• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২০, ০৫:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৩, ২০২০, ০৫:৫৪ পিএম

যেসব তারকার ক্যারিয়ার শেষ

যেসব তারকার ক্যারিয়ার শেষ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, বন্ধ হয়ে গেলো অনেক ক্রিকেট কিংবদন্তীর মাঠে ফেরার শেষ সুযোগটাও। যে তালিকায় আছেন প্রতিবেশী ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। দুটি বিশ্বকাপ এবং একটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী এ অধিনায়কের ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেলো অনেকটাই। তিনি অবশ্য একা নন এ তালিকায়। তার সঙ্গে আছেন আরেক এশিয়ান লাসিথ মালিঙ্গা। এটাই হতে পারতো লঙ্কান তারকা পেসারের শেষ বিশ্বকাপ। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট দানব ক্রিস গেইল কিংবা পাকিস্তানের শোয়েব মালিকের জন্যও হতাশার হয়ে থাকলো বিশ্বকাপ স্থগিতের এ ঘোষণা।

করোনার থাবায় জর্জরিত ক্রিকেট বিশ্ব। একে একে বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, আইসিসির এফটিপি সব কিছুর অবস্থাই তথৈবচ। কবে, কোথায় কোন অবস্থায় আবারো সিরিজগুলো ফিরবে, কিংবা আদৌ ফিরবে কি না জানা নেই কারোই।

এই যখন চলছে অবস্থা, তখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত হয়ে যাওয়ার খবরটা আর আলাদা করে কোন আলোড়ন তুলতে পারেনি ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের মাঝে। বরং অনেকটাই অনুমেয় ছিলো বিষয়টা। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে না আসায়, এতোগুলো দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজন ছিলো একেবারেই অবাস্তব ধারণা। আপাতত স্থগিত হলেও, কাছাকাছি সময়ে আর আয়োজনের সম্ভাবনা নেই একেবারেই। আগামী বছরের অক্টোবরের আগে তাই নির্বাসনে আইসিসি আসর।

এ খবরটা অবশ্য বেশ নাড়িয়ে দিয়েছে ক্রিকেট দুনিয়াকে। কারণটা যতটা না বিশ্বকাপ, তার চেয়েও বেশি; কিছু কিংবদন্তীর ক্যারিয়ারে ইতি টানায়। এর মধ্যে আছেন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক থেকে শুরু করে সাধারণ সদস্যও। তবে, তারা সবাই ক্রিকেট দুনিয়া কাঁপানো মহাতারকা।

তালিকার প্রথম নামটি মহেন্দ সিং ধোনির। ভারতীয় এ সাবেক অধিনায়কের নামের পাশে কিংবদন্তী শব্দটাও ছোট হয়ে যায় মাঝে মাঝে। শুধু মাত্র কিছু পরিসংখ্যান দিয়ে কখনই মাপা যাবেনা এমএসডি'র ক্যারিয়ারকে। তার প্রভাব ভারতীয় আধুনিক ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর থেকেই মাঠের বাইরে এ উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান। আশা ছিলো আইপিএল দিয়ে আবারী নিজের জাত চেনাবেন তিনি। কিন্তু, করোনার কারণে শঙ্কায় পড়ে গেলো সে আশা। আসন্ন আইপিএলে মাঠ মাতালেও, এক বছর পর আরো একটা বিশ্বকাপের জন্য তিনি বিবেচিত হবেন কি না, তা এখন মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন।

দ্বিতীয় নামটিও একজন এশিয়ানের। দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার পেসার এবং বিশ্ব ক্রিকেটের একমাত্র ডাবল হ্যাটট্রিকের মালিক লাসিথ মালিঙ্গা। টি-টোয়েন্টিতে এখনো সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির খেতাবটা যার পায়ের তলায়। ৩৮ বছর ছুঁয়ে ফেললেও, এখনো মাঠে বেশ কার্যকর স্লিঙ্গার জনক। কিন্তু, গত বছর নিজেই ঘোষণা দিয়েছিলেন ২০২০ বিশ্বকাপ দিয়েই মাঠকে বিদায় বলবেন তিনি। তাই, বল এখন তার কোর্টে। যদি সিদ্ধান্ত বদলান, তাহলে হয়তো আবারো বাহারী চুলের মালিঙ্গাকে দেখা যাবে ২২ গজে। নয়তো এখানেই ইতি, লাসিথ মালিঙ্গা।

ক্রিকেটের পরিভাষায় তাকে কিংবদন্তী বলা যাবে কিনা, তা নিয়ে হয়তো তর্ক আছে। কিন্তু পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে তিনি একজন অবিশ্বাস্য পারফরমার। তাই তার বিদায়টাও একইভাবে কাঁদাবে ক্রিকেট সমর্থকদের। শোয়েব মালিক, সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক। ইচ্ছে ছিলো, অস্ট্রেলিয়া আসর দিয়েই বিদায় জানিয়ে দেবেন মাঠের খেলাকে। তবে, সূচি বদলালে কি হবে সেটা নিয়ে কোন মন্তব্য করেন নি তিনি। যদিও, ৩৯ বছরের একজন অলরাউন্ডারকে নিয়ে মিসবাহ-ইউনিসরা ভাববেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে বিস্তর। সংশয়ে তাই মালিকের ক্যারিয়ারও।

বিদায়টা অনেকটা অবধারিত আরেক ক্রিকেট গ্রেটের। ক্রিস্টোফার হেনরিক গেইল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পোস্টার বয় হলেও, ৪১ বছর বয়সী একজন বুড়োকে নিয়ে ২০২১ বিশ্বকাপের পরিকল্পনা করাটা যে বোকামি হবে তা হয়তো জানেন তিনি নিজেও। তাই এ বিশ্বকাপ দিয়েই ক্যারিয়ার শেষ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন গেইল। তবে, এখন স্থগিতাদেশ আশার পর নতুন করে কিছু বলেন নি তিনি। তবে, খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে দল কিংবা বোর্ডকে খুব একটা সমস্যায় ফেলবেন বলেও মনে হয়না।

তালিকার শেষ নামটা একটু অবাক করবে সবাইকে। আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি ভিলিয়ার্স। ইতোমধ্যে অবসর নিয়ে ফেলেছেন এ প্রোটিয়া। স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনায় থাকার কথা ছিলো না তার। কিন্তু, দক্ষিণ আফ্রিকানদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং কোচ বাউচারের চাহিদার কারণে, আবারো মাঠে ফেরার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো ভিলিয়ার্সের। কথা ছিলো, ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোতে ছন্দে থাকলে বিশ্বকাপে জায়গা হবে তার। সব আশা শেষ করে দিলো করোনা। এখন এক বছর পর প্রোটিয়াদের আবারো এবিডি'কে প্রয়োজন হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। 

আরও পড়ুন