• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০১৯, ১২:৪৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৫, ২০১৯, ১২:৪৭ পিএম

জিম্বাবুয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, ক্রিকেটের জন্য সুখবর

জিম্বাবুয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, ক্রিকেটের জন্য সুখবর
জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট দলের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। ফটো: গেটি ইমেজ

গত ২২ জুন জিম্বাবুয়ে সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দুর্নীতির অভিযোগ এনে সেদেশের ক্রিকেট বোর্ডকে ভেঙে দিয়েছিল। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে বিশ্ব ক্রিকেট মানচিত্র থেকে জিম্বাবুয়ের হারিয়ে যাওয়া শুধুই সময়ের ব্যাপার হয়ে উঠেছিল। 

তবে গত ৯ আগস্ট জিম্বাবুয়ের প্রশাসনিক আদালত দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ক্রিকেট বোর্ড ভেঙ্গে দেয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী কমিটি ভেঙে দিয়ে বহিস্কারকৃত নির্বাচিত বোর্ড পরিচালকদের পুনর্বহাল করতে আদেশ দিয়েছে। আর তাতেই সংকট নিরসনের পথে এগিয়ে যেতে থাকে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট। 

শেষ পর্যন্ত দুবাইতে অনুষ্ঠিত আইসিসির বোর্ডসভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) আইসিসির চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর, প্রধান নির্বাহী মানু সাওয়াই, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান তাভেংওয়া মুকুহলানি, জিম্বাবুয়ের ক্রীড়ামন্ত্রী ক্রিস্ট্রি কভেন্ট্রি এবং স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন কমিশনের চেয়ারম্যান জেরালর্ড মোতসোয়ার মধ্যে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 

নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ এবং পরবর্তীতে আইসিসি সুপার লীগে অংশগ্রহণে জিম্বাবুয়ের আর কোনো বাধা নেই। একইসঙ্গে শর্তসাপেক্ষে নিজেদের সদস্যপদ ফিরে পেয়েছে নেপাল। বোর্ড পরিচালনায় সরকারের হস্তক্ষেপ না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে না পারায় ২০১৬ সালে তাদের বহিস্কার করেছিল আইসিসি। চলতি মাসের শুরুতে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ নেপালের নির্বাচনের পরই আইসিসি সদস্যপদ ফিরে পেল নেপাল। 

এক বিবৃতিতে শশাঙ্ক মনোহর বলেন, আমি জিম্বাবুয়ের ক্রীড়ামন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটিতে ক্রিকেটকে পূনরায় চালু করবেন এবং সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবেন। আইসিসি বোর্ড যে শর্তগুলো দিয়েছিল, তিনি সেগুলো শর্তহীনভাবে পূরণ করেছেন। 

তিনি জানান, জিম্বাবুয়ে এবং নেপাল ক্রিকেট বোর্ডকে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে আপাতত অনুদান দেয়া হবে। 

উল্লেখ্য, জিম্বাবুয়ে সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দুর্নীতির অভিযোগ এনে সেদেশের ক্রিকেট বোর্ডকে বহিষ্কার করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রিকেট বোর্ডের ওপর সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকায় গত ১৮ জুলাই ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির সদস্যপদ হারায় জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট।

পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, ইংল্যান্ডে টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলতে যেতে পারেনি আইসিসির গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট জিম্বাবুয়ের নারী ক্রিকেটাররা। এমনকি জিম্বাবুয়ে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য টি-২০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলার যোগ্যতা পর্যন্ত হারিয়ে বসে। 

সংকটময় অবস্থার কারণে বাধ্য হয়ে অবসর নিতে বাধ্য হন সিকান্দার রাজা এবং অলরাউন্ডার সলোমন মিরে। সম্প্রতি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি সিরিজের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দেন পালা বদলের সাক্ষী হ্যামিল্টন মাসাকাদজা।  

তবে দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী কির্স্টি কভেন্ট্রি আইসিসির আনা হস্তক্ষেপের কথা অস্বীকার করে টুইটারে লিখেছিলেন, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের ভালোর জন্যই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দলটি আরও ভালো করতে পারে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এসআরসি গঠন করে। তবে এসআরসি কখনোই সরকারের অংশ নয়।

ক্রিকেট কাঠামোকে ঢেলে সাজাতে জিম্বাবুয়েকে ৩ মাসের সময় দেয় আইসিসি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্রিকেট বোর্ড তা করতে পারায় আইসিসির সদস্যপদ ফিরে পেল জিম্বাবুয়ে। শুধুমাত্র আফ্রিকার এই দেশটির জন্যই নয়; ক্রিকেটের জন্যও নিঃসন্দেহে যা বড় একটি সুখবর।  

আরআইএস 

আরও পড়ুন