• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২০, ১২:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৫, ২০২০, ১২:১০ পিএম

টোকিও অলিম্পিকের নতুন আতঙ্ক করোনা ভাইরাস

টোকিও অলিম্পিকের নতুন আতঙ্ক করোনা ভাইরাস

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। চীনে বর্তমানে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১২৮৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরে যাত্রীদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিশেষ করে চীন ফেরত যাত্রীদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। 

আগামী জুলাইতে জাপানের রাজধানী টোকিওতে অনুষ্ঠিত হবে অলিম্পিক গেমস। সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে প্রতি বছর প্রায় দেড় হাজারের মতো ভূমিকম্প আঘাত হানে। আগামী বছরের ২৪ জুলাই দেশটির রাজধানী টোকিওতে শুরু হতে যাওয়া অলিম্পিকের ৩২তম আসর চলাকালীন সময়ে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।

ভূমিকম্পের দুশ্চিন্তার ভেতর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে অলিম্পিক গেমসকে সামনে রেখে এখন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগ একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাপানের কর্মকর্তারা লোকজনকে মুখে মাস্ক পরতে, ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক নিতে এবং বারবার হাত ধুতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জাপান। গত বৃহস্পতিবার উহান থেকে দুটি বিমান এসে পৌঁছানোর পর চীন ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে দেশটি।
জাপানিজ রোগ সংক্রামক রোগ বিষয়ক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজুহিরো তাতেদা এক বিবৃতিতে বলেছেন, টোকিও অলিম্পিকে কী ধরণের সংক্রামক রোগ দেখা দেবে সে সম্পর্কে আমাদের খুব সতর্ক হতে হবে। এই ধরনের (অলিম্পিক গেমস) গণ জমায়েতে সংক্রামক রোগগুলোর ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। 

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বিতভাবে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কাজ করা হচ্ছে। তাদের ভাষ্য, সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা এবং নিরাপদভাবে গেমসের আয়োজন করা আমাদের পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেরিনোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল অলিম্পিক গেমস। জিকা ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে। পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তখন অলিম্পিক গেমস বাতিল অথবা পুনরায় সূচি নির্ধারণ করতে বলেছিল। যদিও ব্রাজিল ঠিকঠাক মতোই বিশ্ব ক্রীড়াযজ্ঞের এই মহা আয়োজন সম্পন্ন করতে পেরেছিল।    

উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণের এখানেই শেষ নয়। অলিম্পিকের সময় প্রবল দাবদাহ হবে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাষে জানানোর হয়েছে। দাবদাহ মোকাবেলার উপায় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতার স্থান অপেক্ষাকৃত শীতল আবহাওয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর হোক্কাইদোতে স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়ে অলিম্পিক ব্যবস্থাপকরা গত বছর সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। 

অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক চলাকালীন মারাত্মক গরম পড়বে, এমন ধারণা থেকে জাপানি ক্রীড়াবিদদের জন্য বিশেষ কায়দায় ইউনিফর্ম বা পোশাক বানানো হয়েছে। একটি নরম বুনটের বায়ুভেদী উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই পোশাক তৈরি করেছে জাপানের প্রধান বস্ত্র নির্মাতা আওকি। 

জাতীয় দলকে স্বাগত জানানোর অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিক আয়োজনে এই নীল-সাদা ইউনিফর্ম পরা হবে। অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিকে প্রতিযোগিতা করা ক্রীড়াবিদরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ তৈরির চিন্তাকে মাথায় রেখে একই ইউনিফর্ম পরিধান করবেন।

জাপানি ক্রীড়াবিদদের পরিধান করতে যাওয়া ইউনিফর্ম বা পোশাকগুলো গত বৃহস্পতিবার টোকিওতে একটি অনুষ্ঠানে উন্মোচন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরিধান করে ৬ জন ক্রীড়াবিদ সেখানে উপস্থিত হন। সাদা কোট এবং লাল প্যান্ট বা স্কার্টের সমন্বয়ে এই ইউনিফর্ম তৈরি করা হয়েছে। পোশাকের রঙগুলো জাপানের জাতীয় পতাকা থেকে নেয়া হয়েছে।

এদিকে, আগামী ২৪ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া টোকিও অলিম্পিকের প্রস্তুতিপর্ব বেশ জোরালোভাবে চলছে। টোকিও অ্যাকুয়াটিকস সেন্টার, যেখানে সাঁতার ও ডাইভিংয়ের প্রতিযোগিতাগুলো অনুষ্ঠিত হবে, সেই জায়গায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। টোকিও মহানগর কর্তৃপক্ষ এবং উদ্যোক্তারা প্রত্যাশিত প্রচুর সংখ্যক দর্শককে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন।

মূল ক্রীড়া ইভেন্টগুলো টোকিও এবং তার আশপাশে কেন্দ্রীভূত থাকলেও, জাপানের বাকি অংশেরও তার প্রভাব থাকবে। মাসখানেক পর ১০ হাজারের অধিক দৌড়বিদ অলিম্পিক মশাল নিয়ে জাপানের ৪৭টি জেলার প্রত্যেকটি অতিক্রম করবে।

সূত্র : এনএইচকে, রয়টার্স 

আরআইএস 

আরও পড়ুন