উচিত।’

আরআই