• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২০, ১২:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৯, ২০২০, ১২:৪২ পিএম

বায়োপিকের বিরুদ্ধে আন্দোলন, নিন্দা জানালেন মুরালি

বায়োপিকের বিরুদ্ধে আন্দোলন, নিন্দা জানালেন মুরালি
শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরনের বায়োপিক ‘৮০০’-এর ফার্স্টলুক। ফটো: সংগৃহীত

ইতোমধ্যে অনেকেই জেনে গেছেন তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে (কলিউড) নির্মাণ হতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ক্রিকেটার মুত্তিয়া মুরালিধরনের বায়োপিক। সিনেমার নাম দেয়া হয়েছে ‘৮০০’। আর এই সিনেমায় প্রখ্যাত সেথুপাতিকে মুরালিধরনের চরিত্রে তামিল অভিনেতা বিজয় দেখা যাবে। অথচ লঙ্কান তারকার বায়োপিকের ফার্স্টলুক নিয়ে তামিল ইস্যুতে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

গত ১৩ অক্টোবর ইউটিউবে একটি মোশন পোস্টার প্রকাশের মাধ্যমে পর্দার মুত্তিয়া মুরালিধরন হিসেবে তামিল অভিনেতা বিজয় সেথুপাতিকে দেখা যায়। এরপরই শুরু হয় সমালোচনা। বিষয়টিকে এখন অনেকেই রাজনীতি ইস্যুতে নিয়ে গেছেন। তামিলনাড়ুতে মুরালিধরনকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ ঘোষণা দিয়ে তাকে নিয়ে নির্মিত ছবিতে সেথুপাতিকে অভিনয় না করার জন্য আহ্বান জানিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। মূলত এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত লঙ্কান তামিল টাইগারদের সঙ্গে সরকার বাহিনীর গৃহযুদ্ধ। একইসঙ্গে রাজনৈতিক, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ও ভক্ত- সবাই চাচ্ছেন সেথুপাতি যেন এ সিনেমায় অভিনয় না করেন।

সমালোচকেরা বলছেন, ওই সময়ে স্বজাতি তামিলদের পাশে না দাড়িয়ে সরকারের পক্ষে ছিলেন মুরালিধরন। যার জন্য সমর্থকরা চাইছেন, তামিল তারকা সেথুপাতি যেন ওই সিনেমায় অভিনয় না করেন। এই ছবিতে শ্রীলঙ্কার সংখ্যালঘু তামিলদের ওপর অত্যাচারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যার জন্য তারা সিনেমাটি বয়কটের দাবি তুলেছেন । 


এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে চলতি আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মুত্তিয়া মুরালিধরন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমি এক যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বড় হয়েছি। যুদ্ধের পরবর্তীকালে যে ভয়াবহতা ও বেদনা সৃষ্টি হয়েছিল সেটাই আমি সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। আমরা শ্রীলঙ্কায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে (গৃহ) যুদ্ধের মধ্যে থেকেছি। কীভাবে আমি ক্রিকেট দলে যোগ দিতে পেরেছি এবং ওই পরিস্থিতি থেকে নিজেরা কীভাবে সাফল্যের স্বাদ পেয়েছি, সেই গল্পই বলা হচ্ছে ‘৮০০’-তে। শ্রীলঙ্কায় জন্মেছি বলে কি আমি আমার জীবনের গল্প তুলে ধরতে পারবো না?’ 

সাবেক এই তারকা যে ঘটনা নিয়ে সমালোচনা চলছে তার ব্যাখ্যায় বলেন, ‘২০১৯ সালে আমি বলেছিলাম যে ২০০৯ সালটি আমার জীবনের সবচেয়ে সুখের বছর ছিল। কিন্তু লোকেরা মনে করেন ওই বছরটি আমাদের দেশে তামিলিয়ানদের হত্যা করা নিয়ে যে খবর ছড়িয়েছিল, সেই ঘটনার সমর্থনে আমি বছরটিকে সুখের বছর বলেছি। আমি শ্রীলঙ্কান দলের অংশ বলেই আমাকে নিয়ে এসব ভাবা হচ্ছে। ভারতের তামিলে জন্ম নিলে আমি ভারতের দলেই খেলার চেষ্টা করতাম। আমি কি শ্রীলঙ্কায় জন্ম নিয়ে ভুল করেছি?’ 

পুরো বিষয়টিকে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার আবেদন জানিয়ে তিনি আরও বলেন,  ‘এমনও হয়েছে স্কুলে গিয়ে আমি খোঁজ নিতাম, যারা আমার সঙ্গে গতকালও গল্প করেছিল, তারা আজ বেঁচে আছে কি না। এমন এক বিদ্বেষের বাতাবরণের মধ্যে বড় হয়েছি। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি সুরক্ষা সম্পর্কে ভেবেছিলাম। গত ১০ বছরে দুপক্ষের কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। আর এই কারণেই আমি বলেছিলাম যে, ২০০৯ সালটি আমার জীবনের সবচেয়ে সুখের বছর। আমি কখনই নিরীহ মানুষ হত্যার পক্ষে সমর্থন করিনি এবং ভবিষ্যতেও কখনো এই জাতীয় কাজ সমর্থন করবো না।’

এসইউ