• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২০, ১০:১০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৯, ২০২০, ১০:১০ পিএম

বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবি

৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ অনেকে

৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ অনেকে
মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে ● সংগৃহীত

ঢাকার শ্যামবাজারের ফরাশগঞ্জ এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় সোমবার (২৯ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধার কাজে নিয়োজিতরা।

এখনও অনেকে নিখোঁজ থাকায় উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

সহযোগিতায় ছিল র‌্যাব ও বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার।

সোমবার (২৯ জুন) সকাল ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জ কাঠপট্টি থেকে প্রায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসছিল এমভি মর্নিংবার্ড নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ। অপরদিকে চাঁদপুর থেকে ঢাকায় আসছিল ময়ূরী-২ লঞ্চটি। হঠাৎই ময়ূরী-২ লঞ্চটি মর্নিংবার্ড লঞ্চটির ওপর উঠিয়ে দিলে দুমরেমুচড়ে পানির নিচে তলিয়ে যায় মর্নিংবার্ড লঞ্চটি। এ সময় অনেকেই সাঁতরে তীরে আসলেও অনেকেই ডুবন্ত লঞ্চের মধ্যে আটকা পড়েন।

উদ্ধার হওয়া ৩২ জনের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ৯ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন।

নিহতরা হলেন- সুমন তালুকদার (৩২), মনির হোসেন (৫০), বিউটি বেগম (৩৮), আবু তাহের (৫০), শাহাদাত (৩৫), ময়না (৩৮) ও তার ছেলে সাজিদ (১২) এবং মেয়ে মুক্তা (১৪), আবু সাঈদ (৪৫), মারুফা (২৫) ও তার শিশু পুত্র তাহা (২), সত্যরঞ্জন (৫৫), সিপন (২৫), গোলাম হোসেন ভূঁইয়া (৩৫), শিপলু (২২), সুমনা বেগম (৩৫), সুফিয়া বেগম (৬০), গোলাপ হোসেন (৫০), মনিরুজ্জামান (৪৫), আফজাল হোসেন (৪৪), আবু তাহের (৪৫), সুবর্না আক্তার (৩৫), শাহাদাত হোসেন (৪০), হাফেজা খাতুন (৩৮), শহিদুল (৩৪), আমির হোসেন (৫৫), মাহিম (১৭) এবং দিদার (৪৫)। অপর তিনজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

মজিবর সিকদার (৩৮) নামে বেঁচে যাওয়া এক লঞ্চযাত্রী জানান, লঞ্চের মধ্যে প্রায় ১৫০ জনের মতো লোক ছিল।

তিনি বলেন, ঘাটে আসার আগ মুহূর্তে ময়ুরী-২ ইচ্ছাকৃতভাবে মর্নিং বার্ড লঞ্চটির ওপর উঠিয়ে দেয়।

লঞ্চ দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে দেড় লাখ টাকা এবং মরদেহ দাফনে আরও ১০ টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, নিহত প্রতিটি পরিবারকে দেড় লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে এবং ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মরদেহ দাফনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, লঞ্চডুবির সিসিটিভির ফুটেজ দেখে মনে হচ্ছে এটি দুর্ঘটনা হতে পারেনা, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অপরদিকে, লঞ্চডুবির ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) রফিকুল ইসলাম খানকে আহ্বায়ক এবং বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) রফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।

কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়ে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- নৌপরিবহন অধিদপ্তরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন জসিম উদ্দিন সরকার, বিআইডব্লিউটিসি’র প্রধান প্রকৌশলী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, নৌ পুলিশের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি।

কমিটি দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন, দুর্ঘটনার জন্য দায়ি ব্যক্তি/সংস্থাকে শনাক্তকরণ এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রদান করবে। ইউএনবি।

এসএমএম

আরও পড়ুন