• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০১৮, ০১:০০ পিএম

ফিরে দেখা-২০১৮ 

দেশ সেরা ‘তারা ৫’  

দেশ সেরা ‘তারা ৫’   
ছবি: বাফুফে

 

দেশের ভেতর বা বাইরে, পারতপক্ষে ফুটবল অঙ্গনে ভালো একটি বছর কাটিয়েছে বাংলাদেশ। যদিও বেশিভাগ সাফল্যই উঠে এসেছে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলগুলোর হাত ধরে। ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ জয় কিংবা মেয়েদের এএফসির দ্বিতীয় পর্বে পা দেয়া সবই এসেছে খুদে ফুটবলারদের হাত ধরে। তাই বলে জাতীয় দলও বলার মতো তো যে কিছু করতে পারেনি তা নয়। জামাল ভূঁইয়ার গোলে ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজক কাতারকে হারানোর গৌরব অর্জন করার বছরও এটি। 

জাতীয় দল হোক বা বয়সভিত্তিক দল, সবখানেই দলের সাফল্যে আন্দোলিত হওয়ার পেছনে ছিল ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও। সাফ জেতানোয় গোলরক্ষক মেহেদী হাসান যেমন মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তেমনিভাবে জাতীয় দলের হয়ে জামাল ভূঁইয়া দেখিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দল এখন লড়াই করার মন-মানসিকতা অর্জন করেছে।  

ফিরে দেখা-২০১৮ এর আজকের পর্বে থাকছে দেশের ফুটবলের সেরা ৫ পুরুষ ফুটবলার, যাদের কল্যাণে দেশের নাম উজ্জ্বলিত হয়েছে বিদেশের মাটিতে।  

 

৫. জাফর ইকবাল: বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কৃতিত্ব দেখিয়ে জাতীয় পর্যায়ে উঠে আসাদের মধ্যে একজন হলেন বান্দরবানের জাফর ইকবাল। অবশ্য এর আগের বছরই শিরোনামে এসেছিলেন সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলে এক ম্যাচেই ৫ গোল করে। গত বছরের ফর্ম এ বছরও ধরে রেখেছেন তিনি। হতাশ করেননি তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের। ইতিমধ্যেই জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন তিনি। 

জাফর ইকবাল বর্তমানে এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ টুর্নামেন্টের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। বাহরাইনে আগামী বছরের মার্চ মাস থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এশিয়ান দলগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া এ আসর। চলতি বছর বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ আর সাফ সুজুকি কাপের তার পারফরম্যান্স ছিল আগুন ঝরানো। গতি আর নিজের ড্রিবলিং জাদু দিয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচক আর দেশের ফুটবল প্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফেলেছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর এই উইঙ্গার। 


৪. নিহাত জামান উচ্ছ্বাস: ২০১৮ সালে বাংলাদেশ যেসব তরুণ ফুটবলার আবিস্কার করেছে তন্মদ্ধ্যে নিহাত জামান উচ্ছ্বাস অন্যতম একজন। মাত্র ১৫ বছর বয়সী উচ্ছ্বাসের গতি আর গোল করার সক্ষমতা দেখে ইতিমধ্যেই দেশের ফুটবলে তার নাম উচ্চারিত হচ্ছে। সাফ ও ইউয়েফার যুব টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে নিজের সামর্থ্যর প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। 

নেপাল থেকে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ জয়ে তার অবদান ভোলার নয়। সাফে নিজের অভিষেক ম্যাচেই করেন চার চারটি গোল। খুব দ্রুতই যে স্থানীয় ফুটবলের বড় ক্লাবগুলোতে ডাক পেতে চলেছেন প্রতিভাবান এ কিশোর। 

 

৩. মাহবুবুর রহমান সুফি: সবে মাত্রই কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিলেন সুফি। তবে ফুটবল পাড়ায় ইতিমধ্যেই নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন এ ফরোয়ার্ড। ২০১৮ স্বাধীনতা কাপে তার নেতৃত্ব আর অনেকটা একক নৈপুণ্যে শিরোপা ঘরে তোলে আরামবাগ ক্রীড়া চক্র। আবাহনী লিমিটেড, সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব, চট্টগ্রাম আবাহনী বা শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব, প্রত্যেকটি ক্লাবের বিরুদ্ধেই গোল বা গোল করতে সহয়তা করতে দেখা গিয়েছে তাকে। 

জাতীয় দলের হয়েও আলো ছড়িয়েছেন এ ফুটবলার। এশিয়ান গেমসে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে গোল করে আন্তর্জাতিক ময়দানে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন সুফি। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে লাওসের বিপক্ষে আর সাফ সুজুকি কাপে ভুটানের বিরুদ্ধে গোল করে পরবর্তী প্রজন্মের অন্যতম সেরা হওয়ার জানানও ইতিমধ্যে দিয়ে রেখেছেন তিনি। 


২. জামাল ভূঁইয়া: লাল-সবুজের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে সুদূর ডেনমার্ক থেকে চলে এসেছিলেন ঠিক মতো বাংলা উচ্চারণ করতে না পারা জামাল ভূঁইয়া। দেশে ফিরে প্রথমে নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলতে সমস্যা হলেও, ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দলে। বর্তমানে দলের মাঝমাঠের প্রধান কাণ্ডারি হওয়ার সঙ্গে দলকে নেতৃত্ব দিতেও দেখা যায় দেশ সেরা এই ফুটবলারকে।

তার গোলেই এশিয়ান গেমসে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে ওঠার সফলতা অর্জন করে বাংলাদেশ। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ গোল শূন্য ড্র থাকায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। আর সেখানে ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার করা গোলেই ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ কাতারকে দীর্ঘ ৩৫ পর হারানোর কৃতিত্ব অর্জন করে জেমি ডে শিষ্যরা। ডেনমার্কে বেড়ে ওঠা জামাল বর্তমানে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন।  


১. মেহেদী হাসান: চলতি বছর বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গনে সবচেয়ে বড় সাফল্য আসে অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলারদের হাত ধরে। নেপালের মাটিতে ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে সাফ শিরোপা জয় করেই দেশে ফেরে আনোয়ার পারভেজের শিষ্যরা। তবে এ জয়ে দলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল যার- তিনি হলেন বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান। 

বদলি হিসেবে নেমে সেমিতে ভারতের বিপক্ষে পেনাল্টি শুটআউটে তার অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের পর ফাইনালেও পেনাল্টি শুটআউটে তার গড়া প্রাচীর ভাঙতে পারেনি পাক খুদে ফুটবলাররা। ফলাফল অনুরধ-১৫ সাফ শিরোপা এল বাংলার মাটিতে। 


এসএইচএস