• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২০, ০৪:৪৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ২৮, ২০২০, ০৪:৪৮ পিএম

ফিরে দেখা ২০২০

ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে বছরটি বাড়তি শোকের

ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে বছরটি বাড়তি শোকের

২০২০ সাল চলে গেছে। সঙ্গে নিয়ে গেছে ক্রীড়াঙ্গনের অনেককেই। করোনাভাইরাস মহামারির জন্য ২০২০ সাল ইতিহাসের পাতায় বিশেষ স্থান দখল করে থাকবে। ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে বছরটি বাড়তি শোকের। করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় একের পর এক বড় আসর। পাশাপাশি মারা গেছেন ম্যারাডোনাসহ অনেক কিংবদন্তি। 

শোকের এ বছরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুলে ধরা হলো সালতামামিতে। 

১। ডিয়েগো ম্যারাডোনা 

ক্রীড়াপ্রেমীদের প্রচণ্ড নাড়া দিয়েছে আর্জেন্টাইন মহাতারকা ম্যারাডোনার আকস্মিক মৃত্যু। গত ২৫ নভেম্বর ফুটবলের মহাতারকা ডিয়েগো ম্যারাডোনা নিজ বাসভবনে ৬০ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করা এই ফুটবলারের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জয়। অবশ্য সেই বিশ্বকাপে ‘হ্যান্ড অব গড’ নামে তার হাত দিয়ে করা গোল বিতর্কিত হয়। তবে তার অসাধারণ ফুটবল দিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে স্থায়ী জায়গা পেয়েছেন এই কিংবদন্তি। অনেকের কাছে তিনি ইতিহাসের সেরা ফুটবলার। ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন ম্যারাডোনা। 

২। আন্দ্রে সাবেলা

২০২০ সাল যেন আর্জেন্টিনার ভক্তদের জন্য একটু বেশিই শোকের। গত ৮ ডিসেম্বর আন্দ্রে সাবেলা প্রাণঘাতী ক্যানসার ও হৃদরোগের কাছে পরাজিত হন। ২০১৪ সালে তার অধীনেই বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলেছিল আর্জেন্টিনা। ২০১১ সালে জাতীয় দলের দায়িত্বে আসা সাবেক এই মিডফিল্ডারের বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। 

৩। পাওলো রসি

১৯৮২ সালের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল ও ইতালি। দ্বিতীয়ার্ধে একজন খেলোয়াড়ের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ফাইনালে ওঠে ইতালি। এই হ্যাটট্রিকের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন পাওলো রসি। এমনকি ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৩-১ গোল ব্যবধানে ইতালির শিরোপা ঘরে তোলার দিনেও রসির অবদান প্রথম গোলটি। ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বিশ্বকাপের পাশাপাশি দুটি সিরি আ এবং একটি করে ইউরোপিয়ান কাপ, কোপা ইতালিয়া ও উয়েফা সুপার কাপ জিতেছেন পাওলো রসি। শেষ জীবনে তিনি এআরআই স্পোর্টে ফুটবল বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করতেন। 

৪। কোব ব্রায়ান্ট


দুর্ঘটনায় মৃত্যু সব সময়ই দুঃসহ স্মৃতি রেখে যায়। বাস্কেটবলপ্রেমীদের জন্য কোব ব্রায়ানের মৃত্যু এমন একটি ঘটনা হয়েই থাকবে। লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্সের হয়ে ২০ বছরের ক্যারিয়ারে পাঁচবার চ্যাম্পিয়নের গৌরব অর্জনকারী এই খেলোয়াড় ২০১৬ সালে অবসরে যান। ২৬ জানুয়ারি হেলিকপ্টার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধ্বংস হলে আট সহযাত্রীর সঙ্গে এই কিংবদন্তি খেলোয়াড়ও মারা যান। ব্রায়ান্টের ১৩ বছর বয়সী কন্যা জিয়ান্না একই হেলিকপ্টারে থাকায় তাকেও বাঁচানো যায়নি। 

৫। এ কে এম নওশেরুজ্জামান


করোনাভাইরাস মহামারি কেড়ে নিয়েছে ক্রীড়াঙ্গনের অনেককেই। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু খেতাবপ্রাপ্ত জাতীয় দলের ফুটবলার এ কে এম নওশেরুজ্জামানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া এসেছে বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে। ১৯৬৭ সালে রেলওয়ে ক্লাব থেকে ক্যারিয়ার শুরু হলেও ১৯৭৫ থেকে খেলেছেন মোহামেডান ফুটবল ক্লাবের হয়ে। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ওয়ান্ডারার্সের হয়ে খেলা এই কিংবদন্তি ১৯৭৬ সালে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর ৭০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেটেও পদচারণ ছিল তার। 

৬। ডিন জোনস

করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে আরেক কিংবদন্তি খেলোয়াড়কে হারিয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। অ্যালান বোর্ডারের সাজানো দলের নির্ভরযোগ্য ওপেনার ডিন জোনস ২৪ সেপ্টেম্বর আইপিএলের ধারাভাষ্য চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আইপিএলের পাশাপাশি বিপিএলেও কাজ করেছিলেন এই সাবেক অজি ক্রিকেটার। ধারাভাষ্যের পাশাপাশি ২০১১-১২ মৌসুমে চিটাগং ভাইকিংসের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৯৮৪ সালে ওয়ানডে ও টেস্টে অভিষেক হওয়া এই খেলোয়াড় ব্যাট হাতে ছিলেন অনেক সফল। ৫২ টেস্টে ৩ হাজার ৬৫১ রান তার। পাশাপাশি ১৬৪ ওয়ানডেতে রান করেছেন ৬ হাজার ৬৮ রান। ১৯৯২ ও ১৯৯৪ সালে তিনি যথাক্রমে টেস্ট ও ওয়ানডে থেকে অবসরে যান। এরপর জনপ্রিয় চ্যানেল স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। 

৭। জন রেইড

নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের সাবেক অলরাউন্ডার জন রেইড ১৪ অক্টোবর ৯২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ৩৪ ম্যাচে কিউইদের নেতৃত্ব দেওয়া এই খেলোয়াড়ের টেস্টে রয়েছে ছয়টি শতক। ৩৩.২৮ গড়ে রান করেছেন ৩ হাজার ৪২৮। বল হাতে নিয়েছেন ৮৫ উইকেট। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৪৬ ম্যাচে ৪১.৩৫ গড়ে করেছেন ১৬ হাজার ১২৮ রান। ব্যাট হাতে ৩৯টি শতকের পাশাপাশি বল হাতে রয়েছে ৪৬৬টি উইকেট। ১৯৬৫ সালে অবসরে যাওয়ার পর জাতীয় দলের নির্বাচক, ম্যানেজার এবং আইসিসির ম্যাচ রেফারি হিসেবেও কাজ করেছেন।