• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২২, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম

চা বিরতির আগে রোহিতের ক্যাচ ছাড়লেন আল আমিন

চা বিরতির আগে রোহিতের ক্যাচ ছাড়লেন আল আমিন
ব্যক্তিগত ১২ রানে জীবন পেয়েছেন রোহিত শর্মা। ফটো : টুইটার

ঐতিহাসিক ইডেন টেস্টের প্রথম দিনটি ব্যাট হাতে মোটেও স্মরণীয় করে রাখতে পারলো না বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে সন্ধ্যা নামার আগেই মাত্র ১০৬ রানে তারা অলআউট হয়েছে। জবাবে চা বিরতির আগ পর্যন্ত ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৫ রান।

আগের টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা ২৪৩ রানের ইনিংস খেলা মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে এবার দ্রুত ফেরাতে পেরেছে বাংলাদেশ। ৫ বছর পর টেস্টে ফেরা পেসার আল আমিন হোসেন বাংলাদেশকে এনে দেন প্রথম উইকেট। 

আল আমিনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্টিয়ার করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারির উপর দিয়ে পাঠাতে চেয়েছিলেন মায়াঙ্ক। কিন্তু টাইমিংয়ে একটু গড়বড় করে বসায় তার ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় গালিতে। দারুণ গতিতে ছুটে এসে ক্যাচ নেন লিটন দাসের ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ।

বল হাতে উইকেট পেলেও চা বিরতির আগে ব্যক্তিগত ১২ রানে থাকা রোহিত শর্মার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে টাইগার ভক্তদের মাঝে চরম আক্ষেপের জন্ম দিয়েছেন আল আমিন। আবু জায়েদ রাহীর শর্ট বল পুল করেছিলেন রোহিত। টাইমিং ঠিকমতো না হওয়ায় বল যায় ফাইন লেগে সোজা আল আমিনের কাছে। কিন্তু দুইবারের চেষ্টায়ও বল হাতে জমাতে পারেননি তিনি।

এর আগে ঐতিহাসিক ইডেন টেস্টের প্রথম দিনটি ব্যাট হাতে মোটেও স্মরণীয় করে রাখতে পারলো না বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে সন্ধ্যা নামার আগেই মাত্র ১০৬ রানে তারা অলআউট হয়েছে।

অলআউট হওয়ার আগে অবশ্য দিবারাত্রির টেস্টে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জার হাত থেকে বেঁচে গেছে টাইগাররা। ২০১৮ সালের ২২ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ইডেন পার্কে দিবারাত্রির টেস্টে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল ইংল্যান্ড। তাই রেকর্ডটা তাদের দখলেই থেকে যাচ্ছে।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় গোলাপি বলের ইডেন টেস্ট শুরু হয়। টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামা সফরকারীদের শুরুটা অবশ্য একেবারে খারাপ হয়নি। দুই চার হাঁকিয়ে তরুণ সাদমান ইসলাম অভয় দিয়েছিলেন যত গর্জে গোলাপি বল আসলে তত বর্ষে না। তবে খানিক বাদেই তা ভুল প্রমাণ করে ব্যাটসম্যানদের আউট হওয়ার মিছিলটা শুরু করেন ধারবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়া ইমরুল কায়েস। 

দলের সংগ্রহটা যখন ১৫ রান, তখন ইশান্ত শর্মার বল এসে লাগে ইমরুলের পায়ে। শুরুতে আঙ্গুল তোলেননি আম্পায়ার, তবে ভারত রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত বদলে আউট হন তিনি। এরপর উইকেটে এসেই যেন ফিরে যাওয়ার তাড়া পেয়ে বসে অধিনায়ক মুমিনুল হককে। উমেশ যাদবের বলে রোহিত শর্মার বলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর অধিনায়কের মতোই তিনিও ফেরেন কোনো রান না করে আউট হন মোহাম্মদ মিঠুন। ব্যাটসম্যানদের গোল্ডেন ডাকের হ্যাটট্রিক করে আউট হয়ে গেছেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। 

২৯ রানের ইনিংস খেলে একা যেই প্রতিরোধটা গড়ছিলেন সাদমান, তাও শেষ হয়েছে উমেশ যাদবের বলে ক্যাচ দিয়ে তার সাজঘরে ফেরায়। সাদমানের পর মাত্র ৬ রান করে ঋদ্ধিমান সাহার গ্লাভসে ধরা পড়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামির বাউন্সারে মাথায় আঘাত পাওয়ার পর ‘সাপার ব্রেক’ এর আগে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন ২৪ রান করা লিটন দাস। 

মাথায় আঘাতের পরে ব্যাটিং চালিয়ে গেলেও মাঝে একবার লিটনকে ফিজিও মাঠে এসে তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যান। তবে প্রথম সেশন শেষের আগ মুহূর্তে লিটন শারীরিকভাবে আবারো সমস্যা অনুভব করলে তিনি বিষয়টি আম্পায়ারকে অবহিত করেন। এরপর আবারো ফিজিও মাঠে নামার পর তাকে পর্যবেক্ষণ করেন। তবে এবার আর লিটন খেলা চালিয়ে যেতে নিজের অক্ষমতার কথা জানান। 

সাপার ব্রেকের পর তাই নাঈম হাসানের সঙ্গে ব্যাট করতে নামেন এবাদত হোসেন। তার আউটের পর সবাইকে অবাক করে দিয়ে ক্রিজে আসেন মিরাজ, যিনি আসলে কনকাশন সাব হিসেবে এই টেস্টে মাঠে নামলেন। যদিও তাতে খুব একটা কাজের কাজ হয়নি। কারণ মিরাজ মাত্র ৮ রান করে ইশান্ত শর্মার শিকারে পরিণত হন। 

এরপর বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় ব্যক্তিগত সর্বাধিক ১৯ রান করা নাঈম হাসান ও আবু জায়েদ রাহী দ্রুত আউট হলে মাত্র ১০৬ রানেই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়। 

ভারতের পক্ষে গোলাপি বলে বিধ্বংসী হয়ে ওঠা ইশান্ত শর্মা মাত্র ২২ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন। এছাড়া উমেশ যাদব ৩টি ও মোহাম্মদ শামি ২টি উইকেট লাভ করেন।  

আরআইএস